আলোময় বিশ্বাস
১
সভ্য মানচিত্রের ছায়ায় এক অভিনব পাঠশালা, পাঠদান চলে
ছেলেমেয়ে উল্লাসে সেই পীঠে সমবেত হয়।
শিক্ষকেরা গেরুয়া ভিক্কুর মতো শান্ত সমাহিত বোধি, দুর্বোধ উচ্চারণে
যা কিছু ঢালে
জাদুবিদ্যা উঠে আসে তাতে, নিশ্বাসে জ্ঞান প্রশ্বাসে হিতোপদেশ
এই যে পৃথিবী আর তাবৎ ব্রহ্মা- ওরা শুধু ঘুরে
ঘূর্ণনই অনাদি সুখলতা ইতিহাস
এইসব শুনে শুনে, বিদ্যার ঝাঁকি পাক খায় পরিসরে নীলে, ক্রমে প্রসারিত
নানা বর্ণে নানা ব্যাসার্ধে।
২
জগতের নিরেট দেয়াল ফুঁড়ে চলে যায় অনায়াসে হাত পা আর বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ
শিক্ষার্থীর ভাঙা শরীর ঘুরে ঘুরে ভাসে, ঘড়ির কাঁটার মতো বন বন নাচে
বোধিবৃক্ষের মূলে হাট বসে, অদ্ভুত মানুষেরা ঘুরে ফেরে
কোলাহল স্পর্শ করে নিরাকার আত্মার প্রভা, উড়ালেও দিশেহারা চতুরঙ্গ আকাশ
বিলের জলে ঝপাং ঝপ পলই পড়ে, এ যেন নতুন প্রাণ
জ্ঞানের জ্যোতি প্রকাশে, হাতের ভেতর
মাছের নড়ন, অন্তরে আলোর স্ফুলিঙ্গ, জীবনে অনন্ত ছন্দের আলো টের পায়
তবু ফিঙের দল কালো করে রাখে, বিস্ময়ের খরায় কান্নায়
ভরে থাকে নির্ঝরের শুষ্ক পথরেখা
প্রাচীন বালকেরা নানা রঙে আঁকে অন্যপাশ, অন্ধকার দেয়াল তারা পূর্ণ করে তোলে…
৩
সেইদিন এইসব কথা, ঝরাপাতা হেমন্তের মাঠে
কোনো এক পথিক, পা থেকে শিশিরের জল মুছে, আবার হাঁটেন, চোখে পড়ে
গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র প্রবাহ দুর্দশা, ভাবেন, কারা তবে এই পথে গেঁথেছিল প্রাচীন চিৎকার?
কতো পাঠ কতো পীঠস্থান গড়ে ওঠে, শিক্ষকেরা শেখায় নিয়তি
ঘোর, গেরস্থালি, মায়া –
তবু হেনস্থা বাড়ে, খুনে খুনে চরাচর হিংস্র তরবারি
অনাদি প্রতিধ্বনি রাত থেকে রাত, ভাগ্য থেকে অসহ্য অসহায় দুর্ভাগ্যরেখা
নিশ্চিত সাফল্য সময় চিহ্নগুলো বিষণ্ণ ধূসর থেকে ধূসরে মিলায়…
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.