নদীভাঙা নদীর সন্তান

মাহবুব সাদিক

 

সে কিছু শুনেছে বুঝি সংগোপন ঘুমের গভীরে

মেঘ যেন ডাকে গুরম্ন-গুরম্ন –

দক্ষিণের অন্ধকার থেকে উত্তরের দিগমত্মপ্রামেত্ম

ফুটতে ফুটতে যায় শব্দের টাটকা খই –

নাকি পরশু-র যাত্রাপালায় গহরজানের গানে

জাদুতে-পাওয়া মৈজুদ্দির দশটি আঙুল

তবলায় এখনো তোলে প্রাণকাড়া ধ্বনির লহর?

গহরের গান আর তবলার বোলে

সেরাতে আসর মাত – জীবনের প্রাপ্তিপাত্র

কানায় কানায় ভরা আনন্দের আয়োজনে;

 

আছে দুঃখ – নানারং বেদনারা, আছে দৈন্য-ক্লেশ

নিরাশার খাতে তবু অবচেতনেই সেও ভাবে

আবদ্ধ জলের কোনো ডোবা নয় বহতা জীবন,

নাকি এসবই অলীক কিছু!

জেগে উঠে সেও শোনে :

শব্দেরা গড়ায়-নাচে পাক খায় রাতের বাতাসে

আরে! এ তো কোনো স্বপ্ন নয় –

আকাশতলায় নদীতীরে ভেঙে পড়ে রাতের আকাশ

সে গড়ায় ঢালু নদীখাতে জলের দিকেই

কীর্তিনাশাই তবে শেষরাতে তার খড়োচালা

তীর ভেঙে ভাসিয়েছে রাতের নদীতে!

 

ঢালু পাড় বেয়ে গড়াতে গড়াতে নদীভাঙা এই

নদীর সন্তান দশ আঙুলে খামচে ধরে মাটি

পায়ের তলায় আতিপাতি খোঁজে কোনো খাঁজ –

ইস্পাতকঠিন

দুইটি সুদৃঢ় হাত সে বাড়ায় অস্তিত্বের দিকে…;

 

মেঘ ডাকে ভোরবেলা আকাশের এমাথা-ওমাথা

মাথায় খড়ের বোঝা সে আবার বাঁধে খড়োঘর।