বিশ্ব-পরিক্রমায় সমাজ-সচেতনতা

আহমদ রফিক

বা

ংলাদেশি সমাজের নানামাত্রিক নেতিবাচক দিক যত বড়ই থাক, এর ইতিবাচক দিকটি অবহেলার মতো নয়, বিশেষ করে সাহিত্য-সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রে। সেই কবে পঞ্চাশের দশক থেকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে শিক্ষিত তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীদের কর্মজীবন রুটিন-বেড়া ডিঙিয়ে সাহিত্য-সংস্কৃতিতে প্রসারিত হয়ে বর্তমানে ভিন্ন এক ভুবন সৃষ্টি করেছে। এবং তা কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস এবং ভ্রমণ কথা ও সংবাদ-সাহিত্যের মতো বিচিত্র নিবন্ধ রচনায়।

শিক্ষাঙ্গনের বাইরে এদের অনেককে দেখা যায় বেসরকারি অফিসে, প্রধানত গণমাধ্যমের বিচিত্র পরিসরে কর্মরত। পেশা তথা জীবিকার পাশাপাশি নান্দনিক আকর্ষণে লেখক-সত্তার উদ্ভাস ঘটানো এবং তা টিকিয়ে রাখার কারণে এদেশের প্রকাশনাশিল্পের জগৎটির নিয়মিত প্রসার ঘটছে। তরুণ-তরুণীদের এই সাংস্কৃতিক উদ্দীপনা ও অগ্রযাত্রা দেখে অবাক হই, ভালো লাগে পঞ্চাশের দশকের সঙ্গে তুলনা টেনে।

তবে চেতনায় রক্তক্ষরণ হয় এই অগ্রযাত্রার পাশাপাশি নিত্যদিনের সংবাদ ভুবনে প্রকাশিত ব্যাপক সমাজদূষণ, নারীনির্যাতন, নারীহত্যা, শিশুনির্যাতন, শিশুহত্যা ও সীমাহীন দুর্নীতির সমাচার পাঠ করে। সাহিত্য-সংস্কৃতির ভুবনের সঙ্গে এর বিরাট গরমিল, কোনো হিসাবেই মেলে না। মেলে না একুশের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে, যে-দুটো বিষয় নিয়ে সবাই গর্ব ও অহংকারের ঢাক পেটাই।

 

দুই

সাংবাদিক-সাহিত্যিক মিলু শামসের লেখা আতঙ্কের পৃথিবীতে এক চক্কর বইটি পড়তে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ভাবনার জগৎ থেকে সামান্য কিছু উল্লেখ, বলা যেতে পারে গৌরচন্দ্রিকা বা ভূমিকা। বইটি সুখপাঠ্য এর নির্ভার গতিশীল ভাষা ও ইতিহাসগভীর বর্ণময় তথ্যাদির কারণে। ছোট ছোট নিবন্ধে লেখকের স্বদেশ-বিদেশ পরিক্রমায় ছুটে চলা অভিজ্ঞতার বয়ান বাস্তবিকই সরস ও আকর্ষণীয়। অনেক ঘুরেছেন তিনি।

তাঁর অভিজ্ঞতার চয়নে বৈচিত্র্য আছে যেন ঘাসফুল থেকে বিশালাকার শিরীষ বৃক্ষ। রূপকথাসাহিত্যের কিংবদন্তিতুল্য লেখক সাভারের দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার থেকে কপোতাক্ষপাড়ের মহাকাব্যিক ব্যক্তিত্ব শ্রী মধুসূদন, অহোমি গণসংগীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকা থেকে অনুরূপ খ্যাতিমান সলিল চৌধুরী (হেমাঙ্গ বিশ্বাসের নাম এলে ভালো লাগাত), বিশ্বজয়ী সত্যজিৎ রায় থেকে বাংলাদেশের অকালপ্রয়াত প্রতিভাবান চলচ্চিত্রশিল্পী তারেক মাসুদ – এমনই হরেকরকম চরিত্র স্থান পেয়েছে মিলু শামসের লেখায়।

তার স্বদেশ পরিক্রমাও যথেষ্ট ব্যতিক্রমী ধারার। সাভার থেকে খাগড়াছড়ি, তবে তা প্রতিবেশী দেশ (একদা স্বদেশ) ভারতে

বিস্তৃত। দার্জিলিং-কাঞ্চনজঙ্ঘা, হিমালয় থেকে কন্যা কুমারিকা, বিশেষ করে শিক্ষাহার ও রাজনীতির ক্ষেত্রে বিশিষ্ট কেরালা, গুয়াহাটি থেকে দিল্লি-আগ্রা-তাজমহল, এমনকি রাজবন্দি নির্বাসনের দ্বীপ আন্দামান মিলু শামসকে অভিজ্ঞতার তথ্য উপহার দিয়েছে অনেক।

