কানাডার কিংবদন্তি লেখক সুজানা মোদি

১৯৭০ সালে কানাডার স্বনামখ্যাত লেখক মার্গারেট অ্যাটউড একটি বই প্রকাশ করেন। প্রচলের বাইরের ধারায় রচিত এ-বইটির নাম দ্য জার্নালস অব সুজানা মোদি। দশ বছর পর মার্গারেটের দীর্ঘদিনের বন্ধু শিল্পী চার্লস প্যাচারের অলংকরণ এবং পরিকল্পনায় হাতে তৈরি একটি পোর্টফোলিও সংস্করণ প্রকাশিত হয় গ্রন্থটির। মাত্র একশ কুড়ি কপি প্রকাশিত হয়েছিল তখন। সম্ভবত তখনই এটির নামকরণ হয় দ্য ইলাস্ট্রেটেড জার্নাল অব সুজানা মোদি। ঊনবিংশ শতাব্দীর কানাডীয় লেখক সুজানা মোদিকে (১৮০৩-৮৫) নিয়ে মার্গারেটের কবিতাসংকলন এ-গ্রন্থ। মার্গারেট তাঁর কল্পনায় দেড় শতাব্দী আগের এই লেখককে কেমন দেখেছেন সে-চিত্রই ফুটে উঠেছে কবিতাগুলোতে।

মার্গারেটের কাব্যগ্রন্থটি তিনটি ভাগে বিন্যস্ত। প্রথম ভাগে রয়েছে নবাগত সুজানার কানাডার কুইবেকে আগমন এবং অভিবাসী হওয়ার সংগ্রাম নিয়ে। এই সময়টা মোটামুটি ১৮৩২ থেকে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত। দ্বিতীয় ভাগের কালটি মোটামুটি ১৮৪০ থেকে ১৮৭১ সাল পর্যন্ত গড়িয়েছে, যখন বেলভিলের গভীর অরণ্যের মধ্যে আশাবাদী সুজানা স্বপ্ন আর বাস্তবের মুখোমুখি। জার্নালের শেষ পর্বটির সময়সীমা ১৮৭১ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত, অর্থাৎ সুজানার মৃত্যু, মৃত্যু-পরবর্তী কাল গড়িয়ে মার্গারেটের রচনাকাল পর্যন্ত।

ইংল্যান্ডে জন্ম সুজানার। স্বামীর সঙ্গে আপার কানাডায় আসেন ১৮৩২ সালে। কোবোর্গের কাছাকাছি জায়গায় তাঁরা একটি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর রাইস লেক এরিয়ায় চলে যান তাঁরা এবং সবশেষে ১৮৪০ সালে বেলভিলের শহরতলিতে আবাস গড়েন।

১৮৬৭ সালে কানাডার কনফেডারেশন যুগ শুরুর আগে সুজানা এদেশীয় সাহিত্যের একজন প্রতিনিধিত্বশীল লেখক। কানাডায় আসার আগেই সুজানা কবিতা এবং শিশুসাহিত্য রচনায় যথেষ্ট পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ Roughing It in the Bush (১৮৫২) এবং Life in the Clearings (১৮৫৩) কানাডীয় সাহিত্যে ক্লাসিক মর্যাদা লাভ করেছে। এছাড়া তাঁর ঝুলিতে রয়েছে আটটি শিশুতোষ গ্রন্থ। কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা দুই। পরিণত বয়সে যে-পাঁচটি উপন্যাস তিনি রচনা করেন সেগুলো হলো : Mark Hurdlestone (১৮৫৩), Flora Lyndsay (১৮৫৪), Matrimonial Speculations (১৮৫৪), Geoffrey Moncton (১৮৫৫) এবং The World Before Them (১৮৬৮)। ১৯৮৫ সালে তাঁর চিঠিপত্র নিয়ে একটি ঢাউস বই প্রকাশিত হয়। শিরোনাম Letters of a Lifetime

