কাজলেন্দু দে
নিসর্গের গ্রন্থাগারে আমরাই পাঠক ছিলাম।
কখনো জীবনানন্দ দাশ এসে
ঝিঁঝি পোকার ডাক আর ট্রামের চাকার শব্দ শুনতেন।
ঘাটশিলা থেকে আসতেন বিভূতিভূষণ –
নদী, আকাশ, গাছপালা আর পাখিদের সঙ্গে কথা
বলে ফিরতেন নিস্তব্ধ সন্ধ্যায়।
একদিন এক বটগাছ এসে বলল আমায় –
সুলেখাকে চেনো নাকি?
সুলেখানাম্নী কাউকে কখনো দেখিনি;
এ-নামের কাউকে চিনি না।
আমার ডায়েরিতে
প্রায় একডজন পরিচিত সুন্দরী নারীর নাম লেখা আছে,
যাদের উন্নত বুক, ওষ্ঠাধর, ঘনকালো চুল
এবং দৃষ্টির ঝরনা
স্মৃতির অনন্ত করিডোর ও দরজাগুলো
খুলে দেয়।
ওখানে সুলেখা বলে কারো নাম নেই।
তবে কি সুলেখা
গোয়েন্দাগল্পের কোনো কাল্পনিক চরিত্রের নাম?
হতে পারে। এভাবেই দিন কাটছিল।
তারপর কী যে হলো! তারপর ‘সুলেখা’ নামটি শুনলেই
বজ্রবিদ্যুৎসহ বৈশাখের ভয়ংকর কালো মেঘ
ছুটে আসে আমার আকাশে –
চৈত্রদুপুরের দীর্ঘশ্বাস বয়ে যায় বুকের ভেতর –
আর, চোখে জল ঝরে!
মনে হয়, একটু সামান্য পথ হাঁটলেই তেপান্তরের মাঠ –
রাবণ রাজার বাড়ি। ওখানে অশোকবনে
অপহৃত হয়ে
সুলেখা হয়তো বেঁচে আছে!
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.