প্রচ্ছদ-পরিচিতি

গরু ও কাক

 

বাংলাদেশের চিত্রকলা-আন্দোলনে কামরুল হাসান অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব। জয়নুল-সফিউদ্দীনের সহযাত্রী তিনি, ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও বিশিষ্ট কর্মী।

তাঁর সৃষ্টির অজস্রতা ও বিপুল বৈচিত্র্য এদেশের চিত্রকলাকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন, আশা, হতাশা ও প্রতিবাদ তাঁর সৃষ্টিতে আশ্চর্য কুশলতায় প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর অবলোকনে এদেশের মানুষ বহু বর্ণে ও বহু রূপে প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর সৃষ্টির বিপুল অংশ জুড়ে আছে রমণী। বাঙালি রমণীর স্বপ্নমঞ্জরি-অঙ্কনে তিনি শুধু সিদ্ধি ও আশ্চর্য শিল্পকুশলতার পরিচয় দেননি, নারীকে বিষয় করেছিলেন দেশ-আত্মার সংকট-অনুভব থেকে। নারীদেহে তিনি যে-শিল্পসুষমা সঞ্চারিত করেছিলেন, এদেশের চিত্রকলায় তার কোনো তুলনা নেই।

দেশের মর্মযাতনা ও মানুষের বিপন্নতা ঘিরেও তাঁর সৃষ্টির একাংশ। তিনি প্রতিবাদকেও রূপ দিয়েছেন তাঁর ক্যানভাসে।প্রকৃতি ও প্রাণিজগৎকেও তিনি রূপ দিয়েছেন নিজস্ব ধরনে – কখনো কোমলে, কখনো কঠোরে। পাশ্চাত্যের শিল্পপ্রকরণ, অভিব্যক্তি ও প্রবণতা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ও নির্মাণকুশলতা থাকা সত্ত্বেও দেশীয়  লোককলায় ঐতিহ্যে তাঁর নিমজ্জন হয়েছিল।

কামরুল হাসানের জন্ম ১৯২১ সালের ২ ডিসেম্বর, কলকাতায় এবং মৃত্যু ১৯৮৮ সালের ২ ফেব্রম্নয়ারি, ঢাকায়।

প্রচ্ছদে ব্যবহৃত চিত্রটির সংগ্রাহক আবুল খায়ের। ছবিটি কাগজে পোস্টার রঙে অঙ্কিত।