চন্দ্রাভিযান

আলমগীর খান

মানুষের কোমলতা, নিষ্কলুষতা ও প্রেমময় মনের প্রতিফলন চাঁদ
হারাতে লাগল তার রহস্যময়তার ঘ্রাণ
আর মনোসমুদ্রে অমোঘ মাধ্যাকর্ষণের টান।
লুণ্ঠনের কবলে সে পথ হারাল
নগরে আসা প্রথম রাখাল বালকের মতো।
আশ্রয় হলো তার পতিতাপল্লিতে।
এরপর পথে নামল সে একটুকরো ঝলসানো রুটির জন্য
কিংবা নিজেই রুটি হয়ে।
নীল আর্মস্ট্রংয়ের কাছে সে হলো পদানত
যেভাবে পদানত হলো নদী, বন ও প্রকৃতি।

রহস্যময়তার শাড়ি, ছায়া ও অন্তর্বাস খুলে খুলে
চাঁদ এখন নীরস কংকাল।
অন্তর্জালে হাজির নিত্য-ধর্ষিত নারীর মতো।
তার জন্য কারো ভালোবাসা উৎসারিত হয় না, পড়ে না অশ্রু।
এখন চলছে তাকে দখলের ও ঔপনিবেশীকরণের পাঁয়তারা
তার বুকে আজ ব্লেড, বোতাম, প্লাস্টিক বোতল ও টিস্যু পেপার
কনডমের প্যাকেটও পাওয়া যাবে কদিন পর
যখন শপিংমল খাড়া হবে তার মাটিতে।
চাঁদ হয়ে উঠেছে মানুষের ব্যাকইয়ার্ড
ওয়েস্ট বাস্কেট ও ডাস্টবিন।
পৃথিবীকে অনেক আগেই আবর্জনার ভাগাড় বানিয়ে
এখন আমরা হাত বাড়িয়েছি মহাশূন্যে
যেভাবে কলম্বাস খুঁজে পেয়েছিলে আমেরিকা
ভাস্কো-দা-গামা জেনেছিল ভারত আসার পথ।

অগ্রগতিও কি একরকম নিম্নগতি
উঠে যাওয়া কি নেমে যাওয়া অন্যরূপে?
উত্তরণ কি অবতরণের অন্য নাম
আবিষ্কার মানে হারিয়ে ফেলা?