অফিসে বেরোনোর সময় পাশের ফ্ল্যাটের সামনে জটলা চোখে পড়ল রায়হানের। কী হলো! ওপরতলার হাসিব সাহেবও আছেন। উনাকে প্রশ্ন করল,
– এত ভিড় কেন ভাই?
– কবির সাহেব মারা গেছেন আজ ভোরে।
রায়হানের একটু অপরাধবোধ হলো। ওরই তো সবার আগে জানা উচিত ছিল খবরটা নিকট প্রতিবেশী হিসেবে। ও প্রতিদিন সন্ধ্যায় একবার দেখা করে আসে বয়স্ক দম্পতির সাথে। কাল অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল ফিরতে। এজন্য আর বিরক্ত করেনি ওনাদের। সকালে উঠেও খেয়াল হয়নি অফিসে যাওয়ার চিন্তায়। আজকে ঘুম থেকে উঠতেও একটু দেরি হয়েছে ওর। এই পরিস্থিতিতে আর অফিসে যেতে মন চাইল না। ফোন করে জানিয়ে দিলো আজ যাবে না। তারপর কবির সাহেবের ফ্ল্যাটে ঢুকল। আত্মীয়স্বজন কেউ কেউ এসে পড়েছেন। মরদেহ বারডেমের মর্গে রাখা হবে। ছেলেমেয়েরা এলে তারপর দাফন করা হবে। তিন ছেলেমেয়ে ভদ্রলোকের। একজন ইংল্যান্ডে, একজন কানাডায়, আরেকজন আমেরিকায় থাকে। সবাইকে খবর দেওয়া হয়েছে। খালাম্মা মানে মিসেস কবির বসে আছেন স্তব্ধ হয়ে। নিজের মায়ের কথা মনে হলো রায়হানের। মা যখন মারা যান ও দেশের বাইরে ছিল। দেখতে পারেনি শেষবারের মতো। তিনদিনের মাথায় দেশে ফিরে শুধু মুখটা দেখতে পেয়েছিল। তার আগে অনেকবার ডেকেছিল ওকে কিছু বলবে বলে। কিন্তু অভিমানে ও মায়ের সেই আহ্বানে কোনো সাড়া দেয়নি। আবার মা যে এত তাড়াতাড়ি চলে যাবে – সেটাও ভাবেনি। খালাম্মার সামনে কিছুক্ষণ বসে থাকল। তারপর আবার নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকল। বিশাল এই ফ্ল্যাটটা কিনেছিল বিয়ের পরিকল্পনা করে। কিন্তু মায়ের আপত্তির মুখে বিয়েটা হয়নি। মাকে এই ফ্ল্যাটে রেখে নিজে চলে গিয়েছিল দেশের বাইরে। মায়ের সাথে অবশ্য ওর বিধবা বোনটা থাকত।
মা যে ঘরটায় থাকত সেই ঘরে গিয়ে ঢুকল রায়হান। দেয়ালে একটা বড় ছবি বাঁধাই করে টাঙিয়ে রাখা আছে। ছবিটার সামনে দাঁড়াল। মনে হলো মা যেন অনুযোগ করছে,
– এত ডাকলাম তোকে। তবু এলি না!
আসবে কি! ও তখন অভিমানে অন্ধ হয়ে ছিল। কতক্ষণ দাঁড়িয়েছিল ঠিক বলতে পারবে না। দরজায় শব্দ হতে সম্বিত ফিরল। ডাইনিং স্পেসে এসে দেখল রহিমা ঢুকছে। ওর কাছে একটা চাবি থাকে। রোজ এসময় এসে সারাদিন থাকে। সন্ধ্যার পর রুটি বানিয়ে হটপটে রেখে তারপর যায়। বাইশ বছর বয়স মেয়েটার। বিয়ে হয়েছে। একটা ছেলেও আছে চার বছর বয়সের। দুই বছর আগে স্বামী আবার একটা বিয়ে করলে নিজে আলাদা থাকতে শুরু করেছে। বস্তিতে একটা ঘর ভাড়া নিয়েছে। একজন মহিলার সাথে থাকে। দুজন মিলে ভাড়া দেয় ঘরের। ছেলেটাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিয়েছে। রায়হানকে এইসময় বাসায় দেখে অবাক হলো একটু।
– এসেছিস?
– জি চাচাজান। আপনি অফিসে যান নাই ক্যান?
– পাশের বাসার খালুজান মারা গেছেন আজ ভোরে।
– ও আল্লাহ্‌!
বলে ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়ল জোরে জোরে। রায়হানও মনে মনে পড়ে নিল। ঘটনার আকস্মিকতায় এতক্ষণ পড়তে ভুলে গিয়েছিল।
– তুই একটু দেখে আয় তো ওখানে কিছু লাগবে কিনা?
