রীনা ভিলা

[আবদুলস্নাহ আবু সায়ীদ শ্রদ্ধাভাজনেষু]

মাকিদ হায়দার

অনেক কিছু বদলে ফেলি

মাঝে, মাঝে নিজ আবরণ।

            ভীষণ রকম ভয়ে থাকি,

            এই বুঝি কেউ বলবে এসে : লাগছে

            ভীষণ চেনা চেনা, কাল দুপুরে

            দেখেছিলাম রীনা ভিলায়

            সামনে ছিলেন

            কাল সারাদিন।

সেদিন থেকেই অনেক কিছু বদলে ফেলি।

মাঝে মাঝে নাম ঠিকানা, পিতার দেয়া

জামার বোতাম।

পারলে আমি বদলে ফেলি

আমার দুটি চোখের মণি।

            যে, মণিতে দেখেছিলাম অনেক আগে

‘           কুমার নদের কাছাকাছি

            অচেনা এক গোয়ালিনীর

            বকনা গরুর করুণ দুচোখ।

            ভেবেছিলাম, কাজলটানা ওই দুটি চোখ

            দেখবে ফিরে, – কোথায় গেল

            পথের পথিক।

কেউ দেখেনি সেদিন ফিরে – এমনকি সেই

গোয়ালিনীর মলিন শাড়ি।

             ক্ষোভে, ক্ষোভে একা, একা

             হেঁটেছিলাম ভরদুপুরে

            মাইল সাতেক।

সেদিন থেকে ঠিক করেছি

থাকবো গিয়ে গোখরা সাপের নিজের ঘরে

আসবো জেনে

কেমন করে

বদলে ফেলে নিজের খোলস

নিজ শরীরের।

গোখরা আমার কানে, কানে বলেছিল

অকারণে আর ভাবিসনে তুই কারো কথা

            গোয়ালিনীর বকনা গরু

            এমনকি সেই

            রীনা ভিলা

            সুযোগ পেলে মন থেকে তুই ঝেড়ে ফেলিস

            না-পারলে বলিস আমায়

            কামড়ে দেবো বকনাটাকে।

গোখরা সাপের কথায় আমি সব ভুলেছি

সেদিন থেকে বদলে ফেলি

নিজ আবরণ।

            মায়ের হাতের আঁচড় দেয়া চুলের সিঁথি,

            সঙ্গে সাথে গোয়ালিনীর বকনাটাকে।

তবু শুনি, রাত বিরাতে এমনি কথা,

            পেছন থেকে ডাকতে থাকে

            রীনা ভিলা।

            ফিরে এসো পথের পথিক।

            মনের পথিক। ফিরে এসো,             দাঁড়িয়ে আছি কপাট খুলে।