তরুণ সান্যাল
টিভিতে বিজ্ঞপ্তি শুনি মেয়েদের ত্রিশে নাকি দুর্বল শিরদাঁড়া,
আমাকেও অস্থি-বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এই বয়সে নাশ পায় স্মৃতি
অথচ আমার নাকি কমেনি, লেখালেখিতেই এখনো আছি খাড়া
দেখতে শেখো বয়সকাল সহজেই প্রীতি কিংবা ভীতি
ত্রিশ বছর বয়সের আগেই ছিল ‘মাটির বেহালা’ লেখা শেষ
তখনো কল্পনা ছিল সৃষ্টিশীল, ছিল তারুণ্যের রেখার সম্প্রীতি
আশুতোষ বিল্ডিংয়ে নিরালা ঘরে ছিল শ্রোতৃ, প্রেম ও বিদ্বেষ।
কী করে বছরগুলি উড়ে গেল মনে যেন হৃৎপি– ছুরি
বিপস্নবে বিপস্নবে সঙ্গী হতে না পারলেও যেন সময় গেছে চলে
কটি বিশ-ত্রিশ বছর কেটে নিয়েছে পৃথিবীর ঘূর্ণনের চুরি
বিবাহের রঙে রাঙা ত্রিশ বছর একে একে নদীর পলিতে গেছে গলে।
মিছিল অজস্র-সভা, ইসেন্তহার, লেখালেখি নিজের সঙ্গে সংঘাত নিজের
এই তো জীবন ধর্ম অভিযানে অরণ্য সমুদ্র দেশকাল সঙ্গ গড়া
নারীর লোভন দেহ, মন গড়ন, মাটি পেয়েছি নিজস্ব বীজের
জীবন সুন্দর ছিল, দেশ-বিলাস, চাঁদের সঙ্গে সঙ্গ করা
স্বভাব ক্রমেই বদল হয় বাইরের ত্বকে দাগালি বুড়ো গাছে
পাতা হলুদ উড়ে যায় সদ্য ডেস্কে কাগজপত্রে
বুঝতে পারি কবিতার সংসর্গে উড়োখই আছে
তৃষ্ণা পেলেও গুড় ছোলাই খেতে হবে সবাইকে পথিকসত্রের
এখন অপেক্ষা শুধু ভালো লাগে জন্মান্তরেও বিপস্নবে বিশ্বাস
কুড়ি কুড়ি বছর পার বয়েস ভাবতে থাকে কয়েক বছর বারো মাস
দেশ-বিদেশে রং মেলায় বংশ বংশ হয়ে যুক্ত ফল
একটাই তো জীবন, চারদিকে সজারুকাঁটা প্রীতি হয়ে ঢাকে আমাদের।