নভেরা : মাটির আঙিনায় কিংবদন্তির অবতরণ

বাহির পথে বিবাগী হিয়া কিসের খোঁজে গেলি

আয় আয় রে ফিরে আয়

 

প্রয়াত ভাস্কর নভেরা আহমেদের (১৯৩৯-২০১৫) কথা মনে এলে, বিশেষত স্বদেশের সঙ্গে তাঁর বেদনাবিধুর সম্পর্কটি মাথায় রাখলে রবীন্দ্রসংগীতের এই কলি চৈতন্যে ভেসে ওঠে।

দেখতে দেখতে এই ক্ষণজন্মার প্রয়াণের তিন বছর অতিক্রান্ত। কতক ছোটগল্পের কাদম্বিনীর মতো নভেরা মরিয়া প্রমাণ করিয়াছেন যে তিনি মরেন নাই। সাতচল্লিশের ঠাঁইনাড়া দেশভাগ তাঁকে এক বন্ধনহীন গ্রন্থিতে বেঁধেছিল শিল্প ও সংস্কৃতির সঙ্গে। একাত্তরের পরে তাঁকে ফিরে পায়নি বাংলাদেশ। সেই হারানো নভেরাকে নতুন করে পাবার পর্ব চলছে এখন। আধুনিক বাংলাদেশ যেন তাঁর এই অভিমানী একরোখা দুরন্ত মেয়েটিকে ঘরে ফেরানোর জন্য আদর ভরে বুকের আঁচল পেতেছে। কিংবদন্তির নভেরা আহমেদ নেমে আসছেন মাটির আঙিনায়। তাঁর জীবনকে ঘিরে জমে ওঠা কথা থেকে অতিকথা সবকিছুরই নবনির্মাণ চলছে। তাঁর কর্ম বারেবারে শিল্পরসিকদের দরবারে পেশ হয়ে মূল্যায়নের প্রত্যাশী হচ্ছে। এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তাঁকে নিয়ে স্মারক বক্তৃতা হয়েছে। তাঁকে নিয়ে আলোচনাসভা বসেছে জাতীয় জাদুঘরে। এই সেদিন নিউইয়র্কে তাঁর জীবনোপন্যাস নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক হয়েছে। ধ্রুপদী অ্যাক্টিং অ্যান্ড ডিজাইন স্কুলের নাট্য প্রযোজনা নভেরা এই বৃহত্তর সাংস্কৃতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচির অঙ্গ। বেইলি রোডের যে-বাড়িতে নভেরা আহমেদ ১৯৫০-এর দশকের শেষদিকে থেকেছেন তার প্রায় লাগোয়া মহিলা সমিতি মিলনায়তনে এ-নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৩ মে। জানা গেল, ঢাকা চট্টগ্রাম শ্রীমঙ্গল ছাড়া পড়শি দুই দেশের মাটিতে মঞ্চায়ন ঘটেছে নভেরার। ২৫ মে ২০১৮ সন্ধেবেলায় মহিলা সমিতিতে এ-নাটকের ২৪তম প্রদর্শনী হলো। ২৪ মাসে ২৪ প্রদর্শনী। একটি নতুন নাটকের দলের পক্ষে শ্লাঘনীয় বইকি! তবে সেদিন সুরাহা হলো না। একে মাহে রমজান, তায় পড়ন্ত বেলায় এক পশলা বৃষ্টি। জোড়া ধাক্কায় দর্শকাসনে মোটে বিশ-পঁচিশেক মুখ দেখা গেল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে। যানজটের যাতনা তো বলাই বাহুল্য! ঘণ্টাখানেকের নাটক। জনাদশেক এলেন কথা ফুরোনোর খানিক আগে। তাঁদের জন্য বিরক্তির চাইতে সমবেদনাই হলো বেশি। তাতে অবিশ্যি নাটকের রসনিষ্পত্তিতে ঘাটতি হলো না একরত্তি।