কানাডীয় সাহিত্যের অতীত পড়তে গেলে অবশ্যম্ভাবী একটি পাঠ হলো সুজানা মোদি। সুজানা বর্তমান লেখককে বেশি আকর্ষণ করেন, যখন দেখি কানাডার গভর্নর জেনারেল সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন লেখক মার্গারেট অ্যাটউড (১৯৭০ সালে মার্গারেট বিশ্বব্যাপী এমন বহুল উচ্চারিত নাম হয়ে ওঠেননি) সুজানার জীবনসংগ্রাম ও জীবনাভিজ্ঞতা নিয়ে একটি আলাদা কাব্যগ্রন্থ লিখছেন। যে-পাঠকরা Journals of Susanna Moodie পড়েছেন তাঁদের মনে থাকতে পারে সে-সময়ের কথা যখন সুজানা প্রথম এসেছেন কানাডায়। অপরিচিত ভূখ– সুজানার বিপন্নতা এমন – ‘I am a word/ in a foreign language’। বিপন্ন সে-সময়ে সুজানার মনে হয়, ‘It was our own/ ignorance we entered’। ঠিক তখনই সুজানা শুনতে পান ‘Go back where you came from’ – অভিবাসী জীবনে কঠিন এক চপেটাঘাত।

কিন্তু সেসবের ভেতরেও সুজানার লেখালেখি থেমে থাকেনি। ১৮৩৭ সালেই টরন্টোর পত্রিকায় তাঁর কবিতা প্রকাশিত হতে শুরু করে। ১৮৩৮-এ স্বামী জন মোদির কর্মস্থল বদলি হয় বেলভিলে। মার্গারেট অ্যাটউডের বইটিতে দুই পৃষ্ঠা জুড়ে একটি কবিতা আছে। নাম ‘The Two Fires’ – আগুনরং দিয়ে পৃষ্ঠাদুটো মুড়ে দিয়েছেন অলংকারশিল্পী। কবিতাটি শুরু হয়েছে ‘One, the Summer fire/ outside’ দিয়ে। দ্বিতীয় পৃষ্ঠার শুরুতে আছে, ‘The other, the Winter/ fire inside’ দিয়ে। ১৮৪০ সালে সুজানার বাড়িতে আগুন লেগেছিল বলে জীবনীগ্রন্থগুলো উল্লেখ করছে। বেলভিল জীবনে সুজানার জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ছিল ময়রা নদীতে পাঁচ বছরের ছেলে জনের ডুবে মারা যাওয়া। মার্গারেট অ্যাটউডের ভাষায় :

His fleet slid on the bank,

The currents took him;

He swirled with ice and trees in the swollen

water.

গভীর বেদনায় সে-কথা মার্গারেট শেষ করেন ‘I planted him in this country/ like a flag’ বলে।

বেলভিল থেকে সুজানা টরন্টোয় প্রথমবার আসেন ১৮৫২ সালে। ১৮৬৯ সালে স্বামী জনের মৃত্যুর পর সুজানা যদিও মাসে মাসেই টরন্টোয় আসতেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, সুজানা মোদি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন টরন্টো শহরেই। যদিও তাঁর দেহ তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী সমাহিত করা হয় দীর্ঘদিনের চেনা বেলভিলের প্রাকৃতিক ছায়ায়, যেখানে শায়িত ছিলেন সুজানার স্বামী ও দুই সন্তান।

সুজানার এই যে অভিবাসী জীবন, সে-জীবনের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা, অভিজ্ঞতার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে একসময় আশার আলো জাগা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মার্গারেট অ্যাটউডের বইটিতে একটি অসাধারণ কবিতা আছে। শিরোনাম : ‘Thoughts from underground’। শুরুর স্তবকটির অনুবাদ এমন হতে পারে :

যখন আমি এই দেশে প্রথম এলাম

আমি দেশটিকে ঘৃণা করেছি

বছরের পর বছর আমি দেশটিকে আরো বেশি ঘৃণা করেছি।

এরপর একসময় সুজানার কণ্ঠে আমরা শুনতে পাই :

