কালের বিচার

সুরজিৎ দাশগুপ্ত

কয়েক বছর হায়দ্রাবাদে কাটিয়ে সুরজিৎ

ফিরল কলকাতায় নিজের বাড়িতে, বিষণ্ণ, ভগ্নস্বাস্থ্য।

এই সেই বাড়ি যেখান থেকে

প্রিয়তমা গিয়েছিল হাসপাতালে,

আশা করেছিল শীঘ্রি ফিরে আসবে,

ফিরে এলো শীতল নিথর দেহ।

আজ এসে দেখল, বাড়ির সামনে জটলা।

কীসের ভিড়?

একজন বলল, ‘ওই দাড়িওয়ালা সুরজিৎ

গতরাত্রে মারা গেছে।’

‘কোন সুরজিৎ?’

‘ওই যে লিখত-টিখত – বইটই আছে।’

 

অবাক সুরজিৎ একটা দৈনিক পত্রিকা কিনল।

সেখানেও একই খবর, সঙ্গে তারই ছবি।

বিশ্বাস হলো না। জলজ্যান্ত বেঁচে সে।

এমন অদ্ভুত কথা কে কবে শুনেছে।

সামনে গিয়ে সে চিৎকার করল

‘আমি বেঁচে আছি। এই যে আমি।’

 

কেউ শুনতে পেল না।

ভিড়ের কানাকানি কানে আসে –

‘আহা সেদিন স্ত্রী মারা গেল, আজ নিজে।

সংসারে মৃতের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে।’

‘এত মৃতকে কে মনে রাখবে।’

‘জীবিতের চেয়ে সংসারে মৃতরাই সংখ্যায় বেশি।

কখন কে মৃতদের দলে যোগ দেয়, কেউ জানে না।’

এরই নাম সংসার। এরই নাম কালের বিচার।