ইদানীং জীবনীনাট্য নিয়ে দুই বাংলাজুড়ে নানান গতের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের বড়শিতে বীরসন্তানকে গেঁথে নেবার একটি প্রবণতা অনেকদিনের। আত্মক-ুয়নের ছাপ থাকলেও জগৎজোড়া বদলের বাঁকে এসে বাঙালিয়ানার পালটাতে থাকা অভিজ্ঞান চেনার জন্যে পরশপাথর খুঁজে বেড়ানোর মধ্যে দোষের কিছু নেই। ইতিহাসচর্চার পাশাপাশি জাতিসত্তার অধরা মাধুরী এতে করে মরমে পশে। ঢাকায় বা চট্টগ্রামের মঞ্চে জীবনীনাট্য অনেক হয়েছে। এখনো হচ্ছে। কয়েক বছর আগে শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বেশ কিছু নাট্যনির্মাণ হয়েছে। লালন ফকির বা সূর্য সেনের সঙ্গে আধুনিক বাংলাদেশের সম্পর্ক খতিয়ে দেখেছে কয়েকটি প্রযোজনা। হাল আমলে আবু তাহেরকে নিয়ে ক্রাচের কর্নেল নামে একটি চমকপ্রদ নির্মাণ করেছে বটতলা। বটতলার নাটকটি আদতে শাহাদুজ্জামানের লেখা উপন্যাসের মঞ্চ রূপান্তর। তাতে সমকালীন বাংলাদেশের চেনা ইতিহাসের বয়ানের আড়ালে থাকা অচেনা ইতিহাসের হদিস ছিল। ধ্রুপদীর নভেরা একই গোত্রের। ১৯৯৪ সালে হাসনাত আবদুল হাই তাঁকে নিয়ে যে-উপন্যাসটি লিখেছিলেন, যেটি বিচিত্রার ঈদ সংখ্যায় বেরোনোর পর সাড়া ফেলে এবং বই হয়ে আমাদের হাতে আসে, এই ধ্রুপদীর এই প্রযোজনা তারই নাট্যরূপ।

সন্ধে ৭টায় নাটক শুরুর কথা। হলের দরজা হাট হতে হতেই ৭টা বেজে গেল। আবছা আলোয় পথ চিনে এগোনো গেল। সিট পাওয়া গেল। রেকর্ডিংয়ে হিন্দুস্তানি ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক বাজছে। বাদলা সুরে। তারানা। ওপেন কার্টেন স্টেজ। প্রায় নিরাভরণ মঞ্চ। ডিপ সেন্টার স্টেজ বরাবর একটা রস্ট্রাম কতক ভিকট্রি স্ট্র্যান্ডের মতো ধাপে ধাপে নেমে এসেছে। আর মিড সেন্টার স্টেজ বরাবর একটি বেতের কৌচ। দেখতে পাচ্ছি আমাদের দিকে পেছন ফিরে বসে আছেন একজন। ধ্যানস্থ ভঙ্গি। অঙ্গভাষায় গান্ধার বুদ্ধের আদল। একটু বাদে আলোয় ভরল মঞ্চ। আমাদের দিকে ফিরলেন অভিনেত্রী সামিউন জাহান দোলা। পরনে সোনালি জরির পাড় বসানো কালো শাড়ি আর কনুই ঢাকা কালো ব্লাউজ। কাজলরেখায় টানা চোখের আঙিনা। কপালে আঁকা কালো নকশায় একটি অগ্নিশিখার নিচে থিতু হয়েছে দুটি কৃষ্ণবিন্দু। একমাথা চুল কোনো সাধ্বীর মতো চুড়ো করে বাঁধা। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছাড় দিলে অভিনেত্রীর এই সাজ আমাদের অনেকেরই চেনা। নভেরা আহমেদ কতক এভাবেই সাজতেন।