বেরিয়ে গিয়ে প্রায় পনেরো মিনিট পর ফিরল রহিমা।
– নানি তো কিছুই খায় নাই অহনতরি। আবার ওই বাসায় তো আইজকা চুলা জ্বালান যাইব না।
রায়হান খালাম্মা সম্বোধন করে বলে ও নানি বলে ডাকে।
– তুই কিছু নাস্তা বানাতে শুরু কর। আমি উনাকে নিয়ে আসছি।
বলে নিজের ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে পাশের ফ্ল্যাটে গেল রায়হান। মহিলার আত্মীয় এসেছে কয়েকজন। তাদের সহায়তায় নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে এলো। রহিমা মেয়েটা বেশ চটপটে। চিনি ছাড়া চা বানিয়ে ফেলেছে এক কাপ। দীর্ঘদিন ওর কাজ করায় খালাম্মার অনেক কিছুই জেনে গেছে মেয়েটা। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ করে নিয়ে এলো রহিমা খালাম্মাকে। তারপর দুটো নোনতা বিস্কিট আর এক গ্লাস পানি দিয়ে বলল,
– নানি খাইয়া লন।
সামনে দাঁড়িয়ে যত্ন করে খাওয়াল বিস্কিট দুটো । তারপর পানি খাইয়ে চায়ের কাপ নিয়ে এলো। সেটাও পুরো খাইয়ে আবার রান্নাঘরে চলে গেল। রায়হান গিয়ে উনাকে মায়ের ঘরে বসাল। রহিমা যখন উনাকে চা খাওয়াচ্ছিল তখন ও এসে মায়ের বিছানায় পরিষ্কার চাদর বিছিয়ে দিয়ে বালিশের কভার বদলে দিয়ে গেছে। একজন আত্মীয়া থেকে গিয়েছিল। সে শুইয়ে দিলো বিছানায়। উনার বিহ্বল ভাবটা এখনো কাটেনি। রায়হান বেরিয়ে এলো। রান্নাঘরে গিয়ে ওকে এক কাপ চা বানিয়ে দিতে বলল রহিমাকে।
বিকেল নাগাদ সব কাজ হয়ে গেল। গোসল করিয়ে খালুজানকে বারডেমের হিমঘরে রেখে আসা হলো। রায়হান গিয়েছিল সাথে। যাবার আগে খালাম্মাকে যত্ন করে খাইয়ে দিয়ে গেছে। সকালের নাস্তা রহিমা খাওয়াতে পারলেও দুপুরের খাবার কিছুতেই খাওয়াতে পারছিল না। তখন হয়তো উনি বুঝতে শুরু করেছিলেন কী হারিয়েছেন। রায়হান খাবারের থালা হাতে নিলে উনি বাধ্য মেয়ের মতো খেয়ে নিলেন। সকালের নাস্তা খাওয়ানোর আগে সেই আত্মীয় মহিলা ইনসুলিন পুশ করে দিয়েছিল। রাতেও ইনসুলিন নেন উনি। সেটা খেয়াল করে দিয়ে দিতে হবে। বাসায় ফিরে এলে খালাম্মা ওর হাত ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। রায়হান একটু স্বস্তি পেল। এই কান্নাটা দরকার ছিল। ও আর খালাম্মা বাসায় একা। একটু আগে রহিমাকে বস্তিতে পাঠিয়েছে ওর পোশাক নিয়ে আসতে আর বলে আসতে যে ক’দিন ও এখানে থাকবে। বারডেমে যাবার আগে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে ক’টা দিন ছেলেমেয়েরা এসে না পৌঁছায় সে-কটা দিন উনি রায়হানের বাসাতেই থাকবেন। সাথে রহিমা থাকবে। আর উনার একজন নিকট আত্মীয়া।

তিনদিন পর –
কবির সাহেবের তিন ছেলেমেয়ে আর রায়হান বসেছে ড্রয়িংরুমে। কবির সাহেবের ছোট ভাইও আছেন। গতকাল খালুজানকে চিরতরে শুইয়ে রেখে এসেছে ওরা আজিমপুরে। আজ কুলখানি হয়ে গেছে। আগামী পরশু তিনজনই ফিরে যাবে যে যার কাজের জায়গায়। খালাম্মা মানে উনাদের মা কীভাবে থাকবেন সেটা স্থির করার জন্য এই সভা। গতকাল একমাত্র ছেলে বলেছিলেন,
– আমি মাকে নিয়ে যাব।
– আমি বাবা দেশ ছেড়ে কোথাও যাব না।