সত্যি একদা ভারতবর্ষ বা বর্তমান ভারত রাষ্ট্র আয়তনে যতটা বড় তুলনায় অনেক বেশি ও বিচিত্র তার শিল্পকর্ম-স্থাপত্য-ভাস্কর্য চিত্রকলা এবং সাহিত্য ও সংগীতশিল্প। রবীন্দ্রনাথ থেকে শিল্পসমালোচক অশোক মিত্রের মতে, এগুলো হিন্দু-মুসলমান

সংস্কৃতির মিলিত অবদান। বিস্ময়কর এর ভাষাবৈচিত্র্য ও জাতিসত্তার সংখ্যা এবং বৈশিষ্ট্য। অরণ্যবাসী অনার্য-পরবর্তী আদি অস্ট্রেলীয় (অস্ট্রিক ভাষা) ও দ্রাবিড় থেকে অবৈদিক ও বৈদিক আর্যভাষী জাতিগোষ্ঠী প্রাচীন ভারতীয় সমাজ গড়ে তোলে।

এরপর তুর্কি-পাঠান-মুঘল ভিন্ন ধারার ভাষা ও সংস্কৃতি সংযোজন ঘটায়। এরা সবাই ভারতবাসী। কথাটা

রবীন্দ্রনাথের। এসব সূত্রে দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা তামিল-তেলেগু-মলয়ালাম-কানাড়ি ভাষা, যা আর্য ভাষা থেকে ভিন্ন গোত্রের। এদিকে উত্তর, পশ্চিম ও পূর্ব ভারতে সংস্কৃতের ব্যাপক প্রভাব সত্ত্বেও এর রূপান্তর প্রাকৃত-মৈথিলি, পালি হয়ে এক উৎস থেকে বাংলা-আসামি-ওড়িয়া ভাষার বিকাশ। সে হিসাবে তাদের সাহিত্যকর্ম, যদিও বাংলা অনেক এগিয়ে। মিলু শামসের একাধিক নিবন্ধের বিচ্ছিন্ন ভাষ্যে এসবের আভাস ফুটে উঠেছে।

এখানে থেমে থাকেননি মিলু শামস। বিশ্বায়নের যুগ বলে কথা। উন্নত বিশ্ব, সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব, সর্বোপরি পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কড়া নেড়ে চলেছে উন্নয়নশীল বিশ্বের দরজায়, পরিণামে আর্থ-সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়া। আর সাংবাদিক তো কর্মসূত্রে যাযাবর চরিত্রের। তাই মিলু শামসও ওই টানে দেশ থেকে দেশে, শহর থেকে শহরে, অবস্থান যত স্বল্পসময়েরই হোক।

ইউরেশিয়ার সংযোগ সেতু তুরস্কের ইস্তানবুলে বসে কদিন আগেকার রক্তাক্ত জঙ্গি হামলার ভয়ংকর উপলব্ধি রোমাঞ্চকর তো বটেই। তবে কষ্ট পেতে হয়েছে কামাল আতাতুর্কের সেক্যুলার আধুনিক রাষ্ট্র তুরস্কের ভোলবদল দেখে

 

(‘আতঙ্কের পৃথিবীতে এক চক্কর’)

ভিন্নমাত্রায় অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরে ওঠে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের ব্যতিক্রম রাষ্ট্র কিউবা এবং উত্তর আমেরিকাসহ লাতিন আমেরিকার একাধিক দেশের বিশিষ্ট শহরের সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতায়, যা রাজনীতিবর্জিত নয়। সেই সূত্রে মিলু শামসের আলোচনায় উঠে আসে সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের একাধিক মনীষীর কর্মকীর্তির সংক্ষিপ্ত ভাষ্য।

লাতিন আমেরিকার গদ্যসাহিত্যের একালিক প্রতিনিধি গার্সিয়া মার্কেজবিষয়ক কথকতায় উঠে এসেছে ঔপনিবেশিক রাজনীতি, স্বৈরাচারী বা একনায়কী শাসকশ্রেণির শোষণ ও বর্বরতার প্রসঙ্গ, যা বিশ্বমাত্রিক চরিত্র অর্জন করেছে। ওই মহাদেশের কাব্যকীর্তিতে অনুরূপ স্থানের অধিকারী পাবলো নেরুদা সম্পর্কে কিছু কথা পাঠকের জন্য তৃপ্তির কারণ হতো এবং সেই সূত্রে শহিদ স্পেনীয় কবি-নাট্যকার গার্সিয়া লোরকার জন্য কয়েক ছত্র।