এরপর সফলতা এলো

এবং আমি অনুভব করলাম

এই দেশটিকে আমার ভালোবাসা উচিত।

সুজানা মোদির চেতনায় স্থিত এই যে আশাবাদ, সেটার সন্ধান করতে তাঁর বিপুল রচনাসম্ভার বিশেষ মর্যাদার। ১৮৫০-এর দশকে সুজানা কানাডায় তাঁর সংগ্রাম নিয়ে যে মোটাসোটা দুটি বই লিখেছিলেন সে দুটি শুরুতে প্রকাশিত হয়েছিল লন্ডন থেকেই। Roughing It in the Bush-কে কেউ কেউ উপন্যাস, কেউ কেউ দিনলিপি বা ইতিহাস হিসেবে চিহ্নিত করতে চান। লেখিকা নিজেই কিন্তু বইটির নাম কানাডার বনজীবনও রেখেছিলেন। কানাডায় অভিবাসী জীবন নিয়ে সুজানার লেখালেখির ট্রিলজির প্রধান খ- এটি। প্রস্ত্ততি নিয়ে যে-অংশ সেটির নাম Flora Lyndsay (1854)। Roughing It in the Bush-এর যে-সংস্করণ আমি পড়ার সুযোগ পেয়েছি সেটির প্রকাশকাল ১৯৮৯। উল্লেখ করা প্রয়োজন, প্রকাশের শুরুতেই এটি যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিপুলভাবে সমাদৃত হয়। তবে টরন্টো বা কানাডা সংস্করণ প্রকাশিত হতে পার হয়ে যায় আরো ১৭ বছর। বইয়ের শুরুতে সুজানার নিজের লেখা একটি ভূমিকা আছে। অভিবাসী জীবন নিয়ে সুজানার অভিজ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ সেখানে লক্ষ করা যায়। বইয়ের শুরুর লাইনটি এমন : ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিবাসী জীবন হলো একটি আবশ্যিক বিষয়, পছন্দের বিষয় নয়।’ ভূমিকার পর সুজানার একটি কবিতা স্থান পেয়েছে। শিরোনাম ‘Canada’। বলে রাখা যেতে পারে, পুরো বইয়েই সুজানা মাঝে মাঝে কবিতা ঢুকিয়ে দিয়েছেন। কবিতার পরের অধ্যায়ের নাম ‘A visit to Grosse Isle’,  যার শুরুতেই আমরা জানতে পারি কুইবেক ও মন্ট্রিলে কলেরায় ব্যাপকহারে মৃত্যু ঘটছে এবং তার মধ্যে কুইবেকের উদ্দেশে সুজানার যাত্রা। ছয়শো পৃষ্ঠার এ-বই অভিবাসী জীবন নিয়ে অসামান্য সুখপাঠ্য এক রচনা।

পরের বছরেই তিনশো পৃষ্ঠার Life in the Clearing প্রকাশিত হয়। এটি শুরু হয়েছে লেখকের বেলভিল জীবন নিয়ে। এটির ভূমিকায় লেখক জানিয়েছেন, Roughing It in the Bush প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে তিনি বহুজনের কাছ থেকে অনুরোধ পান, কানাডায় ব্রিটিশ কলোনির বর্তমান চিত্র লিখতে। আর সে-কারণেই তাঁর এ-প্রয়াস। উল্লেখ করা যেতে পারে, এ-বইটিতেও সুজানা গদ্যের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই পদ্যের মিশেল দিয়েছেন। এ-বইয়ের চতুর্দশ অধ্যায়টির শিরোনাম ‘টরন্টো’। নায়াগ্রা ফলস  (জলপ্রপাত) পর্যন্ত সুজানার যে-যাতায়াত ছিল, সে-যাত্রাপথে মানুষ এবং সমাজের চিত্র নিপুণভাবে চিত্রিত করেছেন সুজানা তাঁর এ-বইয়ে।

