ভূমিহীন চাষা

মাসুদ পথিক

 

এই যে মাথায় বয়ে নেওয়া ধানের বোঝা

আর সারিবদ্ধ চাষার সামনে দোলাচল আগামী

যা আজ আর হয় না দেখা

 

আহা রে, বিরান করে মাঠ, চলে যায় চাষা

অবসর-আক্রান্ত ক্ষেতে পড়ে থাকে, কূট – অংক ও পাখি

আর কতো না অচেনা ক্ষুণ্ণিবালা কুড়ায় ঝরাধান

 

আমি ওদের শিশুকাল হতে চিনি অথবা চিনি না

ভাবি আমি কী ধানের পাশে কুড়িয়া পাওয়া নাকফুলটি

 

এই ধানকুড়ানি, খালের প্রহেলিকা পেরিয়ে আসা মায়া

নিতম্ব দোলানো মেয়েটি হয়তো আমার হারানো মা-ও

 

ফলে স্তন পানকালে ঘরে ফেরার দল আমায় দেখে

উলঙ্গ বিলাপিত

অফুরন্ত পরিযায়ীর কেউ ঈর্ষায় ডানা ভেঙে পড়ে ক্ষেতে

 

দূর, গাঁয়ের বাঁকে ইতস্তত খড়, ধুলোমেলো

প্রতিটি মনে ছড়িয়ে যায় নবান্ন-আবেগ, মৌসুমি ঘুড়ি

 

আর মাঠের পর, ভগ্ন-শূন্য নাটাই দেখে ভাবি

কোথায় হারায় শখের হাতবোনা ঘুড়ি

 

বলবে কী এই ডানাভাঙা পাখিরে ভূমিহীন চাষাকে

এই ঝড়ের নাম কে দিলো কাল-বৈশাখি

 

শূন্য মাঠ দাঁড়িয়ে আছে অন্ধকারে দুপা ফাঁক করে

কেউ আসবে ফিরে ঝড়ধ্বস্ত রাতের শেষ আঁধারে

ফেলে যাওয়া খড় অথবা ধানের বোঝা বয়ে নিতে

Published :


Comments

Leave a Reply