মেঘেরা ভাবে, সার্কাস!

মিনার মনসুর

 

কাচের চেয়েও ভঙ্গুর যে-জীবন আমি তাকে নিয়ে সংশয়ের সূক্ষ্ম সেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে যাই। আশায় আশায় থাকি, যদি মেঘের দর্পণে বিম্বিত হয় তার অদেখা মুখখানি! সে খুব মজা পায়। ঘাড়ে বসে ডিগবাজি খায়। থুথু দেয় নাকে-মুখে। পরক্ষণে স্যাঁতসেঁতে অষ্টপায়ের ফাঁস বানিয়ে বানরের মতো ঝুলতে থাকে আমার গলায়। কানে সুড়সুড়ি দেয়। নিচে নদী ছিল জানতাম। এখন পাথরমালা – ওত পেতে আছে ক্ষুধার্ত কুমিরের মতো। আমি প্রতিবার পড়তে পড়তে কীভাবে যেন বেমক্কা ঝুলে থাকি। মেঘেরা ভাবে, সার্কাস!

গত বৈশাখেও যাদের সঙ্গে গস্নাস-ঠোকাঠুকি করেছি তাদের কারো কারো সঙ্গে দেখা হয়নি এই বৈশাখে। হবেও না আর কোনোদিন। প্রতি পদক্ষক্ষপে কাচ ভাঙার কর্কশ শব্দ চেঙ্গিস খাঁর তরবারির মতো আমাকে তাড়া করছে। সে হাসে। স্যুট-টাই পরে মুখোমুখি বসে। প্রাতরাশ সারে পরম তৃপ্তিসহকারে। আর অন্ধ মাছির মতো আমি মাথা ঠুকতে থাকি তার ধূমায়িত কফির গস্নাসে।

তার পরও বেণি দুলিয়ে বৈশাখ আসে। কালো মেয়ের কালো শরীরজুড়ে সে কী রঙের বাহার! যথারীতি বেয়াড়া প্রশ্নের দল আমাকে ছেড়ে ছুটতে থাকে তার দোলায়িত নিতম্বের পেছনে।