কানাডার অগ্রদূত নারী হিসেবে সুজানা এতই প্রভাব বিস্তারকারী এক ব্যক্তিত্ব যে, ২০১৭ সালে সিসিলি রস একটি উপন্যাস প্রকাশ করেছেন। নাম দিয়েছেন দ্য লস্ট ডায়েরিজ অব সুজানা মোদি। হারপার কলিন্স থেকে প্রকাশিত এ-উপন্যাসে সিসিলি তুলে ধরেছেন সকল প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও একজন নারী – যিনি কিনা একই সঙ্গে স্ত্রী এবং মা, লেখক এবং সমাজসেবক – তিনি কীভাবে সংগ্রাম করেন। পাঁচ দশক আগে মার্গারেট অ্যাটউড যেমন সুজানার জীবনকে কবিতায় ধরেছিলেন, এবার সেটি গল্পকথায় ধরলেন সিসিলি। এর আগে ২০০৬ সালে মন্ট্রিলের লেখক অ্যান সাইমন সুজানাকে নিয়ে জীবনী লিখেছিলেন। তারও আগে অটোয়ার ঐতিহাসিক এবং লেখক শার্লট গ্রে ১৯৯৯ সালে লিখেছিলেন সিস্টার্স ইন দ্য ওয়াইল্ডারনেস : সুজানা মোদি অ্যান্ড ক্যাথরিন পার ট্রেইল। তারও আগে ১৯৯৩ সালে টিমথি ফিন্ডলে লিখলেন হেডহান্টার, ১৯৭৬ সালে সেলিব্রেটি লেখক ক্যারল শিলডস প্রকাশ করেন ভয়েজ অ্যান্ড ভিশন, ১৯৭৪ সালে মার্গারেট লরেন্স উপন্যাস লিখলেন দ্য ডিভাইনারস। সবাই সুজানা মোদির জীবনকে আশ্রয় করে বা জীবন দিয়ে প্রভাবিত হয়েই লিখেছেন এসব বই।

মার্গারেট অ্যাটউডের গিলার পুরস্কারপ্রাপ্ত উপন্যাস অ্যালিয়াস গ্রেস (১৯৯৬) কিন্তু সুজানার লেখা থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত আশ্রয় করেই রচিত। গ্রেস মার্কস নামে যে-গৃহকর্মীর কথা সুজানার লাইফ ইন দ্য ক্লিয়ারিংয়ে পাওয়া যায় তাকে আশ্রয় করেই মার্গারেটের এই ঐতিহাসিক উপন্যাস। সুজানা গ্রেসকে নিয়ে ১৯৭৪ সালে মার্গারেট সিবিসি টেলিভিশনের জন্য লিখেছিলেন দ্য সার্ভেন্ট গার্ল

২০১৬ সালে চলচ্চিত্র-নির্মাতা প্যাট্রিক ক্রো একটি গ্রাফিক উপন্যাস প্রকাশ করেন সুজানা মোদি : রাফিং ইট ইন দ্য বুশ শিরোনামে। প্যাট্রিকের এই কাজে প্রথম পর্যায়ে সহযোগিতায় ছিলেন ক্যারল শিল্ডস। দীর্ঘ দশ বছরের পরিশ্রমের ফসল এ-গ্রন্থ। বলে রাখা যেতে পারে, প্যাট্রিক শুরুতে ক্যারলকে সুজানার জীবন নিয়ে একটি সিনেমাস্ক্রিপ্ট রচনারই প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যেটি ক্যারলের মৃত্যুতে  থেমে যায়। এ-বইয়ের ভূমিকা লিখেছেন মার্গারেট অ্যাটউড। এছাড়াও শিশুতোষ গ্রন্থের জন্য গভর্নর জেনারেল পুরস্কার পাওয়া নন্দিত লেখক জুলি জনস্টন ২০০৪ সালে প্রকাশ করেন সুজানা’স কুইল। বিংশ শতাব্দীর কানাডার গুরুত্বপূর্ণ লেখক রবার্টসন ডেভিস ১৯৫০ সালে লিখেছিলেন এক নাটক অ্যাট মাই হার্ট’স কোর নামে।

