চাঁদের কবিতা

শ্যামলকান্তি দাশ

 

এক

 

চাঁদকে বললাম, শোনো চাঁদ

আমাকে খেতে দাও, পরতে দাও,

লোকালয়ে শুতে দাও, বসতে দাও,

থালাভর্তি চাঁদের কিরণ দাও,

আমি আর এখন থেকে দুষ্টুমি করব না।

 

চাঁদ জঙ্গলে বাঘসিংহের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়,

পাহাড়ের গায়ে গায়ে হাওয়া দেয়,

মরুভূমির বুকে মরুবিজয়ের কেতন ওড়ায়,

সে এইসব আবোল-তাবোল শুনবে কেন!

চাঁদ আমাকে ফুঁ দিয়ে শূন্যে উড়িয়ে দিলো,

নিমেষে আমি দক্ষিণারঞ্জনের রূপকথা হয়ে গেলাম।

 

দুই

ভেঙেভুঙে একটা চাঁদ রাস্তায় পড়ে আছে,

ভিজে, ঠান্ডা, স্যাঁতসেঁতে – সারারাত খুব শিশির খেয়েছে।

গায়ে একটুও কিরণ নেই।

 

এত সুন্দর একটা চাঁদ শুধু শুধু হারিয়ে যাবে!

অনাহারে-অনিদ্রায় শুকিয়ে মরবে!

আমি চাঁদটাকে বগলদাবা করে বাড়ি নিয়ে যাই, আর

পাড়ার লোককে ডেকে ডেকে দেখাই

এই দেখো আমার সোনা, এই দেখো আমার মানিক।

 

দু-চারটে দিন যেতে না যেতেই চাঁদটা পোষ মেনেছে,

সংসারের পূর্ণানন্দে এখন দিব্যি

হাত ছড়িয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে।