জীবনানন্দ দাশের কবিতায় অমঙ্গলের বিষয়ে

আফসান চৌধুরী

একজন কবির স্থায়িত্বের প্রমাণ, মেলে যখন যে কাল ও সময়ের পরিসরে তিনি লিখেছিলেন সেটি পার হয়ে যাওয়ার অনেক পরও তাঁর লেখা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়। অর্থাৎ এই কবি ইতিহাসের সঙ্গে কেবল যুক্ত নন, কিছুটা হলেও ইতিহাস-উত্তীর্ণ। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, যখন সেই কবির সরাসরি রাজনৈতিক ভূমিকা চিহ্নিত করা যায় না। অর্থাৎ, সমাজের যেসব আন্দোলন, যার মাধ্যমে রাজনীতি প্রকাশ পায়, তার মূল বা প্রথম সারির সদস্য না হওয়ার পরও কোনো না কোনোভাবে আলোচনায় তিনি টিকে থাকেন। এমন একটি ক্ষেত্রে তার গুরুত্ব অন্য মাত্রা পায়। বাংলা ভাষার সাম্প্রতিক (অবশ্য সাম্প্রতিকতার সংজ্ঞা নিয়েও আলাপ হতে পারে) কবিদের মধ্যে সে-জায়গাটা দখল করে আছেন জীবনানন্দ দাশ। যেসব কারণে তিনি এখনো স্মরিত হন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তাঁর চিহ্নিতকরণ। এই চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়ার একটি হচ্ছে, জীবনানন্দকে অমঙ্গলের কবি হিসেবে ধার্য করা। এই অভিহিতকরণ এসেছে বামপন্থী ঘরানার কাছ থেকে। কারণ সরাসরিভাবে কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য তাঁরা খুঁজে পাননি, সে-কারণে সম্ভবত এই অমঙ্গল শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে জীবনানন্দকে প্রান্তিক করার চেষ্টা করা হয়েছে।

প্রাবন্ধিক ফয়সাল শাহরিয়ার একজন ঘোরতর জীবনানন্দপন্থী হিসেবে এই আখ্যা দেওয়ার বিরোধিতা করেছেন কালি ও কলম পত্রিকায় প্রকাশিত (মাঘ ১৪২৪ সংখ্যা) একটি প্রবন্ধে। ‘জীবনানন্দ : অমঙ্গলের কবি’ শিরোনামের লেখায় তিনি অবস্থান নিয়েছেন যে, জীবনানন্দ শুধু ইতিহাস সচেতনই ছিলেন না, বরং একটি খ–ত চিত্র উপস্থাপনার মাধ্যমেই এ-ধরনের সাইনবোর্ড লাগানো সম্ভব। শাহরিয়ার যার প্রতিপক্ষ হিসেবে এ-প্রবন্ধে লড়তে নেমেছেন তিনি হলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়, যিনি একজন জীবনানন্দ-সমালোচক হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু এই ঝগড়ার অন্য একটি পরিসর রয়েছে, যার সূত্র রয়েছে ত্রিশ থেকে পঞ্চাশের দশকের রাজনীতির পরিসরে। সুভাষ কট্টর কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। তাই তাঁর চোখ বাংলা সাহিত্যকে দেখেছে সেই আদর্শিক অবস্থান থেকে। ফয়সাল শাহরিয়ারের বক্তব্য হচ্ছে, এই দেখাটা কেবল খ–ত নয়, বরং অনেকটাই ভ্রান্ত।

‘অস্বীকার করা দুঃসাধ্য যে, জীবনানন্দ-পূর্ববর্তী বাংলা কবিতায় অমঙ্গলের ধারণা আদৌ কোনো যুক্তিগ্রায্য রূপে প্রকাশিত হয়নি। সংঘর্ষ নয়, সংগীতই ছিল সেখানে প্রধান সুর। যদিও আবু সয়ীদ আইয়ুব প্রমাণ করার প্রয়াস পেয়েছেন যে, রবীন্দ্রনাথ বৈষয়িক অমঙ্গলের তাৎপর্য প্রসঙ্গে সম্যক রূপে সচেতন ছিলেন (আধুনিকতা ও রবীন্দ্রনাথ)। কিন্তু পরবর্তীকালে একই গ্রন্থে তিনি স্বীকার করেছেন যে, তা রবীন্দ্র কাব্যের মূল সুর নয়। তা আদৌ অস্বাভাবিকও ছিল না।’

(কালি ও কলম, পূর্বোক্ত, পৃ ২৯)

অতএব এটা পরিষ্কার, এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ইতিহাসের সঙ্গে কাব্যের সম্পর্ক, ইতিহাস-ভাবনা ও বিশেস্নষণের সঙ্গে কবির দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরণ। কোন ইতিহাসের প্রতিনিধিত্ব করেন রবীন্দ্রনাথ আর কোন ইতিহাসের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন জীবনানন্দ দাশ। কবি ও কবিতার মধ্যে ইতিহাস কীভাবে এসে দাঁড়ায়, সেটাই আধুনিকতার ক্ষেত্রে বিশেস্নষণ করতে চেয়েছিলেন আবু সয়ীদ আইয়ুব। আর জীবনানন্দকে অমঙ্গলের কবি হিসেবে চিহ্নিতকরণের বিশেস্নষণ করতে দাঁড়িয়েছেন ফয়সাল শাহরিয়ার। কবি, কবিতা, কবিতার পাঠক ও বিশেস্নষক – সবাই হাতড়ে ফিরছেন ইতিহাসের দরজার কড়া।

 

বিষয়টা ইতিহাস

১৮১৫ সালের ইউরোপে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ঘটে ভিয়েনা কংগ্রেসের মাধ্যমে, যার পর তথাকথিত আধুনিক রাষ্ট্রের বিষয়টি একটি বাস্তবতা হিসেবে আসে। বস্ত্ততপক্ষেই এই রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়ার ইতিহাস নিয়ে অন্য আলোচনা হতে পারে, তবে ভারতীয় ঔপনিবেশিক বা বিশ্বের ঔপনিবেশিক পরিসরগুলোতে এর প্রভাব ছিল ভিন্ন ধরনের। এই সময় ইউরোপের ঔপনিবেশিক আত্মবিশ্বাসের কাল এবং তাদের মধ্যে কোনো সংকটের চেহারাও লক্ষ করা যায় না।

উলেস্নখ্য, ইউরোপের অভ্যন্তরে যেসব রাষ্ট্র ও উপরাষ্ট্রভিত্তিক ঝামেলা চলছিল, সেগুলো সমাধান হয়ে যাবে – এমন একটি ধারণা তাদের ছিল। এক ধরনের অনন্তকাল ধরে উপনিবেশনির্ভর অর্থনৈতিক দুনিয়ার কথাও তৎকালীন নেতাদের ভাবনায় ছিল। এই ভাবনার বাইরে ভারতীয় ঔপনিবেশিক সমাজও ছিল না। কমবেশি এই সময় বাংলায় জমিদারি ব্যবস্থাকে সবল করার জন্য পত্তনি প্রথার প্রচলন করা হয়, যার মাধ্যমে ধারণা ছিল, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত একটি সফল কৃষিভিত্তিক পুঁজিবাদী প্রকল্প হিসেবে উপস্থিত হবে। কিন্তু লক্ষণীয় যে, এর মাত্র ৫০ বছরের মধ্যেই ভারতে কৃষক এবং ক্ষুদ্র ভূস্বামীদের বিদ্রোহ প্রবল হতে থাকে, নতুন মধ্যস্বত্বভোগী তৈরি হয় এবং যে-আর্থিক কাঠামোর ওপর উপনিবেশ কাঠামো বাংলায় দাঁড়িয়ে ছিল সেটিও দুর্বল হয়ে যায়।

সবচেয়ে বড় কথা, ১৮৫৭ সালে হয় সিপাহি বিদ্রোহ, যার কারণে কোম্পানির শাসন শেষ হয় এবং সরাসরিভাবে ইংরেজ শাসকদের হাতে উপনিবেশ চালানোর দায়িত্ব যায়। একই সঙ্গে ইউরোপের নেতাদেরও খেয়াল ছিল না যে, তাঁদের দেশের ভেতরেই যে শ্রমিক শ্রেণি এই বিশাল পুঁজি তৈরি করছে তারা প্রতিবাদ এবং কখনো
কখনো বিদ্রোহ করবে। যে-আঘাতের চরম মুহূর্ত আসে ভিয়েনা কংগ্রেস-পরবর্তী রুশ বিপ্লবে, বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে।  অতএব সময়টি ক্রান্তিকালীন ছিল, যদিও তার মূল খেলোয়াড়দের সেটা ততটা জানা ছিল না।

 

বাংলায় রবীন্দ্র ও জীবনানন্দের কাব্যের ভারতীয় কাব্যকাল

‘বৈশ্বিক ইতিহাসের দুই মহাযুদ্ধের অন্তর্বর্তীকালীন সময় ছিল অতুলনীয় তাৎপর্যবাহী।’ (পৃ ৩০) শাহরিয়ার এই স্থানে এসে বলেছেন, মৌলিকভাবে বাংলা কবিতার যে-পরিবর্তন তা ঘটে এই বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের কারণেও। ত্রিশের দশকের অর্থনৈতিক মন্দাকে এর জন্য দায়ী করে তিনি বলেন, কেবল একটি ডিগ্রির মাধ্যমে স্বচ্ছন্দ জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল শিক্ষিত বাঙালি মধ্যবিত্তের জন্য। ‘স্বভাবতই অমঙ্গলবোধ তিরিশের দশকের বাঙালি কবিদের কাছে কোনো বিমূর্ত বিষয় ছিল না। তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উভয় ভবিষ্যৎই তখন অনিশ্চিত। মোহিতলাল মজুমদার তা উপলব্ধি করতে না পারলেও তারা বুঝতে পেরেছিলেন যে, প্রথম মহাযুদ্ধ-পূর্ববর্তী উচ্চবর্ণ বাঙালি মধ্যবিত্তের নিশ্চিত নিস্তব্ধ জীবনের পুনরাবৃত্তি আর কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। গভীর অমঙ্গলবোধ ছিল এই অনিশ্চয়তার স্বাভাবিক পরিণাম।’

‘তিরিশ দশকের সব বাঙালি কবি অবশ্য প্রায় অবশ্যম্ভাবী এই অমঙ্গলবোধ দ্বারা সমভাবে আক্রান্ত হননি। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত প্রথমরূপে বিচার্য। বুদ্ধদেব বসু স্রোতের বিপরীতে গিয়ে পাশ্চাত্য সভ্যতার মৌলিক বিশ্বাসসমূহের প্রতি অবিচল থাকেন। কিন্তু বিষ্ণু দে মার্কসবাদে তাঁর আস্থা স্থাপন করেন।’

শাহরিয়ারের অত্যন্ত পরিপক্ব বিশেস্নষণে যেমন মূল সূত্রগুলো এসেছে, তেমনিভাবে দেশের ইতিহাসের বিষয়টি বাদ পড়ে যাওয়ার বিষয়টিও লক্ষণীয়। অর্থাৎ তিরিশের দশক বাংলার রাজনীতিতে মৌলিক পরিবর্তনের কাল। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, মধ্য ও উচ্চবর্ণীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সমাজ ও সংস্কার নিয়ন্ত্রণের ইতি ঘটতে থাকে এই সময়ে এসে। ১৯৩৭ সালে অ্যাক্ট অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে যে-নির্বাচন হয়, তাতে কলকাতাকেন্দ্রিক বা কলকাতাপ্রসূত ঔপনিবেশিক দালাল শ্রেণি, যারা ইংরেজ শাসনে সবচেয়ে লাভবান হয়েছিল, তাদের গুরুত্ব কমতে থাকে। অতএব যেসব সংকট শাহরিয়ার উলেস্নখ করেছেন, তার বাস্তব ভিত্তি আন্তর্জাতিক বাজারে পতন এবং উত্থান উভয় দ্বার প্রভাবিত হয়েছিল বটে, কিন্তু বড় সংকট হচ্ছিল অভ্যন্তরীণ। অর্থাৎ কৃষকভিত্তিক রাজনীতির উত্থান। এই সমাজকে তাঁরা চিনতেন না, তাঁদের ভাবনার সঙ্গে এই তিরিশের কবিদের কোনো সম্পর্কও ছিল না। ইউরোপের দিকে তাকিয়ে থাকা কবি সম্প্রদায়ের জন্য বড় সংকট যে, বরিশালের কৃষক, যার ভোটের মাধ্যমে কৃষকপ্রজা পার্টি কলকাতার মসনদে বসবে, সেটি এই ঘটনা ঘটার ১০ বছর আগেও কেউ চিমত্মা করেনি। আন্তর্জাতিক অমঙ্গলের সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় সংকটও তাঁদের কাছে অমঙ্গলে পরিণত হওয়াটাই স্বাভাবিক।

 

অমঙ্গলনের জন্মচিহ্ন

‘আমরা তো তিমির বিনাশী/ হতে চাই/ আমরা তো তিমির বিনাশী।’       – জীবনানন্দ দাশ

‘জ্যোৎস্নায়, তবু সে দেখিল/ কোন্ ভূত? ঘুম কেন ভেঙ্গে গেলো তার?/ অথবা হয়নি ঘুম বহুকাল-লাশকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায় এবার।’         – জীবনানন্দ দাশ

 

