কবিতায় সমাজবোধ

বাংলাদেশ চল্লিশের দশক থেকে ধারাবাহিকভাবে নানা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে অর্থনৈতিক সংকট, সামাজিক মূল্যবোধের টানাপড়েন ইত্যাদি উপমহাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বাংলাদেশকে তথা পূর্বাঞ্চলকে গভীরভাবে ক্ষত-বিক্ষত করেছিল। ১৯৪৬ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, কলকাতাকেন্দ্রিক অবর্ণনীয় গণহত্যা, ১৯৪৭ সালের দেশভাগ এবং পূর্ব পাকিস্তানে ও পশ্চিম বাংলায় লাখ লাখ শরণার্থীর পুনর্বাসনের মর্মজ্বালা। এই রাজনৈতিক দোলাচলের পীড়নে বাংলার মানুষের আর্থিক আকাশ ঝঞ্ঝাগ্রস্ত হয়ে উঠেছিল, যার বিনাশী হওয়ায় পরবর্তীকালে গভীর ক্ষত তৈরি হয়। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগকে অনেক কবি-সাহিত্যিক আন্তরিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সুধীন্দ্রনাথ দত্তের যন্ত্রণাদগ্ধ উচ্চারণ – ‘দেশভাগ বাংলার বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে কবরস্থ করেছে’।

সুদিন ফিরিয়ে আনতে এ-উপমহাদেশে মার্কসীয় মতবাদপুষ্ট চরমপন্থা অবলম্বনকারীদের আন্দোলন ভারতবর্ষকে যারপরনাই প্রকম্পিত করেছিল। সে-ঝঞ্ঝায় পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঞ্চলেরও দশা ছিল বিপর্যস্ত। পরবর্তীকালে নকশাল আন্দোলন, মাওপন্থীদের ক্রমবিস্তার শিল্প-সাহিত্যের ভূমিতেও কিছু অশৈল্পিক অমা ছড়িয়েছিল। কিন্তু কয়েকজন শক্তিমান কবি – কাজী নজরুল ইসলাম, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, সুকান্ত ভট্টাচার্য, দীনেশ দাশ, বিষ্ণু দে, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের কাব্যপ্রয়াস বাংলাকাব্যে গণমুখী ধারাকে ঋদ্ধ করেছিল। ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলন পূর্ব বাংলার কবিতাকে পূর্বোক্ত ধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার ফলে ওজস্বী হয়ে ওঠে। মানুষের জন্য শিল্প – এ-বিশ্বাসে চালিত ছিল প্রায় সব কবির কাব্যচিন্তন। আহসান হাবীব, সৈয়দ আলী আহসান, পরবর্তী সময়ে হাসান হাফিজুর রহমান, সিকান্দার আবু জাফর, শামসুর রাহমান, আলাউদ্দিন আল আজাদ, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী, রফিক আজাদ, নির্মলেন্দু গুণ প্রত্যেকের কবিতায় দেশপ্রেম, মাতৃভাষার প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশ পেয়েছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পরও