মনীন্দ্র গুপ্ত
এ-শহরটা নাইরোবি, কেরমান বা বগোটার চেয়ে
অনেক তুচ্ছ।
স্টেশনের নাম লেখা ফলক ঝড়ে রৌদ্রে এমন জীর্ণ হয়েছে যে
পড়া যায় না।
প্রধান রাস্তাগুলি পাথরের – তেকোনা, চৌকোনা, ট্রাপিজয়েড পাথর –
একটা রাস্তা শেষ হয়েছে পুরোনো দুর্গ বা জেলখানায়। আর একটা
রাস্তা গেছে মরুভূমির দিকে।
একদিন শহরসুদ্ধ লোক দরজা-জানলা বন্ধ করে গ্রীষ্মের এক অবাস্তব দুপুরে
নিজেদের আটকে রেখেছিল। সেদিন মরুভূমির সিংহেরা এসে
রুটমার্চ করেছিল শহরের রাস্তায়। সিংহের গর্জনে পুরোনো ইঁদারার জল আর
রোদ্দুরে হেলে যাওয়া বাড়িগুলো থরথর করে কাঁপছিল।
সমাজবাড়িতে পতপত করে ওড়ে নানারঙের নিশান – শহরের সুন্দরী মেয়েরা
মিছিল করে এসেছে এখানে।
আরেকদিন নানারকম কার্টুন-অাঁকা পতাকা ওড়ে – মিছিল করে আসে
শহরের কুচ্ছিতেরা।
পথপাশের ঝোপে প্রজাপতি ওড়ে, সন্ধেবেলা
জোনাকি ওড়ে – ওদের সবার এখানেই জন্ম, এখানেই কর্ম।
একটা রাস্তায় শীতের হাওয়া বয় – শ্মশানবন্ধুরা সব খই ছড়িয়ে গেছে –
শীতের হাওয়ায় খই ওড়াউড়ি করে।
এই শহর নিজেকে নিয়ে নিজের মধ্যে মজে আছে।
মাঝে মাঝে দেখা যায় সন্ধ্যাবেলা বিদেশি মানুষের মতো
বিষাদ লম্বা পায়ে শস্যের মাঠ ধরে এদিকে আসছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.