শ্রাবণের পদাবলি

কামরুল ইসলাম

কখনো মনও ডুবে যায় শ্রাবণের সামন্ত জলে

তখন তালগাছের মাথা বেয়ে নেমে আসে সন্ধ্যা

নির্জন অাঁধারে ডুবে যায় পাঠশালা আর

কাঁঠালপাতারা রাতভর পড়তে থাকে জলের নামতা

এ-সময়ে কোনো সোনাব্যাঙের জলকেলির দিকে

মুখস্থ ফুলেরা ফুটতেই পারে –

 

দুই

জানালায় ঝুলে থাকা দুঃখগুলো লতিয়ে ওঠে মেঘের জাংলায়

ভোরের অদূরে শববাহী মানুষেরা যেন সব কুয়াশা-পথিক

অনেকদিনের পুরনো কান্নাসহ ভিজে ওঠে বেহিসেবি বৃষ্টির তোড়ে

বৃষ্টিও পথিক, শুধু মেঘেরা তা জানে –

 

তিন

শ্রাবণের দিকে বিহঙ্গ-নৃত্যের অবিরাম কোলাহল

মোরগফুলের চোখে জমে থাকা অন্ধকারে

বৃষ্টির অমিতভাষিণীরা স্মৃতির টাকশালে জমে থাকা

রহস্য-টেক্সটের কোর বাক্যগুলো

ধুয়ে ধুয়ে জোঁকের মতো লেগে থাকে পাতালগামী সূর্যের নিচে –

 

চার

সার্চ ইঞ্জিনের মতো সদাপ্রস্ত্তত এই কলাবাদী মন

সোনাপুর গ্রামের সব ভিজে ওঠা বাতাস ও পাতাদের দিকে

সমস্ত মৃত্যু ও শোকের দিকে, আকাশের অনাহূত কান্নার দিকে

বারে-বারে ফিরে যেতে চায় আর দেখতে থাকে

পাঠশালার ওপারে চাঁদের নিরীহ আলো সব

নিভে যাচ্ছে একে একে বৃষ্টির বিরহ সংগীতে –

 

পাঁচ

অলৌকিক বড়শিতে মাছ ধরে ফেরেশতা-কন্যারা

হাওয়া-বিলে, কাকেরা ভিজে ভিজে দ্যাখে সব

শ্রাবণের আকাশ জানে কোথায় বিরহ নামে সন্ধ্যায়

যখন হাটের কোলাহল নেভা সুনসানে মৃত সব পালক কাঁদে

মন উড়ে আর্দ্র বাতাসে অজানা সাধনের মোহে –