মাত্র কয়েকটি কান্না

শ্যামলকান্তি দাশ

 

তোমার কান্নাগুলি রত্নসমান।

বারবার ভুলে যাই বারবার ভুলতে পারিনি।

যতবার বাড়ি ফিরি, গানের আড়াল থেকে

কান্না এসে আমাকে কাঁদায়!

 

কেন কাঁদছ? কেন কাঁদছ? কী-বা লাভ কান্নাকাটি করে?

সব কান্না মারাত্মক, সহ্যের অতীত –

কান্নার ধারাভাষ্য ধুয়েমুছে

সযতনে পাত্রে ধরে রাখি।

 

ছোট-ছোট রক্ত দিয়ে

কেউ হয়তো লিখেছে তোমাকে,

একদিন কারো হয়তো বহুবার কান্না পেয়ে গেল!

 

ওপারে অশান্ত মাঠ, খেলা চলছে ঝঞ্ঝার মতন!

 

তোমার চোখের জল স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ,

কম্পমান, সাদা,

হয়তো-বা নির্জনে মেয়েরা পড়েছে –

সে-কারণে দুয়ারে বাঁধন ছেঁড়া,

অবশিষ্ট দরজাও হাট করে খোলা!

 

এই তো সেদিন, মানে কত দিন, কত-কত অনুজ্জ্বল দিন!

গোধূলির একদিকে তুমি, আর একদিকে

শক্তিশালী তোমার মানুষ –

হঠাৎ চোখের জলে নিথর ঝাপসা দেশ,

আদ্ধেক বাড়ি ভিজে গেল!

 

আমিও হাসতাম তবে সেরকম মারাত্মক নয়।

আমার হাসির শেষে বোজা চোখ,

ঝিলিমিলি ঝিলিমিলি কান্না লেগে থাকে।

একটি সোনার মেয়ে এই হাসি এই কান্না

কী উপায়ে একদিন খরিদ করেছে!

 

এমন অসভ্য কান্না, কপাটের ছিদ্রপথে

আগে আর কখনো দেখিনি।

নেকটাই সপসপে, জামাজুতো ভিজে গেল,

অসতর্ক চোখ মনে পড়ে!

 

এই বই কবিতা কল্পনালতা, লোকে খুব যতœ করে নেবে।

মলাটের অন্ধকারে ধারালো সাপের হাসি –

আমাদের কালো বোন সাশ্রু চোখে

বাড়ি নিয়ে গেল!