আহমেদ মুনির
কত দূরে ওই
স্মৃতির নোতরদাম
তবু তার ঘণ্টাধ্বনি শুনে
এসমেরালদা
তোমাকেই মনে পড়ে।
জলা আর জঙ্গলের
এই প্রাগৈতিহাসিক দেশে
তোমাকে ভিখুর মতো
কাঁধে নিয়ে হাঁটি।
না, তোমাকে নয়
সে এক অনড় মাংসপি-
জন্মকুঁজ
দেহের ভেতরে
তবু দেহের অধিক।
কবরেও যেন যাবে একসঙ্গে
যেন মালিকের
সঙ্গপ্রিয় পোষা পাখি।
নাকি এই কুঁজ
বিস্মৃতির ধুলো থেকে
জন্ম নেওয়া এক কবুতর
মাংসের পায়রা।
অথচ সমস্ত কবুতর
কবে রোস্ট হয়ে চলে গেছে
তোমাদের রেসেত্মারাঁয়
পাখিদের রোস্ট তুমি ভালোবাস
এসমেরালদা
সঙ্গে জলপাইয়ের আচার!
এখানে বাঁধানো চত্বর নেই
গম ছিটালে এ-দেশে
উড়ে আসে না হূদয়ের পাখি।
এ-দেশে বাদুড় আছে
রসের পাতিল ঘিরে
ওড়ে সারারাত
তারা খেয়ে গেলে
যতটুকু রস পড়ে থাকে
তার সবটুকু কাজে লাগে
আমাদের সংসার ও বাণিজ্যে
সুমিষ্ট সুখাদ্য নিয়ে
রাত জাগে মিষ্টির দোকান।
আমি ঘাড় গুঁজে-গুঁজে তবু
প্রেমের অমৃত গুড় খুঁজে চলি
শুনতে পাই না অন্য কিছু
এমনকি হূদয়ের শব্দও।
যে-ঘণ্টা বাজাই রোজ
গির্জার মিনারে
আমারই নোতরদামে
তার ভারী শব্দ
শুনেছি কি কোনো দিন?
নাকি না শোনার
ভান করে বাজিয়ে চলেছি।
এসমেরালদা
কখনো শুনেছ তুমিও কি
হূদয়ের ঘণ্টা
করুণায় কিংবা তাচ্ছিল্যে!
কত দূরে ওই
বিস্মৃত নোতরদাম
তার দূরগামী ঘণ্টাধ্বনি
ধ্বনির পরিহাস হয়ে
এখানে ধানের ক্ষিতের কিনারে
হাঁস হয়ে উড়ে আসে
কাকতাড়ুয়ার ছায়া দেখে
ভয় পেয়ে সেই
ধ্বনির হাঁসেরা
ফিরে যায় আবার গৃহস্থ
বাড়ির খোঁয়াড়ে।
এসমেরালদা
তোমাকে বলিনি
এই কাকতাড়ুয়ার কথা
তার প্রেম নেই
দেহ নেই
সেও নেই
কেবল খড়ের
আবরণ আছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.