নভেরার টিকিটের সঙ্গে একটা প্রোডাকশন বুকলেট পাওয়া গেছিল। তাতে নভেরা আহমেদ বিষয়ক সেই আকর গ্রন্থের সানুগ্রহ উল্লেখ ছিল। হাসনাত আবদুল হাই-বিরচিত সেই বিশ্রুত জীবনোপন্যাস নভেরা। এ-উপন্যাসকে নিপাতনে সিদ্ধ ধরে নিজেই নাটক লিখেছেন সামিউন জাহান দোলা। বইয়ের মধ্যে স্মৃতিকথা ও আত্মকথনের যে-টানাপড়েন গড়েছিলেন লেখক, রকমারি কথনশৈলীর বুনোটে চিনেছিলেন বর্ণাঢ্য এক কালখ-কে, বয়ানকে আগুপিছু করে যে গতিজাড্যের মোড়কে ঢেকেছিলেন প্রয়াত ভাস্করের জীবনকে, এ-নাটকে তাকে সংরক্ষণ করেছেন নাটককার। এমনকি যেভাবে মাথার ওপর ঘূর্ণায়মান ফ্যানের ক্যাঁচক্যাঁচ আওয়াজকে লেইট মোটিফ বানিয়ে বই শুরু হয়েছে সেভাবেই শুরু হয়েছে নাটক। যেভাবে নভেরা আহমেদের প্রথম স্বামী তাঁর সদ্যপরিণীতার ইচ্ছেমতন চলাফেরায় বাঁধ দিতে চেয়েছিলেন, যেভাবে জোরজবরদস্তি করেছিলেন, যে-ঘটনাকে অনুঘটক হিসেবে দেখিয়ে নভেরার উৎকেন্দ্রিকতাকে এক ধরনের নান্দনিক স্বীকৃতি দিয়েছিলেন হাসনাত আবদুল হাই, যার মনস্তাত্ত্বিক অভিঘাত পড়েছিল নভেরার মানবিক সম্পর্কের গহিনে, তাকেই সূচক নাট্যমুহূর্ত করে তুলেছেন সামিউন জাহান দোলা। নাটকের চলনের দরকারে একটু সরলরৈখিক করে নিতে হলেও তাতে উপন্যাসের স্বাদ উবে গেল না। সত্যি বলতে কী একটি জীবনোপন্যাস কীভাবে নাট্যায়িত হতে পারে তার চমৎকার দৃষ্টান্ত হয়ে রইল সাজ্জাদ রাজীব-নির্দেশিত ধ্রুপদীর এই প্রযোজনা।

তা বলে এটিকে জীবনোপন্যাসের হুবহু কথ্যরূপ ভাবলে গোড়ায় গলদ হবে। হাসনাত আবদুল হাইয়ের লেখায়