গণচিন্তার ধারা প্রবহমান ছিল। সত্তরের দশকের কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, মোহন রায়হান, কামাল চৌধুরী প্রমুখ কবির কাব্যবোধে দ্রোহীভাব ও গণসম্পৃক্ততা সপ্রকাশিত। এ-কথা অনস্বীকার্য, সমাজতন্ত্রের যে-সংকীর্ণ ব্যাখ্যা পশ্চিম বাংলা এবং বাংলাদেশের কবিতাকে ধারাবাহিকভাবে রঞ্জিত করে রেখেছে – প্রকৃত শিল্পসম্মত নান্দনিক গণমানুষের কাব্যশক্তি তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। একজন কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন আশির দশকে আবির্ভূত হয়ে এই নান্দনিক কাব্যশক্তিকে ভিন্নমাত্রায় অভিষিক্ত করেছেন। আশির দশকে আরো যেসব কবির মধ্যে শব্দস্বরে লোক সম্পৃক্ততা দেখা যায়, তাঁরা হলেন খোন্দকার আশরাফ হোসেন, ফরিদ কবির, মোহাম্মদ সাদিক, সরকার মাহমুদ ও মাসুদ খান। সম্প্রতি রেজাউদ্দিন স্টালিনের শ্রেষ্ঠ কবিতা প্রকাশ পেয়েছে। গ্রন্থটি নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। আশির দশকে অন্য সকলের কাব্যশৈলী বিবেচনায় রেজাউদ্দিন স্টালিন শিল্পকৌশলে অনেক বেশি দক্ষ ও মর্মভেদী। মৃদু উচ্চনাদে বিদ্রোহাত্মক বৈশিষ্ট্য তৈরি করার দুর্দান্ত ক্ষমতা আছে তাঁর হাতে। আশি-উত্তরকালীন কাব্যচর্চায় রেজাউদ্দিন স্টালিন লোক-অভিজ্ঞতার মর্মস্থলে সঞ্চরণশীল। সেখানে মানব প্রকৃতি ও সমাজ-সংসারের সূক্ষ্মতম অনুভবের জায়গাগুলোতেও সচল তিনি। রেজাউদ্দিন স্টালিনের কাব্যচিন্তার বিতর্কিত নির্যাসটুকু বাদ দেওয়ার পরও যা অবশিষ্ট থাকে, আমার ধারণা তা তাঁকে একজন শক্তিমান কবি হিসেবে গণ্য করার পক্ষে যথেষ্ট। রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতা পাঠ করে আমার এ-উপলব্ধি। তাঁর কবিতার অব্যক্ত ব্যঞ্জনা সুগভীর। তাঁর শব্দানুষঙ্গ অপরিচিত কিংবা বাক্যের গঠন অস্বচ্ছ নয়; কিন্তু অনুমিত হয় যে, কবির বাকপ্রতিমা ও চিত্রকল্প দুই-ই স্বতন্ত্র পৃথিবীর সম্পর্কসূত্রে আবদ্ধ। একদিকে ঐতিহ্য ও প্রথাবদ্ধ সর্বজনীন, অন্যদিকে আত্মজৈবনিক সাংকেতিক এবং রহস্যময়। কবি হিসেবে আন্তর্জাতিক বিশ্বের অনেকের সঙ্গে কাব্যধারা তাঁর চিন্তনপ্রক্রিয়ায় উঁকি দেয় – উইলিয়াম বেস্নক, জা আর্তুর র‌্যাবো, শার্ল বোদলেয়ার, অন্যপথে পাবলো নেরুদা, চেশোয়াভ মিউশ কিংবা ভাসকো পোপা, নিকোরার পাররা। এই দুই ভিন্ন স্রোতধারায় সম্মেলন সঙ্গমস্থল রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতা। তাঁর একটি চমৎকার কবিতা :

