যশোধরা রায়চৌধুরী
উদাসীবালা দাসী।
স্বামীকে ভালোবেসে করেন সূচিশিল্প, স্বর্গপ্রত্যাশী।
‘সতীর সুখ সই-লো
কেমন করে কই-লো।’
‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে।’
শুনে,
আপিস থেকে ফেরার পথে ধর্মতলা মোড়ে
স্বামী থামেন, কিনে আনেন ব্রাউন পেপার মুড়ে
বিলিতি দোকান থেকে
সোনামুখী সূচ তিনটি, গুনে…
পাতলা জিরিজিরি নরম টেঁকসই মলমল।
এবং সায়েবদোকান থেকে ডিজাইন বইগুলি।
পাতলা তেলশোষা কাগজ, ফিনফিনে। ঝলমল
ছাপা আছে উলের ডিজাইন, সূচের ফোঁড় তোলা,
অলংকরণ করার কত নতুন রকম ছল।
ব্রোকেড, মখমল, টাফেটা, ছিল অনেক, সাথে
লিনেন রুমাল, ট্রে ক্লথ, টি কোজির
নানান ফোঁড়, টান।
ভাগ্যিস আঙুলে আছে অঙ্গুলিত্রাণ!
নাহলে কী, এক-দু ফোঁটা রক্তে কারো যায় না অমন প্রাণ।
কড়াইশুঁটির কচুরি আর ছানার কাটলেট
বানিয়ে ফাঁকে, অসুস্থকে বানিয়ে দিয়ে বার্লি ফলের রস
সময় যেটুক নয়কো পরবশ
উদাসীবালা দাসী
বরের জন্য বানান রাশি রাশি
সূচিশ্রমের কাজ।
বালিশখোল, মোজা।
সব কাজই তো সোজা।
একটু করে গড়ে ওঠে সতীর স্বর্গ তাই।
মর্ত্য পাতাল জানে না তার কোথায় কী কী চাই।
সেসব জানে শুধু
গিঁট পড়ে যাওয়া সুতো, সেলাই, সূচিশিল্পের উলটোপিঠ, ধু-ধু।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.