বাংলাদেশের লোকনাটক / বিষয় ও আঙ্গিক-বৈচিত্র্য

সাইমন জাকারিয়া
সৃজনশীল-মননশীল সাহিত্য
বাংলাদেশ গ্রামপ্রধান। প্রকৃতি-তীর্থ গ্রামগুলো আপন সুদূরতা-নিবিড়তায় জীবনকে ফুটিয়ে তুলেছে বর্ণে-বৈচিত্র্যে। জীবনের এই বীজতলায় ছায়ায়-স্মৃতিতে স্বপ্নমুখর গল্পহীন জীবননাট্য শতধা বৈভবে দল মেলেছে। নাগরিক আধুনিকতা, নগরসভ্যতার উদগ্র উন্নয়নস্পৃহা আর বিশ্বায়নের সাম্প্রতিক জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে ভেঙে পড়ছে আমাদের সহজাত লোকায়ত জীবনের আবহমান ধারা। সংস্কৃতির স্বতঃস্ফূর্ত গ্রামীণ এই ধারাগুলো আজ বিপন্ন, ক্ষীণস্রোত।
আমাদের আপাতশান্ত স্তিমিত লোকজীবন জুড়ে কালে কালে এত যে নাট্যমুক্তোর জড়োয়া আভরণ গড়ে উঠেছে তা অজানাই থেকে যেত রসিক-গবেষকের অভাবে। এ অমূল্য রত্নখনির গভীরে যেতে প্রয়োজন ভালোবাসার আয়ুধ, তাতেই গবেষকের শ্রম ছাপিয়ে ফোটে মেধা-মনন নিষ্ঠা-নৈপুণ্যের স্বাক্ষর।
আত্মবিস্মৃত আত্মবিমুখ বাঙালিকে শিকড়সন্ধান-ব্রতে ডাক দিয়ে তরুণ গবেষক আলোর সিঞ্চন ঘটিয়েছেন যেন আমাদের মননজগতে। জাতির ঠিকানা-ঠিকুজির নানান উপাচারে সমৃদ্ধ এ-বই দিশেহারা জাতির সামনে যেন আত্মপরিচয়ের তমসাবৃত অধ্যায়ে আলোর ফুলকি। আমাদের সপ্রশংস অভিনন্দন, এবং সেইসঙ্গে রসিক-প্রেমিক-গবেষকের অভিযাত্রায় আমাদের আস্থা, আমাদের প্রত্যাশা।
সাইমন জাকারিয়া বাংলা একাডেমীতে কর্মরত। সাহিত্যের অন্যান্য বিভাগেও তাঁর অনায়াস দক্ষতা রয়েছে। ফোকলোর, নাট্যকলা, নৃবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানে রয়েছে তাঁর আগ্রহ। তাঁর জন্ম ১৯৭২ সালের ৩ ডিসেম্বর, কুষ্টিয়ায়।