শাহেদ রহমান
রোদ্রদগ্ধ জমিনে যখন রুপালি বৃষ্টির ফুল ঝরে, শিরায়-শিরায়
তার
বাজে সঞ্জীবনী সুর, সে-সুরের মতো
প্রেমিকার কাঁপা ঠোঁটে চুমু খাওয়ার তৃষ্ণার মতন, প্রাণপূর্ণ
একটি মধুর দিন
একান্ত আমার হবে –
এমন স্বপ্নের সাম্পানে আজীবন বসে আছি ঝোড়ো
খেয়াঘাটে।
সে-দিনটি কাছে এলে বেশি দিয়ে সাজাবো তোমাকে,
পৃথিবীর সব অস্ত্রাগার
পরিণত হবে পাঠাগারে, শস্যক্ষিতে, ফুলের বাগানে।
সেদিন তোমার স্তন থেকে রেশমি আলোর রশ্মি বৃক্ষক্ষর
শাখায়-শাখায় ছড়িয়ে পড়বে, সে-আলোয়
এক অভিমানী যুবকের মতো, দুরন্ত সাহসে দাঁড়াব একাকী
সুন্দরের মুখোমুখি অশান্ত সমুদ্রতীরে।
সুন্দরের সংগ্রাম নিয়ত ঝরায় মানুষের রক্ত, এ-যেন এক
ক্লাস্তিহীন তৃষ্ণা,
যৌবন পেরিয়ে শাদা চুল আর নরম হাড়ের অধিকারী হয়ে
আমি চলে যাব –
অনন্তনক্ষত্র-পুষ্পোদ্যানে আমি হব মধুকর, হয়তো-বা হব
অন্তহীন অন্ধকার।
জীবনের শেষ বিন্দু যখন ঠোঁটের প্রান্তে ঠাঁই নেয়, আমরা
কাঠের মতন ধূসর বিবর্ণ হয়ে যাই।
গাঢ়-ঘন নীরবতা সময়ের সাথে-সাথে লিখে যায় লোনাজলে,
‘শ্রমিক ও সম্রাট মহাকাল চরাচরে এক ও অভিন্ন বটে।
সুন্দরের পাশে দাঁড়াবার তৃষ্ণা পেরিয়ে-পেরিয়ে আমাকে
পড়তে হবে,
মহাপ্রলয়ের মতো মর্মাস্তিক শেষ দিনটির কাব্য –
প্রথম নিঃশ্বাস থেকে শেষটা পর্যন্ত জীবন একটি যুদ্ধ;
সেই যুদ্ধ শেষে অন্ধকারতম অভিজ্ঞতা আমাদের সমুখে
দাঁড়ায়,
হয়তো এমন দিনে, পাথরের বুক থেকে প্রবাহিত হবে জল,
একটি বিড়ালি, বা একটি পাখি
সৈন্যদের ফেলে-যাওয়া কোনো বিধ্বস্ত বাঙ্কারে
কিংবা ভেঙে-পড়া কোনো বাড়ির টুকরো-টুকরো ইট-পাথরের
ফাঁকে-ফাঁকে
ঘুমিয়ে থাকবে; কোথাও, কোথাও
হেঁটে যাওয়ার
ইচ্ছে আর শক্তি থাকবে না কারো, তবুও প্রত্যাশা – মানুষ
নতুন করে পাবে
নতুন ভুবন, তারারা ছড়াবে বিভা মেঘের ওপর। ২০.৬.২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.