খালাম্মা চটজলদি উত্তর দিয়েছিলেন। রাতে উনারা বসে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। সেটা কিভাবে কার্যকর করা যায় সেজন্যই একসাথে বসা।
– চাচা আমাদের ফ্ল্যাটে তো মাকে একা রাখা যাবে না।
তুহিন মানে কবির সাহেবের ছেলে বলল।
– না সেটা ঠিক হবে না।
– আমরা ঠিক করেছি মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে দিব।
রায়হান চমকে উঠল। ওর মায়েরও একই পরিণতি হতো যদি ওর বড় আপা বিধবা না হতো। মা মারা যাবার কিছুদিন পর উনিও মারা গেছেন। অবশ্য তখন উনি একমাত্র ছেলের কাছে থাকতেন।
ওরা কথা বলছেন আর রায়হানের মনে তোলপাড় চলছে। অনেকক্ষণ উসখুস করার পর রায়হান মুখ খুলল।

আরো একমাস পর —
রায়হান ফুরফুরে মেজাজে অফিস থেকে বেরিয়ে বাসার পথ ধরল। একমাস আগে কবির সাহেবের ছেলেমেয়েরা যে যার কর্মস্থলে ফিরে গেছে। সাথে নিয়ে গেছে চোখেমুখে স্বস্তি আর রায়হানের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ওর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ওরা খালাম্মাকে মানে ওদের মাকে রায়হানের বাসায় রাখতে সম্মত হয়েছে। রহিমাকে বস্তি থেকে আনিয়ে ওর ফ্ল্যাটে স্থায়ীভাবে রেখে দিয়েছে। সারাদিন রান্নাবান্না করে আর খালাম্মাকে সঙ্গ দেয়। ওর ছেলেকেও আনিয়ে নিয়েছে রায়হান। মাদ্রাসা থেকে ছাড়িয়ে এলাকার একটা সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছে। শুধু সমস্যা করতে চেয়েছিল বস্তির রহিমার ঘরের মহিলা। রায়হান বলে দিয়েছে যতদিন উনি নতুন ভাড়াটে না পান ততদিন রায়হানই রহিমার অংশের টাকাটা দিয়ে দিবে। এখন বাসায় ফিরে খালাম্মাকে ইনসুলিন দিয়ে দুজনে একসাথে খেতে বসে। আর তখন দুজনেই গল্পের ঝাঁপি খুলে মেলে দেয়। রহিমা মাঝে মাঝে বলে,
– এতদিনে বাড়িটারে বাড়ি বইলা মনে হয়।
– কেন এতদিন কি মনে হতো তোর?
খালাম্মা জানতে চান।
– এতদিন মনে হইত কোনো শ্মশানে আইছি কাম করতে।
– হুম বাবা! সবই তো হলো। এখন শুধু একটা বৌমা যদি পেতাম!
এই কথাটা শুনলেই রায়হানের মুখটা কালো হয়ে যায়। মিতুর মুখটা মনে পড়ে। কোথায় আছে ও? মিতুর কথা ভাবতে ভাবতে কখন বাসায় এসে গেছে বুঝতে পারেনি। ড্রাইভারের কথায় খেয়াল হলো,
– স্যার এসে গেছি।
অপ্রস্তুত মুখে গাড়ি থেকে নামল রায়হান। লিফটে ওঠার আগে একটা খালি পার্কিংয়ে নতুন গাড়ি দেখতে পেল। আগে কখনো দেখেনি গাড়িটা। বাসার কলবেলটা বাজাতে রহিমা এসে দরজা খুলল।
– চাচা একজন মেহমান আইছে। নানির কে জানি লাগে।
ভেতরে ঢুকে অবাক রায়হান! সারা রাস্তা যার কথা ভাবতে ভাবতে এসেছে সেই মিতু বসে আছে ওর ড্রয়িংরুমে।
– এসো বাবা। আমার বৌমার দূরসম্পর্কের বোন এ।
– ভালো আছো?
সরাসরি মিতুকে প্রশ্ন করল ও। মিতুও অবাক! স্বর ফুটল না গলায় কিছুক্ষণ। তারপর মাথা নেড়ে বলল,
– ভালো আছি। তুমি দেশে এসেছ কবে?
– তোমরা পরিচিত?
– জি খালাম্মা।
রায়হান উত্তর দিলো। ভদ্রমহিলা কোনো প্রশ্ন করলেন না আর। মিতু এসেছে খালাম্মার কিছু জিনিস নিয়ে। ছেলে পাঠিয়েছে। মিতুর এক ভাই নাকি ইংল্যান্ডে থাকে।
– আমি এখন যাব। অনেকক্ষণ হলো এসেছি।
– চা খেয়েছ?