নতুন শতাব্দীর নতুনতর গবেষণা সুজানাকে উচ্চতর মূল্যায়নে প্রয়াসী। সে-প্রয়াসের শীর্ষ কারণ হলো, দাসপ্রথার বিরুদ্ধে সুজানার অবস্থান – তাঁর রচনায়, তাঁর কর্মকা–। ১৮৩১ সালে সুজানা লিখেছিলেন দ্য হিস্টরি অব মেরি প্রিন্স। সে-সময়ও তাঁর পদবি মোদি হয়নি। সে-সময় গ্রন্থের প্রচ্ছদে লেখক হিসেবেও তাঁর নাম উলিস্নখিত ছিল না। বারমুদায় দাসবৃত্তিতে নিয়োজিত মেরির নিজের কথা ছিল এ-বইয়ে। দাসদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার এই বিবরণ দাসপ্রথা নির্মূলে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট আন্দোলনের নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছিল।

Letters of a Lifetime গ্রন্থে সুজানার চিঠিপত্রগুলোকে ছটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ভাগটির সময়কাল ১৮৩৩ থেকে ১৮৫১। নাম দেওয়া হয়েছে ‘Muse on Canadian Shore’। চিঠিপত্রের এ-গ্রন্থটির যে-সংস্করণ আমার দেখার সুযোগ হয়েছে সেটি প্রকাশিত হয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো থেকে – ১৯৮৫ সালে। সম্পাদকত্রয় প্রতিটি ভাগের শুরুতে একটি করে ভূমিকা দিয়েছেন। ‘Muse on Canadian Shore’-এর শুরু থেকে আমরা জানতে পারি এই পর্বে লেখা সুজানার বিপুলসংখ্যক পত্রাবলি হারিয়ে গেছে। তাই এই পর্বে মোট চিঠি পাওয়া যায় মাত্র নয়টি। বইয়ে সংকলিত চিঠির সংখ্যা একশ আটত্রিশ। শেষ চিঠিটি সুজানা লিখেছিলেন ১৮৮২ সালের ২৫ ডিসেম্বর, বোন ক্যাথারিন পার ট্রেইলকে (১৮০২-৯৯)। উল্লেখ করা উচিত হবে যে, ক্যাথারিন নিজেও ছিলেন একজন বিশিষ্ট লেখিকা। পরিবারের বোনদের মধ্যে ক্যাথারিনই প্রথম লেখালেখিতে প্রকাশিত হন। মাত্র ষোলো বছর বয়সেই তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয়। ক্যাথারিনও তাঁর বোন সুজানার আগেই কানাডায় অভিবাসী হন। কানাডার জীবন নিয়ে তাঁর প্রথম গ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৮৩৬ সালে। নাম ছিল The Backwoods of Canada। ১৮৫১ সালে কানাডার জীবন নিয়ে তাঁর উপন্যাস Canadian Crusoes প্রকাশিত হয়। নতুন অভিবাসী নারীদের জন্য তথ্যমূলক বই The Female Emigrants Guide প্রকাশ করেন ১৮৫৪ সালে। পরে এটির নামকরণ করা হয় The Canadian Settlers Guide। কানাডার প্রকৃতি নিয়ে তিনি ভীষণভাবে আগ্রহী ছিলেন। এ-বিষয়ে তাঁর দুটি গ্রন্থের নাম হলো : Canadian Wild Flowers (১৮৬৫) এবং Studies of Plant Life in Canada (১৮৮৫)।

২০০৩ সালে কানাডার জাতীয় গ্রন্থাগারের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে কানাডা পোস্টের উদ্যোগে যে-পাঁচজন লেখককে নিয়ে চারটি স্ট্যাম্প প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর একটিতে ছিলেন কানাডার অভিবাসীজীবন নিয়ে সফল লেখক সুজানা মোদি।

 

সহায়ক গ্রন্থ

১. The Illustrated Journals of Susanna Moodie, Charles Pachter & Margaret Atwood, Cormorant Books Inc., Toronto, 1980.

২. Letters of a Lifetime, Susanna Moodie, University of Toronto Press, Toronto, 1995.

৩. The Lost Diaries of Susanna Moodie, Cecily Ross, Harper Collins Canada, Toronto, 2017.

৪. Roughing It in the Bush, Susanna Moodie, McClelland & Steward Ltd. Toronto, 1989.

৫. Life in the Clearings versus the Bush, Susanna Moodie, Penguin Random Home, Toronto 2010.