 

সূচনাপর্ব

 

আমার সময় গো-ক্ষুরের মতো বিভাজিত

মুহূর্তগুলো কালো কৃষকের পায়ের মতো ফাটা

আমার জন্ম কোনো সময়কে ইঙ্গিত করে না

এমনকি ঘটনাগুলো মুহূর্তের শৃঙ্খল মুক্ত

 

এই ইতিহাস ও সময় চেতনা একজন পাঠকের কাছে দ্ব্যর্থবোধক অভিব্যক্তি তৈরি করে যা কোলরিজের বিখ্যাত নিরীক্ষাধর্মিতাকে সমর্থন করে। রেজাউদ্দিন স্টালিন কখনো কখনো যন্ত্রণামুখর ও সুতীব্র – পুনরাবৃত্ত আত্মবিনষ্টির চাপে নিঃসঙ্গ। এটা কখনো কখনো অন্ধকার জগৎ অস্তিত্বের সৃজনধর্মিতাকে বাঁকিয়ে দেয়। একাকিত্ব সুনিশ্চিতভাবে আধুনিক কবির জন্মদাগ। ১৯২১ সাল ডবিস্নউ বি ইয়েটসদের রোমান্টিকতা থেকে মুক্তির ঘোষণা। কিন্তু ব্যক্তির বিবেক ও কল্পনায় যে সাম্যচিন্তার পুনর্জন্ম তাকে খাটো করে দেখা চলে না। মধ্যবিত্তের দোদুল্যমানতা সমাজতন্ত্রী কবিদের সন্দিগ্ধ করেছে প্রায়শ। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক আবহ প্রখর অনুভূতিসম্পন্ন মানবিক মূল্যবোধে জারিত কবিদের রাজনৈতিক করে তুলেছে বারবার। শহরবাসী শিক্ষিত  কবি-গোষ্ঠীদের একাংশ উত্তরাধুনিকতার নামে লোকজীবনকে উপজীব্য করার যে প্রচেষ্টা নববইয়ের দশক থেকে দ্বিতীয় দশক পর্যন্তত্ম জারি রেখেছে সেখানেও অস্পৃষ্টতা এবং ক্লান্তিকর অনুবর্তনের ছোঁয়া। রেজাউদ্দিন স্টালিন এই ক্লান্তিকর অবয়ববাদীদের বাইরে দাঁড়িয়ে নিজের জগৎ গড়তে তৎপর। তাঁর পুরাণচিন্তা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ আমাদের কাব্যভূমিকে উর্বরতা দিয়েছে। ‘তিথোনাসের কান্না’ কবিতাটি তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ফিরিনি অবাধ্য আমির অন্তর্ভুক্ত। কয়েকটি চরণ উলেস্নখ করছি –

ক্ষুধার্ত বুড়িমা গভীর রাত অব্দি

কাঁদেন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে

তার কান্নার শব্দে কখনো আমার ঘুম

ভেঙ্গে গেলে

আমিও কাঁদতে থাকি ভেতরে ভেতরে

তিথোনাস

বুড়িমার কান্না জানি বাড়ির সবাই

শুনেছে

প্রতিবেশীদের কেউ কেউ

কিন্তু আমার কান্না আজ অব্দি কেউ

শুনতে পায়নি

এমনকি আমিও না

এই মিথ্যাশ্রয়ী মর্মোপলব্ধি আমাদের অন্তরে যে গভীর শস্নাঘা তৈরি করে তা অস্তিত্বের সঙ্গে যেমন, তেমনি বেঁচে থাকার নতুন ব্যাখ্যায় গভীরতাগামী।

রেজাউদ্দিন স্টালিন আশির দশক থেকেই কবিতায় নানাভাবে সরব। আমার সম্পাদিত লোকায়ত পত্রিকাতেও তাঁর কবিতা ছেপেছি। এই কবির মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ সমাজচেতনা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার অনুসন্ধান দুরূহ নয়, বরং অন্যান্য কবির মতো রেজাউদ্দিন স্টালিন সংগঠন-সমিতির বাহুল্য প্রচারে যুক্ত না থেকে নিমগ্ন কাব্যকর্মে ব্যাপৃত, এটি একজন সৃজনধর্মী কবির প্রকৃত নিষ্ঠার স্বাক্ষর বলে মনে করি। তবে রেজাউদ্দিন স্টালিন বর্তমান দুনিয়ায় যা ঘটেছে – যেমন মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির যে-তা-ব – তা যদি তুলে ধরেন তবে কবিতায় যে আন্তর্জাতিক ভাষা আছে সেটা প্রতিভাত হবে। ইরাকে, সিরিয়ায়, লিবিয়ায়, তুরস্কে, আফগানিস্তানে তেলক্ষেত্র দখলের নামে যে অমানবিক যুদ্ধ, তা কোনো বিবেকবান মানুষ মেনে নিতে পারে না – এসব ঘটনাকে উপজীব্য করে যদি কবিরা সত্যোচ্চারণ না করেন তবে কবিতার বাঁকবদল ঘটবে না। বাংলা কবিতায় শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, রফিক আজাদ এমনকি নির্মলেন্দু গুণের মধ্যে সমাজ-সংলগ্ন হওয়ার যে-আকাঙক্ষা ছিল, অধুনা তা বিরল। কিন্তু অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে, কবিদেরই উচিত তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো। একটা অগণতান্ত্রিক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে আমরা বসবাস করছি।  আমরা প্রকৃত যে-সত্য তা দেখছি না। এই সত্যের মুখোমুখি আমাদের দাঁড় করাবেন কবিরা। সম্প্রতি রেজাউদ্দিন স্টালিনের ‘তদন্ত রিপোর্ট’ নামের যে-কবিতাটি সাড়া তুলেছে, সে-কবিতার মধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক সত্য আছে, কবিতার শেষ লাইনে কবি বলেছেন –

