নিঃসঙ্গ মানুষের কোনো বন্ধু হয় না

রবিউল হুসাইন

নিঃসঙ্গ মানুষের কোনো বন্ধু হয় না

মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয়

মানুষ সব সময় খুব একা

নিঃসঙ্গতা ছাড়া মানুষের কোনো বন্ধু নেই

একজন একাকী মানুষের কোনো বান্ধব জোটে না

কেউ তার সঙ্গী হতে চায় না

 

ওই যে-বিকেল সে খুব একা

সকালও তাই মধ্যাহ্নও

তেমনি অপরাহ্ণ সন্ধ্যা এবং গভীর রাত

নিজেরা ছাড়া ওদের আর কেউ নেই

সবাই একাকিত্বের নির্মোহ বিষণ্ণ প্রহরে

সবই নিঃসঙ্গ আলোর অন্ধকারে আলোময়

 

দুটি চোখ মেলে মানুষটি অপলক চেয়ে থাকে

কিছুই দেখে না কেবল দেখে –

অাঁধার-আলোর সেঁজুতি

ঘন অাঁধার আর আলোর ক্রমান্তর রূপান্তর

আলোহীনতায় উজ্জ্বলতার উচ্ছলতা

অাঁধারহীনতায় অন্ধকারের প্রতীতি

 

চোখে চোখ মেলালেই দেখা হয়ে ওঠে না

মানুষের সঙ্গে সময় কাটালেও একাকিত্ব যায় না

মানুষের একা থাকা শেষ হয় না

মানুষের বন্ধুহীনতার কাল শূন্য হয় না

চারিদিকে মানুষের ভিড় কত শত মানুষ অচেনা

মানুষটি সব দেখে আর চুপচাপ ভাবে –

এদের মধ্যে তার কোনো বন্ধু নেই

মানুষটির নিঃসঙ্গতা ফুরোয় না

মানুষটির সঙ্গে কারো সখ্য গড়ে ওঠে না

মানুষটির নির্জনতা শেষ হয় না

 

একা একা একজন মানুষ দূরে চলে যায়

মানুষটির কেউ খোঁজ করে না

মানুষটির কথা কেউ মনে রাখে না

মানুষটির স্মৃতি কারো মনে পড়ে না

মানুষটির অস্তিত্ব ছিল কী ছিল না

বুকে হাত দিয়ে তা-ও কেউ বলতে পারে না

 

মানুষটি কেন ছিল কেমন ছিল আছে কী নেই

মানুষটি কোথায় ছিল কতদূর ছিল কত কাছে ছিল

এ-কথাটিও কেউ জোর দিয়ে স্পষ্ট করে বলতে পারে না

শুধু বলে গভীর নৈঃশব্দ্যে –

মানুষটি ভীষণ একাকী নিঃসঙ্গ নিঃস্ব

একজন দোষী দন্ডিত অপরাধী ছিল

 

নির্বান্ধব হলে যে-ভালোবাসার অসম্মান হয়

একা থাকা যে-এক গভীর গর্হিত অপরাধ

এতে মানুষের যে-অবমূল্যায়ন অবমাননা হয়

নিঃসঙ্গ হলে যে-মানুষের চরম অপমান হয়

 

মানুষটি তা জানত না অসহায় নিরুপায়

মানুষটি যখন জানল তখন তার আর কিছুই করার ছিল না