১৯৪০-এর দশকের কলকাতা তেমনভাবে না থাকলেও ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকের ঢাকা, চট্টগ্রাম, লাহোর, করাচি, লন্ডন, প্যারিস, ফ্লোরেন্স, মুম্বাই, রেঙ্গুন, ব্যাংককের মাটিতে হরেক পেশার হরেক নেশার বাঙালিদের বর্ণাঢ্য জীবনের কড়চা আছে। ভাস্কর্যের মতোই তা ত্রিমাত্রিক। সামিউন জাহান দোলা এসবের থেকে নভেরার ব্যক্তিসত্তাকে ছেঁকে নিয়েছেন। তথ্যভারে ক্লান্ত না করে একমেটে প্রতিমা করে গড়েছেন তাঁর নাটকের নায়িকাকে। নাটকে লন্ডন বা ফ্লোরেন্সের ভাগে কম না পড়লেও যতটা পূর্ব পাকিস্তান এসেছে ততটা পশ্চিম পাকিস্তান আসেনি। নভেরার সঙ্গীদের মধ্যে যতটা জায়গা পেয়েছেন ভাস্কর হামিদুর রহমান, ততটা পাননি সাংবাদিক এসএম আলী। সেই কবেকার লন্ডনে হামিদুরের সঙ্গে নভেরার লিভ-ইনের একটি রোমান্টিক রিক্রিয়েশনের চেষ্টা করেছেন নির্দেশক। কেয়া চৌধুরী জুঁইয়ের আবহ ভাবনা তাঁকে মদদ জুগিয়েছে। নভেরাকে ঘিরে ১৯৫০-এর দশকের ঢাকা-চট্টগ্রামের সংস্কৃতিজগতের অকুণ্ঠ কৌতূহলও ফুটেছে বেশ। কিশোরগঞ্জের বুলিসমেত জলজ্যান্ত পাওয়া গেছে জয়নুল আবেদিনকে। পুরনো ঢাকার পর্দা উড়িয়ে কীভাবে নভেরাকে আশকারা জুগিয়েছিলেন হামিদুরের মা, এ-নাটক তা ভোলেনি। তুলনায় এসএম আলী থেকেছেন নাট্যে উপেক্ষিত। প্যারিসের জন্যে নভেরার কাঙালপনা ফোটেনি। আড়ালে থেকে গেছেন ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ বা ইসমত চুঘতাই। যে-রাজনৈতিক সচেতনতা নভেরার শিল্পসৃষ্টিকে ক্ষুরধার করেছিল তাও সামনে আসেনি। উপন্যাসের নভেরার পাগলপারা মেজাজের বদলে আপনভোলা জেদি মেয়েটিকে নাটকে পাওয়া গেছে বেশি। লোকমুখে লেখা পত্রে যে উড়নচ-ী প্রতিভাময়ীর ছবি ধরা আছে, স্বমহিমায় থাকাকালীন যাঁকে পুরুষতন্ত্রের তাঁবে রাখা যায়নি, তাঁকে কিঞ্চিৎ শিষ্ট করে সংযত করে গড়েছেন নাটককার। তাঁকে উদ্যাপন করেছেন। প্রশ্নবিদ্ধ করেননি। নভেরার শিল্পীসত্তার যতটুকু সাধারণ দর্শকের কাছে খুলে বলা যায় বুঝেছেন সেটুকু বলেছেন। আরো বললে মন্দ হতো না।

আসলে বলার কথা অনেক ছিল। কেন নভেরা দেশে ফিরলেন না, কেন প্রবাসে দৈবের বশে তাঁর জীবতারা খসে গেল, এ নিয়ে মান-অভিমানের পালা বাঁধা যেত। ধ্রুপদীর নাটকে তার চেষ্টা করা হয়নি। আজকাল নভেরাকে নিয়ে যে কোনো আলোচনায় উঠে আসে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল নকশার অন্যতম প্রণেতা হিসেবে নভেরার নাম মুছে দেবার ষড়যন্ত্রের গন্ধ। এর পেছনে পুরুষতন্ত্রের কালো হাত দেখতে পান অনেকে। নাটক নভেরার মধ্যে এসবের নামগন্ধ নেই। হাটে হাঁড়ি ভাঙার চাইতে কীভাবে জয়নুল আবেদিনের কাছে লাইন ড্রয়িংয়ের কারিকুরি শিখে নিলেন নভেরা তার এক বর্ণময় অভিব্যক্তি আছে। পাবলিক লাইব্রেরির দেয়ালে কীভাবে গ্রামবাংলার চিরায়ত ছবি তুলে আনলেন নভেরা তার সাতকাহন আছে।

এই সাতকাহন করার কায়দাকানুন জানা না থাকলে মহিলা সমিতির দর্শককে ঠায় বসিয়ে রাখা দায় হতো। সামিউন জাহান দোলা এমনিতে দাপুটে নন। নম্র অথচ আত্মবিশ্বাসী। তাঁর জবান স্পষ্ট। আটপৌরে কথা তাতে খেলে ভালো। আর ঢাকা থিয়েটারের এই পোড়খাওয়া অভিনেত্রী জানেন একক অভিনয়ের সোনার কাঠি কখন ছুঁইয়ে যেতে হয়। কীভাবে ধরে রাখতে হয় কথকতার সুর। কীভাবে ভাঙতে হয় পৌনঃপুনিকতার রেশ। চট্টগ্রামে