এবার তদন্তকর্তা তার রিপোর্টে

লিখলেন –

যুবকের লাশটি বেওয়ারিশ নয়

ওর নাম – মোহাম্মদ ডেভিড কৃষ্ণ

বড়ুয়া।

এই লাশটি যে মানুষ; কোনো ধর্ম বর্ণ গোত্রের নয়; তার বড় পরিচয় মানুষ – এই কথাটিই কবিতাটিতে মুখ্য হয়ে উঠেছে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যেমন শ্রীকান্ত উপন্যাসে বলেছিলেন – ‘মড়ার আবার জাত কী?’ এই মানবিকতা যদি আমরা সাহিত্যে প্রকাশ না করি, তবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম প্রকৃত মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে না। শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে নৈতিকতা উঠে গেছে। এনজিওনির্ভর, ইংরেজি মিডিয়ানির্ভর, কোচিং সেন্টারনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের জ্ঞান অর্জনের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে সর্বাগ্রে কবি-সাহিত্যিকদের লেখনীতে স্বাধীনচিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হবে। বিশ্বচিন্তার মধ্যে যুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম এমনকি ওই সময়ের অনেক তরুণ কবির মধ্যে সমাজ-সচেতন উচ্চারণ দেখি। আজকাল কবিদের দলবাজি বেশি। কবি কোনো দলের নয়, সে স্বতন্ত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে সত্য উদ্ঘাটন করবে। তবে তা হতে হবে অবশ্যই শিল্পিত ও নান্দনিক। রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতা পাঠ করে আমার উপলব্ধি হলো, রাজনৈতিক দলবৃত্তি, রাজশক্তির পক্ষাবলম্বন তাঁর কাজ নয়, বরং সময়ের যে সমস্ত ক্ষত ও সংকট, সামাজিক অনাচার ও বৈষম্য তা তিনি তুলে ধরেছেন। বিশেষ কোনো কবি গোষ্ঠী বা পত্রিকাগোষ্ঠীর সঙ্গে সংযুক্ত না থেকে একান্ত অন্তরালে বসেই রেজাউদ্দিন স্টালিন কবিতাচর্চা করেন বলে জানি। সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে তিরিশ, চলিস্নশ ও পঞ্চাশের উত্তরাধিকারকে স্বীকার করেই আশির কবিরা নতুন কাব্যপথ নির্মাণের চেষ্টা করেছেন। আধুনিক বাংলা কবিতার ইতিহাসে পঞ্চাশের দশক নানা কারণে আলোচিত। বিশেষ করে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ। ঠিক একইভাবে আশির দশকেও নানা অভিঘাত আছে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, গণতন্ত্রের নতুন যাত্রা, পাশাপাশি বিশ্বব্যবস্থার পরিবর্তন, রাশিয়ায় সমাজতন্ত্রের বিপর্যয়, চীনের ধনবাদী অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রত্যাবর্তন এবং সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ার নতুন মেরুকরণ। এসব বিষয় বিশদভাবে যদি আশির কবিতায় প্রস্ফুটিত না হয় তবে এই দশকের কবিদের  স্বীকৃতি মেলা ভার হবে। আমি সাহিত্যের একজন পাঠক হিসেবে মনে করি রেজাউদ্দিন স্টালিনের মধ্যে সেই সামর্থ্য আছে; তাঁকে আরো অনুশীলন ও সমাজবীক্ষার মধ্য দিয়ে পথ হাঁটতে হবে। অবশেষে বলতে চাই, কবিদের বিচার হয় তাঁর সমকালীন সমাজবাস্তবতার পরিপ্রেক্ষেতে শিল্পোত্তীর্ণ রচনার নিরিখে – এ-কথা নিশ্চয় রেজাউদ্দিন স্টালিন স্মরণ রাখবেন। r