পাহাড়ের খোঁজে

নওশাদ জামিল

 

শহরে পাহাড় নেই। পাহাড়ের খোঁজে চারদিকে

ছড়িয়ে পড়েছি আমি। বিসত্মৃত শহর পার হয়ে

যেতে যেতে – তারপর অনেক মাইল হেঁটে গিয়ে

মনে হয় – এ-শহরে আমার আপন কেউ নেই।

 

খালা নেই, মামাও নেই। গুহাঘরে প্রতিদিন যারা

কাজ করে, সুন্দর সুন্দর জামা-শার্ট তৈরি করে

তারাও আপন নয়। দলবেঁধে গুহা থেকে তারা

সন্ধ্যায় বেরোয়। ফুটপাত ধরে হেঁটে তারা যায়

কড়াইল, সেখানেও আমার দাঁড়াবার মাটি নেই।

 

ইতিউতি খুঁজে খুঁজে পরিচিত কাউকে না পেয়ে

ছুটছি পাহাড়ে। কিন্তু এ-শহরে কোথায় পাহাড়?

দুপুরের রোদে ঘুরি, তখনো আমার চোখে ভাসে

পাহাড়চূড়ার নারিকেল গাছ। তিরতির কাঁপে।

মনে হয়, তোমার কেশের আড়ে খেলা করে রোদ।

 

দুপুর গড়িয়ে রোদ নামে ধীরে। বিকেলের রেখা

শান্ত হতে হতে দেখি – অনেক মাইল পাড়ি দিয়ে

পৌঁছে গেছি পুরান ঢাকায়। অলিগলি, সরুপথে

ভাঙাচোরা দেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে হাজার ঘুপচিঘর।

সেখানেও আপন কেউ নেই। ঘর নেই, মোহ নেই

তবু কেন মায়াভ্রম? পাশে বয়ে চলে বুড়িগঙ্গা

দীর্ঘ বেণি তার, আষ্টেপৃষ্ঠে যেন জড়িয়ে রয়েছে।

 

কোথায় খুঁজব তাকে? তীরে বসে আনমনে ভাবি

তীব্র স্রোতে ভেসে যাচ্ছে শত পাহাড়ের প্রতিচ্ছবি।