তবে তার স্বল্পদৈর্ঘ্য নিবন্ধে যথাযথ মর্যাদায় উপস্থিত অস্তিত্ববাদী দার্শনিক ও নিজস্ব ঘরানার বস্তুবাদী কথাসাহিত্যিক জাঁ পল সার্ত্রে। ফরাসি সাহিত্যের এই ধীমান যে প্রগতিবাদী রাজনৈতিক ভুবনেরও শক্তিমান ব্যক্তিত্ব, শামসের লেখায় তার প্রমাণ মেলে। প্রসঙ্গত, নোবেল পুরস্কার নিয়ে কথকতায় সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তির অগ্রহণযোগ্য ভূমিকা অস্পষ্ট নয়। সার্ত্রে যে-সমকালে ফরাসি বুদ্ধিবৃত্তিক ভুবনের বিবেক বা অভিভাবক, প্রেসিডেন্ট দ্যাগলের মন্তব্যে তার প্রমাণ মেলে।

এ ছাড়াও এ-গ্রন্থের আকর্ষণীয় বক্তব্য ফিদেল ক্যাস্ট্রো ও কমিউনিস্ট আন্দোলন নিয়ে। এমনকি বার্লিনের প্রসঙ্গে মার্কস অ্যাঙ্গেলস-কথা। ভালো লেগেছে লেখকের প্রখর রাজনৈতিক চেতনার প্রগতিশীলতা, যা তাঁর আন্তর্জাতিক আদর্শের পরিচায়ক। তাঁর ভাষাতেই বলি, ঠিকই মনে রাখতে হবে তাঁকে তবে আমার বিবেচনায় শুধু ‘তাঁকে’ নয় তাঁদেরকে

অর্থাৎ মার্কস-অ্যাঙ্গেলস দুজনকেই। কারণ এককথায় মার্কস-অ্যাঙ্গেলসের যৌথাবদান বিশ্বরাজনীতির এ তাবৎ শ্রেষ্ঠ মতাদর্শ, যা মার্কসবাদ নামে পরিচিত। বিশদ আলোচনায় যা প্রতিষ্ঠিত। কিছুটা হলেও তুলনীয় ডারউইন-হাক্সলি প্রসঙ্গ নাইবা টানলাম।

 

তিন

নিবন্ধগুলোর বিষয়গত ও প্রাসঙ্গিক বক্তব্য গতানুগতিক সাহিত্য বিবরণে শেষ হয়নি। এর মধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে লেখকের রাজনৈতিক সচেতনতা, নান্দনিক ব্যক্তিসত্তা এবং দৃষ্টিভঙ্গির আন্তর্জাতিক চরিত্র, যেখানে সাম্রাজ্যবাদ বনাম প্রগতিবাদী রাজনীতির দ্বন্দ্বের দিক খুবই স্পষ্ট। শিল্প-সাহিত্যের মূল্যায়নে শিল্পসর্বস্বতা (সুধীন্দ্রনাথে কথিত কলাকৈবল্যবাদ, যার আদিগুরু ফরাসি ভাববাদী কবি মালার্মে) ছাড়িয়ে প্রাধান্য পেয়েছে উদার বস্তুবাদী নান্দনিকতা, কট্টর একদেশদর্শিতা নয়।

তাঁর রচনায় পরিস্ফুট আধুনিকতার চেতনা সমাজ ও শ্রেণির দ্বান্দ্বিক পরিচয়ে ঋদ্ধ, সাম্রাজ্যবাদী সংস্কৃতি সেখানে অপাঙ্ক্তেয়। সেখানে লেখকের মতাদর্শগত দিকটি অস্পষ্ট থাকেনি। তাই মার্কস-অ্যাঙ্গেলসের আর্থ-রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে তাঁর নিশ্চিত মন্তব্য : ‘এঁদের দর্শনকে ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থার বিপর্যয় হলেও ওই দর্শনের মৃত্যু হয়নি। এর চেয়ে অধিকতর প্রগতিশীল দর্শনের জন্মও হয়নি।’ কথাগুলোর ধ্রুব সত্যে আমাদের ভাবনা ভিন্ন নয়। কারণ বর্তমান বিশ্বে কথিত দুই শিবিরের বিলুপ্তি ঘটলেও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসী শক্তিরাষ্ট্র বনাম উদার ও শুদ্ধ গণতন্ত্রীসহ সমাজতান্ত্রিক বিশ্বভাবনার দ্বন্দ্ব এখন বরং আরো প্রকট পরিণামে আঞ্চলিক যুদ্ধ, মৃত্যু, নির্যাতন, রক্তস্নান এবং বিশ্বময় অশান্তি। কবি জীবনানন্দের ভাষায়, ‘পৃথিবীর এখন গভীরতর অসুখ, রাবীন্দ্রিক ভাষ্যে সভ্যতা প্রবল সঙ্কটের সম্মুখীন। এর সমাধান লড়াইয়ে। রবীন্দ্রনাথের সে লড়াই বৈশ্যে-শূদ্রে, মহাজনে-মজুরে।’ শব্দগুলো কিছু পালটে নিলেই চিত্রটা বর্তমান বিশ্বের জন্য সঠিক।

