শর্শদি

কাইয়ুম চৌধুরী

কখন যে মুছে গেছে

দুচোখ থেকে

জননীর মুখ –

হারিয়ে গেছে পিতার

হস্তলিপি দেরাজে রাখা

চিরুনি হাতে সহোদরার

স্নেহ সম্বোধন

আহবান সহোদরের

সূর্যনগরীর গুপ্তধন।

স্মৃতির আঙিনায়

হলুদ পাখিটি দেখি

গোধূলিবেলায় –

সদর দুয়ারে

গোলাপি সাদা জামরুল

তারার মতো সবুজ বৃক্ষে

শৈশব থেকে হঠাৎ উড়াল

তৃষিত চক্ষে।

বড় কাচারি, দরদালান

ওয়াসিল পুকুরে ভাসমান

কলার ভেলা

আনন্দে সাঁতরে চলা

দুপারে রোপিত

বিন্নিধান –

মুখে লেগে থাকা

ডিমের মিষ্টি কারি

ধোঁয়া ওঠা বিন্নিভাত

সযত্নে বেড়ে দেওয়া

জননীর হাত।

কিষানের পান্তা

দেউড়িতে কাঁচামরিচের ঘ্রাণ

দুধের ঘটি হাতে

একপ্যাঁচে শাড়ি পরা

শামলার প্রস্থান।

তীব্র গতিতে টেন ডাউনের

দুরন্ত হাওয়া –

শামলার কেঁপে কেঁপে ওঠা

উড়ুক্কু শুকনো পাতা

ছেঁড়া কাগজের সঙ্গে ধাওয়া।

কাঁটা মেহেদির সবুজে ঘেরা

কয়লার গুঁড়ো ছাওয়া

প্লাটফরম –

ভেন্ডারের চা গরম

লাকসাম থেকে ফেনী

থামবে না শর্শদিতে

নেই ওঠানামা

শুধু চেয়ে থাকা

ধূসর অতীতে