সংস্কৃতি বৈঠকের নজরুলজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সঙ্গে তাঁর নাচে গতভাঙা বলিষ্ঠ মুদ্রার আনাগোনা থাকলেও নেপথ্যে

যে-আবৃত্তি শোনা গেল তা কিঞ্চিৎ সাদামাটা। দৃশ্যটি তরে গেল তাঁর কুশলতায়। তবে মুম্বাইতে এসে বৈজয়ন্তীমালার কাছে নাচ শিখতে এসে প্রিরেকর্ডেড ট্র্যাকের সঙ্গে এমন ভরতনাট্যম নেচে দিলেন সামিউন জাহান দোলা যে বিস্মিত হতে হলো। নাচতে নাচতে তাঁর আহত হবার মুহূর্তটি নভেরার তুঙ্গমুহূর্ত।

আরো একটি রুদ্ধশ্বাস নাটকীয় মুহূর্তের জন্ম হয়েছিল সেই সন্ধ্যায়। ঢাকায় ফিরে আসা হামিদুরকে নভেরা জানালেন যে, তিনি লাহোরে চলে যাচ্ছেন। ঢাকায় কীই বা করণীয় আছে তাঁর! এই জানানোর আগে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হলো নভেরা সন্তানধারণে অক্ষম। জানানো হলো না হামিদুরকে। প্রতিক্রিয়ায় হামিদুরের মুখে উঠে এলো এসএম আলীর প্রতি যৌনঈর্ষার উচ্চারণ। এভাবে নভেরাকে ক্লিন চিট দিতে গিয়ে হামিদুরকে একমাত্রিক করে ফেলা এ-নাটকের দুর্বলতা।

ওয়াসিম আহমেদের আলোক পরিকল্পনায় টপ লাইটের মাপা প্রয়োগ আমাদের মন ভরিয়েছে। দুয়েকবার মগ্ন নভেরাকে আদর করে আলো দিয়েছে ডাউনস্টেজের উইংসের ধারে রাখা স্পট। নাট্যমুহূর্ত জমাট বাঁধতে এমন আলো যে কী কার্যকর তা বিলক্ষণ মালুম হয়েছে। তবে সংগীত পরিকল্পনায় তেমন বাহাদুরি নেই। শেষদিকে হঠাৎ এসে পড়া রবীন্দ্রসংগীতের প্রসঙ্গ তো অবাকই করেছে আমাদের। তবে এহ বাহ্য। এ-নাটকের সঙ্গে যাঁরা জড়িয়ে আছেন তাঁদের বারো আনাই নবীনা। নূতন যৌবনের দূত। একজন কালচারাল আইকনের পুনর্নির্মাণে তাঁদের এমন মনোনিবেশ আমাদের আগ্রহী করে তুলেছে। আগামী দিনে তাঁদের নজর আরো তীক্ষè হোক – এই আকুতি।

আর শোনা যাচ্ছে যে, ইয়োরোপের মাটিতে তৈরি হওয়া নভেরা আহমেদের বেশ কিছু শিল্পকর্ম বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জিম্মায় দিয়েছেন তাঁর স্বামী। সেসব নিয়ে নাকি স্থায়ী প্রদর্শনীর বন্দোবস্ত করছেন শিল্পকলা কর্তৃপক্ষ। নভেরা আহমেদ তো স্রেফ ভাস্কর ছিলেন না। লোরেটো কনভেন্টে পড়াশুনোর সুবাদে গানবাজনায় তাঁর পাকা বনেদ ছিল। সাধনা বসুর কাছে তিনি নাচ শিখেছেন। দুর্ঘটনায় পড়ার আগে পর্যন্ত নেচেওছেন ইতিউতি। এক কথায় একজন কমপ্লিট আর্টিস্ট। এমন একজন পূর্ণাঙ্গ চারুশিল্পীর একটি রসোত্তীর্ণ প্রতিকৃতি রচনায় সফল হয়েছে নাটক নভেরা।

ওই চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধনী সন্ধ্যায় ধ্রুপদীর এ-নাটকের মঞ্চায়ন হলে সোনায় সোহাগা হবে।