প্রচ্ছদ-পরিচিতি

ঐতিহ্য

বাঙালির লোকায়ত শিল্পরূপকে নবীন আলোক সঞ্চার করে বাংলাদেশের চিত্রকলাকে সমৃদ্ধ করেছেন শিল্পী আবদুস শাকুর শাহ্। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পধারা তাঁর হাতে নতুন ব্যঞ্জনা অর্জন করেছে। বিশেষত ময়মনসিংহ গীতিকার কাহিনিকে অবলম্বন করে তিনি অঙ্কন করেছেন অগণিত চিত্র। এই গীতিকার কাহিনির মধ্যে প্রেম, বিরহ ও জীবন-সংগ্রাম নানাভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। মানবিকবোধ ও প্রকাশ শিল্পী আবদুস শাকুরকে অনুপ্রাণিত করেছে এ-বিষয়কে অবলম্বন করে চিত্র-অঙ্কনে। এই ভুবনে তিনি পেয়ে যান বৃহত্তর জীবন ও প্রেমের অনুষঙ্গ। অন্যদিকে লৌকিক শিল্পরূপের বর্ণ ও অলংকরণ। এই দুয়ের সমন্বয়েই গড়ে ওঠে তাঁর চিত্রভুবন। মহুয়া ও মলুয়ার জীবনের নানা অনুষঙ্গ তাঁর শিল্পিত কুশলতায় ও উপস্থাপনের গুণে হয়ে ওঠে চিত্রগুণসমৃদ্ধ। ঐতিহ্য-আশ্রিত বিচ্ছুরণ এবং নানা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে এ হয়ে ওঠে আধুনিক।

বাঙালির রূপকল্পের ছন্দ, লৌকিক শিল্পধারা পূর্বসূরিদের সৃজনশীলতায় সমৃদ্ধ হয়েছিল। শিল্পী আবদুস শাকুর শাহ্ এ-ধারাকেই আত্তীকরণ করে তাঁর সৃজনশীলতার উদ্যানকে সমৃদ্ধ করছেন।

১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারু ও কারুকলা বিভাগ থেকে বিএফএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণের জন্য ভারতের বরোদা এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। এখানেই তিনি ভারতের বিখ্যাত চিত্রকর কে জি সুব্রহ্মনিয়ামকে শিক্ষক হিসেবে পান। তাঁরই দীক্ষা ও শিল্পরুচি তাঁকে প্রভাবিত করে। এই সময় থেকে তিনি বাঙালির লৌকিক জীবন ও শিল্পধারা পুনরাবিষ্কারে ব্রতী হন ও তাঁর সৃজনী-উৎকর্ষ নতুন মাত্রা অর্জন করে।

শিল্পী আবদুস শাকুর শাহ্ ১৯৪৭ সালে বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

প্রচ্ছদের চিত্রটি শিল্পীর সংগ্রহে রয়েছে

 

হরিশংকর জলদাস কৈবর্ত-জীবন নিয়ে পুরস্কারবিজয়ী উপন্যাস লিখেছেন। ‘বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে কৈবর্ত-জীবনসংগ্রাম’ প্রবন্ধে তিনি আলোচনা করেছেন কৈবর্ত-জীবন নিয়ে লেখা অদ্বৈত মল্লবর্মণ, সত্যেন সেন, শামসুদ্দীন আবুল কালাম, বিশ্বজিৎ চৌধুরী ও মহি মুহাম্মদের উপন্যাস, সেইসঙ্গে তাঁর নিজেরও দুটি উপন্যাস এবং প্রসঙ্গত আরো দু-একটি উপন্যাস নিয়ে। বাংলাদেশের সীমানায় রচিত এসব উপন্যাসে কৈবর্তদের জীবনসংগ্রাম যেমন প্রতিফলিত হয়েছে, তেমনি দেখা গেছে তাদের পরিবর্তমান সামাজিক অবস্থা।

 

১৩

গত শতকের চল্লিশের দশকে যখন আলাউদ্দিন আল আজাদ বাংলা কথাসাহিত্যে আত্মপ্রকাশ করেন, তখন তাঁর মধ্যে বিশেষভাবে লক্ষ করা গিয়েছিল গণমুখী বিপ্লবী চেতনা। পরে তাঁর কবিতায় তারই প্রতিফলন আমরা পাই। তাঁর কবিতায় এই বিপ্লবী ধারার স্বরূপ নিয়ে আলোচনা করেছেন হুমায়ুন মালিক। তিনি দেখাতে চেষ্টা করেছেন তার বৈচিত্র্য ও বিশিষ্টতা এবং তার প্রকরণের নানাদিক।

 

২০

বাংলা কবিতার ক্ষেত্রে শহীদ কাদরীর আবির্ভাব বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে, তবে তাঁর প্রথম কাব্যের প্রকাশ ষাটের দশকে। তিনি বিরলপ্রজ কবি, কিন্তু যা-কিছু লেখেন, তা-ই সহজে অধিকার করে পাঠকের অন্তর-লোক। তাঁর তিনটি কাব্যগ্রন্থ-অবলম্বনে কামরুল ইসলাম তুলে ধরেছেন তাঁর কবিতার বিষয়সম্ভার, সেইসঙ্গে কবির কাব্যদর্শন – যাকে তাঁর জীবনদর্শনও বলা যায়।