– হুম। শুধু চা-ই নয়। সাথে টা-ও খাইয়েছেন খালাম্মা।
মিতু উত্তর দিলো।
– তোমার কন্ট্যাক্ট নম্বরটা দেবে?
ব্যাগ থেকে একটা কার্ড বের করে ওর দিকে বাড়িয়ে দিলো মিতু। তারপর বিদায় নিয়ে চলে গেল। চলে যেতে মনে হলো মিতুর মেয়েটার কথা জানতে চাইল না তো! কোথায় আছে, কী পড়ছে কিছুই জানা হলো না। হাতে মিতুর দেওয়া কার্ডটা নিয়ে কিছুক্ষণ বিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
– কিভাবে পরিচয় তোমাদের?
সামনে কেউ বসে আছে এতক্ষণ মাথায় ঢুকল ওর।
– আরেকদিন বলব আপনাকে।
বলে নিজের ঘরে চলে গেল রায়হান।
রাত দশটা বাজে। কার্ডটা নিয়ে মিতুর নম্বরে ফোন করল রায়হান। খালাম্মাকে ইনসুলিন দিয়ে একসাথে ডিনার সেরে নিজের ঘরে এসেছে। খেতে পারেনি। শুধু খাবার নাড়াচাড়া করেছে। কিছুক্ষণ ইতস্তত করে ফোনটা করল। ওপারে রিং হচ্ছে।
– আসসালামু আলাইকুম। কে বলছেন?
এতদিন পরেও কণ্ঠ চিনতে অসুবিধা হলো না। মৌলী ফোন রিসিভ করেছে।
– ওহ! কাকু তুমি!
পরিচয় দিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে গেল।
– তুমি হোল্ড করো একটু। আমি আম্মুকে ডেকে আনছি।
– কে ফোন করেছে?
মিতুর গলা শুনতে পেল।
– হ্যালো। কে বলছেন?
বুঝতে পারল মৌলী ওর পরিচয় না দিয়েই পালিয়েছে।
– আমি।
মুহূর্ত কয়েক নিশ্বাস নিতে ভুলে গেল মিতু।
কিছুক্ষণ কথা বলার পর রায়হান প্রশ্ন করল মিতুকে,
– আমরা কি এবার বিয়েটা করতে পারি না?
– তোমার মা বেঁচে থাকতে যে বিয়েটা মেনে নেননি উনি মারা যাবার পর সেই বিয়ে করা মানে উনাকে অপমান করা, এটা আশা করি বোঝার বয়স তোমার হয়েছে।
– আমরা কি কাল একবার দেখা করতে পারি?
– হ্যালো কে বলছেন?
এতক্ষণে ফোনের রিং বন্ধ হয়ে কেউ কথা বলল ওপারে। অবাক ব্যাপার! এতক্ষণ ও তাহলে কল্পনা করছিল। মৌলী ফোন ধরেনি – এতক্ষণ পর মিতুই ধরেছে ফোনটা। তারপরেও কল্পনায় করা দ্বিতীয় অনুরোধটা বাস্তবে করল।
ওপাশ থেকে কোন উত্তর এলো না।
– মিতু আমি তোমার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছি।

পরদিন –
আড়ং-এর চারতলায় কফি হাতে মুখোমুখি দুজন বসে আছে। গতকালের কল্পনায় করা অনুরোধটা আবার করল রায়হান। মিতু কী বলবে? আজ থেকে দশ বছর পেছনে ফিরে গেল ও। ভয়াবহ দুঃসংবাদ নিয়ে রায়হান এসেছিল। ওর মা ওদের দুজনের বিয়েতে রাজি হননি। মিতু সেটা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিল। আর এরকম কিছু যে ঘটতে পারে সেটাও আগে আঁচ করেছিল। শুধু কষ্ট হয়েছিল এটা ভেবে যে, ছেলে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে বলে ভদ্রমহিলা এত উৎফুল্ল হয়েছিলেন কিন্তু যেই শুনেছেন যে ও ডিভোর্সি তখনই বেঁকে বসেছিলেন। আচ্ছা বিপরীত চিত্র যদি হতো। মিতু হতো প্রেম ভেঙে যাওয়া হতাশ এক তরুণী আর রায়হান হতো ডিভোর্সি – তাহলে কী হতো?
– দ্যাখ আমি এতদিন স্রোতের বিপরীতে হেঁটেছি। আর সেটায় আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কিন্তু এতদিন পর স্রোতের দিকে হেঁটে যাওয়াটা হয়তো কঠিন হবে আমার জন্য।
নাহ! দশ বছর আগে করতে চাওয়া প্রশ্নটার মতো এই বাক্যটাও মিতু উচ্চারণ করতে পারল না। আর রায়হান ওর উত্তরের অপেক্ষায় ওর দিকে তাকিয়ে থাকল।