সুভাষ মুখোপাধ্যায় (বর্তমানে প্রয়াত) ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য, যা সেকালে ভীষণভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি অনুগত। এই সময়কার সোভিয়েতপন্থীদের বিশাল আশা ছিল, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের মাধ্যমে সারাবিশ্বে তারা রাজত্ব স্থাপন করতে পারবে। এর প্রভাবে বুদ্ধিজীবী মহলে তারা যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিল; কিন্তু আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে কেউ তাদের বিচক্ষণ বা বিশেস্নষণাত্মক বলবে না। যে বড় পরীক্ষায় তারা প্রায় সবাই ফেল করে সেটি হচ্ছে, সোভিয়েত ইউনিয়নের কার্যক্রমের কোনো ধরনের সমালোচনা। ইউরোপে যখন প্রকাশিত হতে থাকে সোভিয়েতদের সাহসিকতার বিভিন্ন উলেস্নখসহ তাদের গণনিষ্ঠুরতার উদাহরণসমূহ, তখন ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা, সুভাষ মুখোপাধ্যায়সহ, আশ্রয় নেন অস্বীকার করার মধ্যে।

আজকের দিনে এসে তাঁদের ভূমিকা আদর্শিক নয়, ধর্মীয় অন্ধত্বের শামিল মনে হয়। সেই অবস্থান থেকে না হলেও জীবনানন্দের কাব্যগুণ বাম প্রাতিষ্ঠানিকতার বিপক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন উলেস্নখের মাধ্যমে জীবনানন্দের বিষয়ে তাঁদের অস্বসিত্ম প্রকাশিত হয়। ঠিক যেমনভাবে মধ্য তিরিশের দশকের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত কৃষকের চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়াতে সফল হয়নি, তেমনিভাবে তৎকালীন বামরাও দিশেহারা হয়ে যায়। সেই অর্থে দুটি উদ্ভ্রান্ত অবস্থানের এই সংলাপ হচ্ছে জীবনানন্দকে বায়বীয় অমঙ্গলের কবি হিসেবে চিহ্নিত করা।

বিশ্বের গোটা ইতিহাস যে এসব শক্তির জন্য অমঙ্গলজনক হয়ে উঠেছে সেটা তাঁদের দৃষ্টিতে পড়েনি। সে-কারণেই জীবনানন্দকে অমঙ্গলের কবি হিসেবে প্রমাণ করার প্রচেষ্টা সফল নয়। কারণ তাঁর কাব্য ছিল একটি জনগোষ্ঠীর অংশের ঐতিহাসিক বিবর্তনের সামনে অসহায়ত্বের প্রকাশ। এর মধ্যে কোনো দোটানা ছিল না। এ-কারণেই জীবনানন্দের কবিতার যে-বিপন্নতাবোধ চোখে পড়ে, সেটি মেকি নয়। অমঙ্গল বলতে যেটা বোঝায় বস্ত্তত সেটি তাঁর ও তাঁদের জন্য ছিল একটি বাস্তব বিষয়। জীবনানন্দের ভাষায় ‘হয়তো বা মানবের সমাজের শেষ পরিণতি গস্নানি নয়;/ হয়তো বা মৃত্যু নেই, প্রেম আছে, শান্তি আছে, মানুষের অগ্রসর আছে।’

জীবনানন্দের এই কুণ্ঠিত আশাবোধের জন্যই তাঁর ভাবনাগুলো কাব্যময় হয়েছে। তাঁর কবিতায় অমঙ্গলবোধ, যেভাবেই সেটা দেখা  হোক না কেন, থাকাটাই স্বাভাবিক। সে-কারণেই জীবনানন্দ তাঁর কবিতায় তাঁর সময়ের ইতিহাসকে অতিক্রম করতে পেরেছেন। এই সাফল্য তাঁর সমালোচকদের হয়নি।

ফয়সাল শাহরিয়ারকে ধন্যবাদ দিতে হয় একটি প্রাজ্ঞ সমালোচনার জন্য। কারণ বাংলাদেশে সাহিত্য আলোচনায় ইতিহাস, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য এবং কাব্যসংকট, যার সামনে দাঁড়িয়ে কবিকে তাঁর শিল্প নির্মাণ করতে হয়, সেই বিষয়গুলো তিনি অবলোকন করেছেন এবং খুঁড়ে দেখেছেন তার সূত্রসমূহ। লেখাটির মধ্যে আন্তর্জাতিক বা ইউরোপীয় ইতিহাসের ধারা বা ভাবনার অতি প্রভাব রয়েছে; কিন্তু সেটা সাধারণত বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হয়েই থাকে। তবে এভাবে একজন কবিকে ইতিহাসের পটভূমির এবং সময়ের গতিধারার পশ্চাতে রেখে আলোচনা কম হয়। তিনি এটি সম্পন্ন করে আমাদের সাধুবাদ অর্জন করলেন।