ভালোবাসার পাঠ

মোহাম্মদ শামছুজ্জামান

 

আর কতবার জাগালে তুমি ভালোবাসার ঢেউয়ে পাঠ দেবে!

এখন তো প্রদোষ শেষে সানবাঁধানো ঘাটে যাওয়ার সময়

সব উপলক্ষ শেষ হলে আর কোনো বাহানা থাকে না

থাকে শুধু ‘মুখোমুখি বসিবার’ দায়হীন খেলা,

এখন লাল পিঁপড়েরা শবদেহ নিয়ে ভারাক্রান্ত

প্রণয়পথে মড়া আর শকুনেরা বিছিয়ে থাকে,

তখন আর কেউ নেই ফেলে আসা স্মৃতিচিহ্ন-পথে

মরীচিকাময় দীর্ঘশ্বাসগুলো পথ আলগায়।

 

আর কতবার বললে তুমি নিশ্চিত বিশ্বাসের পাঠ নেবে।

একবার পরিশ্রমী সূর্য ডুবলে রজনী দীর্ঘ হয়

পরিশ্রান্ত রাতের প্রান্তে সিঁদকাটা মাটির ঘরে

আটপৌরে জীবনের রক্তাক্ত কথামালা পূর্ণিমায় মিশে

আবেগের সিফনে আঁচল তোলে, আর রাতের তারা

বড়ই ছেনালি ভুলিয়ে রাখে দিনমানকে

দিনের শরীর বোধের যন্ত্রণায় কুঁকড়ে থাকে।

 

আর কতবার বললে তুমি সমুদ্রে আস্থা রাখবে

আর বাতাসকে পরম মমতায় ভালোবাসে!

দেহকোষের শেষবিন্দু গভীর সিন্ধুতে সাঁতার কাটে।

ক্লান্ত হাতগুলোও মনের দরজা পেরোতে পারে

কিন্তু বিশ্বাসের ভাঙা দেয়ালে লবণাক্ত স্রোত

অলীক পথে মিশে যায়,

বুকে হিমায়িত বিষবাষ্প জ্বালামুখ হয়ে যায়,

বিষাক্ত ধোঁয়া আর রক্তে জমাটবাঁধা

নীলপাথর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

আর কতবার জাগালে তুমি ভালোবাসার ঢেউয়ে পাঠ নেবে!