বিলম্বিত আশরাফ

আশরাফ আহমদ

 

ত্রস্ত যখন, কোথাও যাওয়ার খুব তাড়া,

মোড়ে মোড়ে মাসিক রঙের চোখ,

আমি অনড় অর্ধেক!

যখন, কোথাও যাওয়ার নেই,

আমার বালকমন দ্রম্নতগামী অশ্বের পিঠে!

মা-বাবার প্রস্থানের পর

আমার মাছের চোখ শুধু ফ্যালফ্যাল,

অনেক বছর পর মাঝরাতে

একা একা কাঁদি।

প্রতিপদে বিলম্বিত বোধেরা

দীর্ঘ হতে হতে শেষাবধি অসহায়

আজকের বেলালের চতুর্থ সময়েও।

 

বারবার ভিনদেশি পাহাড়ের কাছে গিয়ে

চক্ষু বলেছে মনকে – এবার জুড়াও।

আমার পিচুটিলাগা চোখ

চারদিকে কলা আর বাঁশঝাড় খোঁজে,

অলস অবসর হাঁটে ধানের আলপথ ধরে।

অজুড়ানো চক্ষুদ্বয় ভুলে গেছে ঘুম,

কিংবা জেগে থাকে ঘুমের ভেতরে।

 

 

 

 

পরদেশি সমুদ্রের কাছে যাই,

ঘাসের শিশিরে বসা সূর্যের চিকচিক খুঁজি,

দশদিক থেকে অপার শূন্যতা এসে

ঘিরে ফেলে, কিছুই দেখি না।

আমি কৃষক পিতার ব্যর্থ

টনটন ঘামের নুন আস্বাদন করি,

আম্মার অশ্রম্ন চেটে খাই,

যাদের জীবন গেছে ভাতের পেছনে।

 

চালতা বা আমসত্ত্ব ভেজানো

আহা কী মিষ্টি ভাত,

হিদল শুঁটকি দিয়ে এক বউল পামত্মার ক্ষুধা

পেট থেকে উঠে আসে চোখে।

আর কোনো সমুদ্র দেখি না,

পাহাড় দেখি না,

দুঃখী উঠোনে বসা মায়ের হাঁড়িতে শুধু

ভাতের বলকানো দেখি।

ভাতময় পৃথিবীতে অন্যসব সুন্দরতা

ধোঁয়ার কু-লী হয়ে উবে যেতে থাকে,

বিলম্বিত আশরাফও

কোথায় হারিয়ে যায়।