জীবন থেকে সুসময় চলে যায় বারবার

ইকবাল আজিজ

 

আমার জীবন থেকে সুসময় চলে যায় বারবার

সরল রোদেলা দিন নিমিষেই দুর্যোগের ঘনঘটা

আকাশে বিজলি চমকায় – ঝলসায় উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম;

চারপাশে দাউদাউ অগ্নিশিখা।

জীবনের সুসময় চলে যায় – চলে যায় দূরে

আলোকিত উজ্জ্বলতা থেকে স্যাঁতসেঁতে অাঁধার অচিনপুরে;

জীবনের সুসময় চলে যায় – চলে যায় দূরে।

 

সুসময়ে নদীজুড়ে জোয়ারের জল ছিল

দল বেঁধে পালতোলা নৌকার বহর বয়ে গেছে

খুব ভোরে নানা রং পাখি নদীতীরে চরঘেঁষে পাখিমেলা;

গহিন উত্তর থেকে সুদূর দক্ষিণে

সাইবেরিয়া-তিববত থেকে আসা শীতের পাখির দল

নদীজলে করে আনন্দের খেলা –

এইভাবে বয়ে গেছে জীবনের সুমসৃণ সকাল সাঁঝের বেলা।

নিমিষেই থেমে গেছে আনন্দের নৃত্য

ভেসে গেছে রঙিন উজ্জ্বল রহস্যের ভেলা।

কাকে আলো বলে কাকে অন্ধকার এতটুকু বুঝতে পারি না

শুধু জানি মরুভূমি-জীবনের চারপাশে জল নেই, বাজে নীলকণ্ঠ অগ্নিবীণা।

 

সুসময় চলে যায়;

নাটোর ও কুষ্টিয়ায় কৈশোর যৌবন আনন্দের অফুরন্ত গান

গড়াইয়ের তীরে লালনের গ্রাম ঘেঁষে বাউলের মেলা –

ঝরে গেছে সেই কবে বৃষ্টিভেজা রবীন্দ্রের গান নজরুলের বিদ্রোহী বেলা।

 

সুসময় ছিল বাঙালির

সুসময় চলে যায় – নিভে যায় দলবদ্ধ জীবনের মায়ানীড়;

এই কি তবে ছলনার পাশা খেলা? শূন্যতার বিষাদের বেদনার্ত ভেলা?

সুসময় চলে যায়;

অসময়ে প্রাণের প্রহরী ভুল সুরে ভুল গান গায়।