আলোচনার সংক্ষিপ্ত ইতি টানতে শেষ কথা, এ-বইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রমী, স্পর্শকতার রচনাটি ভার্চুয়াল বন্ধুত্বও বিচ্ছিন্নতার নেটওয়ার্ক। এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনার সুযোগ নেই। অর্থনৈতিক ধারায় ব্যক্তি ও সমষ্টির দ্বন্দ্ব যতটা সত্য আদর্শে ততোধিক বিত্ত-বৈভবের স্বার্থপরতায়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অভাবিত উন্নতি সমস্যার সমাধান দূরে থাক, তাকে আরো জটিল করে তুলেছে। উগ্র জাতীয়তাবাদ, উগ্র সাম্রাজ্যবাদ ও ততোধিক উগ্র ধর্মীয় জঙ্গিবাদ বর্তমান অশান্ত বিশ্বকে দ্বিধাবিভক্ত করে ফেলেছে।

আধুনিক চেতনার হয়েও ক্ষুব্ধ শামসকে তাই বলতে হয় : এ ডিজিটাল সাম্রাজ্যের অধিপতিরা নিজেদের বাণিজ্য ও মুনাফাকে নিরুপদ্রব রাখে এমন সংস্কৃতিই ওয়েবে ছড়ায়। বিচ্ছিন্নকরণ প্রক্রিয়া এর অন্যতম প্রজেক্ট। এ-প্রসঙ্গে বেশকিছু তাৎপর্যপূর্ণ, অপ্রিয় সত্য উচ্চারণ করেছেন মিলু শামস। বিচ্ছিন্নতার মূল সত্যটি উঠে এসেছে এ নিবন্ধের শেষ অনুচ্ছেদটিতে। ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন ও সমাজ সম্পর্কে গুরুতর সত্যটি উচ্চারণের জন্য লেখককে ধন্যবাদ।

কিন্তু সমস্যা হলো, এ যুগে কলমের শক্তি শাসনদ-ের উগ্রতার সঙ্গে পেরে উঠছে না। রুশো-ভলতেয়ার-দিদেরো বা

মার্কস-অ্যাঙ্গেলস-লেনিনদের যুগ শেষ হয়ে গেছে। রঁলা-বার্বুস-রাসেল বা পরবর্তী সার্ত্রেদের শক্তিও ছিল প্রবল বিরোধিতার সম্মুখীন, তবু কিছু সাফল্য তখন ধরা দিয়েছে। এখন চমস্কিদের কথকতা সত্ত্বেও বর্তমান সময় বন্ধ্যা যুগের প্রতীক। এক শতকরাই নয়াবিশ্ব বিধানে পৃথিবী শাসন করছে।

বিশ্বজুড়ে এখন সাম্রাজ্যবাদ ও করপোরেট পুঁজিবাদের জয়জয়কার। এডোয়ার্ড সাঈদ বা চমস্কিদের চেয়ে অনেক শক্তিমান ‘সভ্যতার সংঘাত’ জাতীয় রচনার ‘বিদগ্ধ’ লেখকগণ। বিজ্ঞানীদের সহায়তায় অস্ত্র-শিল্প ও অস্ত্র-বাণিজ্যের এখন অগ্রাধিকার। নির্বোধ মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের একাধিক দেশ অস্ত্র-বাণিজ্যের শিকার। আত্মপরতা ও স্বার্থপরতা শব্দদুটো সমাজ ও সংস্কৃতিতে ধ্রুব সত্যের স্থান দখল করে নিয়েছে। বাংলাদেশ এ-বৃত্তের বাইরে নয়।

নানাভাবে এসব নির্মম সত্যের আভাস ফুটে উঠেছে মিলু শামসের বিচিত্র শিরোনামের নিবন্ধগুলোতে। এটাই

এ-বই সম্পর্কে বড় ইতিবাচক কথা। আর সে সম্পর্কে শেষ কথা হলো. সাংস্কৃতিক লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে। হাজার সমস্যার মুখে কলমটাকে বা কম্পিউটারের কিবোর্ডে আঙুলগুলোকে সচল রাখতে হবে এবং তা প্রখর রাজনৈতিক সচেতনতায়। বইটি পাঠকপ্রিয় হবে – এমন প্রত্যাশা আমার।