ন্যায়বিচারের দেবী

কোথায় রয়েছো তুমি – কতকাল তোমাকে দেখি না
আজ তর্জনী তুলেছে কাল
ডেকে গেছে কালের তক্ষক,
এই দুর্দিনে তুমি কোথায় লুকোলে বলো?
বহুকাল কেটে গেছে
বীভৎস কদর্য পা অবশ্যই ফেলে ছিল ওরা
তোমার পৃথিবী জোড়া –
হন্তারকের পদচ্ছাপ তবে এতই বিশাল?
তবু এখনো হয় না বিশ্বাস
প্রকৃত বাঙালি পারে ওরকম মহীরুহ ঝাড়ে-বংশে
উপড়ে ফেলে দিতে!
তবে এ বিস্ময় বৃথা – সীমাহীন মনস্তাপ
আজীবন বয়ে বেড়াতেই হবে,
বাংলায় কথা বললেও ওরা প্রকৃৃত বাঙালি ছিল না;

মাঙ্গলিক ভোরবেলা নিঃশব্দেই এসে গেছে হন্তারক
ভীষণ অশুভ,
তবে তুমি কেন কিছুই দেখোনি এতকাল
তবে কী ভাবতে হবে অশুভ একালে
প্রকাশ্য রাজপথ থেকে গলি-উপগলি বেয়ে
নর্দমায় মলস্নান সেরে
টিউনিকে দুর্গন্ধ মেখে পুনর্বার নামে রাজপথে –
ফিরে আসে বুটে-বেয়নেটে, বুলেটে-বন্দুকে
ফিরে আসে মার্চ করে উদ্যত অস্ত্র হাতে!
তুমি কি এসব দ্যাখোনি?
সভ্যতার তরুণবেলায় তুমি এত দ্রুত বুড়ি হলে!

আর আমিই-বা কাকে বলি তরুণ সভ্যতা!
সে কি শুধু মারণাস্ত্রের সদম্ভ বর্বরতা নয়?
নয় সব মানব-বিধ্বংসী কীর্তিকলা?
তুমি ন্যায়বিচারের দেবী – তোমার প্রগাঢ় বাণীও
বহুকাল নীরবে-নিভৃতে কেঁদেছে;
নয়তো এখনো কেন নিশ্চুপ তুমি
কতকাল তোমাকে দেখি না,
এই যে কেটে গেল পঁয়তাল্লিশ বছর –
ওরা তাঁকে মেরেই ফেলেছে,
আত্তিলার দল তবু
বঙ্গবন্ধুর দিকে তাক করে আছে এখনো বুলেট!
অশুভ এখনো উদ্যত ছুরি-হাতে খালি ন্যাংচায়,
আর প্রায়ান্ধ দেবী তুমি এখনো নিশ্চুপ?
তবু দেখো, তুমিও তাকিয়ে দেখো
সেই ভাস্বর পুরুষ এখন কতটা উঁচু
প্রতিদিন তাঁর মহান উচ্চতা বাড়ছেই শুধু –
এই বামনের দেশে কোনোদিন
কেউ তাঁর নাগাল পাবে না।