বঙ্গবন্ধু, বড় হচ্ছে আপনাকে না-দেখার মিছিল

বঙ্গবন্ধু, আপনাকে না-দেখার কোনো স্বস্তিই নেই আমার –
কিন্তু তো জন্মেছিলাম বাংলাদেশের প্রথম প্রহরে, আপনার দুর্বিনীত সাহসের প্রতিবিম্ব ঘিরে –
হতে কি পারত না, আপনাকে একঝলক দেখার ঐশ্বর্যে কাটিয়ে দিলাম একটি জীবন?

রেসকোর্স থেকে সারা বাংলা যেমন দাপিয়ে বেড়াত আপনার কণ্ঠ
তেমনি আমারও ক্ষুদে কণ্ঠ মায়ের কোল থেকে সমগ্র বাড়ি
উত্তাল করে দিত সেই দিনগুলি –

এইভাবে ভাষাহীন চিৎকার করে হয়তো আমিও কত কী বলেছি –

আপনার সময়ে জন্মেও আপনাকে না-দেখতে পারার দায় যেমন নিয়েছিল
আমার শিশু-বয়স, তেমনি
আপনাকে হত্যার দায় কি নিয়েছিল সেই শিশু-বাংলাদেশ?

বঙ্গবন্ধু, আমি আপনাকে কখনো দেখিনি
অথচ দেখেছি আপনার স্নেহের সন্তান স্বাধীন বাংলাদেশের রোগজর্জর দেহ –
তাতে সামরিক কামান, ক্ষমতার লালসা আর স্বাধীনতার বিরোধিতা ছাড়া
কিছুই দৃশ্যমান ছিল না তখন –

বঙ্গবন্ধু, আমি জন্মেছি আপনার সময়ে আর বড় হয়েছি
বিভ্রান্ত গুজব, দেশদ্রোহের উচ্ছ্বাস, আর আপনাকে হত্যাকারীদের সুবর্ণসময়ে

আমাদের গেলানো হয়েছে দুর্গন্ধ ইতিহাস, রাজাকারের স্তুতি আর
ব্যক্তিগত পেট ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে আকাশ স্পর্শের কথা –

বঙ্গবন্ধু, কাদায় রোপিত সেইসব পদচ্ছাপ শুকাতে শুকাতে
এতটাই শক্ত হয়ে উঠেছে যে, প্রবল জলোচ্ছ্বাসেও তাকে মেলানো যায় না আজ

বঙ্গবন্ধু, আমি আপনাকে কখনো দেখিনি
কিন্তু আপনার অনুপস্থিতি জুড়ে রয়ে গেছে আমার শতসহস্র প্রগাঢ় বায়না