ঢুলি কমল : ফাঁসিমঞ্চে

ওবায়েদ আকাশ

 

ঢুলি কমলের চোখগুলো ঠিক যুগযুগামেত্মর বিস্ফারিত ভাষা

 

মেসোপটেমীয়, কারাল কিংবা মায়া সভ্যতার উদ্ভাবিত আলোয়

তার ঢোলের ব্যঞ্জনা মহাকালিক সংগীত রচনা করে

 

যে-কোনো হ্রস্ব কিংবা ভীরু মানুষের বুকে

একবার আন্দোলিত হলে ভোরের মর্মর নাকি

অন্ধকারে মহাপ্রলয়ের তূর্য রচিত হয় –

এ-কথা জানে না কমল

 

কোলাহল থেমে গেলে সে যখন নিতান্ত ঢোলের বাড়িতে

সভ্যতার একাল থেকে সেকাল প্রকম্পিত করে দেয়

রাজদ- ছুটে এসে দুহাতের কবজি কেটে নদীতে ভাসিয়ে

দেয় গীত সমাহার। ঢুলির উদ্বেলিত রূপ একবার কেটে ফেলা হাত

আর একবার রাজলেখ্য ভর করে হেঁটে যায় ফাঁসিমঞ্চের প্রপঞ্চিত পটে

 

যমটুপি বিদ্ধ ক’রে কতকালের পুরনো ফাঁসির রজ্জুতে দেখে

পৃথিবীর অরুণোদয় থেকে অসত্মাচল কত কত রাজা ও রাজপ্রহরীর

কালো রক্তপুঁজ – কখনো ঘৃণায় কখনো প্রবল জিজ্ঞাসায় কালশিটে হয়ে আছে

 

সহাস্যে, ফাঁসিমঞ্চে হেঁটে আসা কমল

রাজরোষে শানানো ছুরিটা নিজেই বসিয়ে দেয় নিজেকে হঠাৎ!

তার ছিটকে পড়া রক্তে নতুন কোনো জিজ্ঞাসার ভূভাগ রচিত হয়

 

এবার তাতে, রাজা নেই রক্ত নেই

প্রলম্বিত সবুজ উদ্যান জুড়ে মানুষ রয়েছে শুধু –

পাখিগুলো উড়ে গেছে যত্রতত্র হিরণ্য ডানায়, আর

ভাষাগুলো চুরি হয়ে গেছে শতদল পাপড়ির ফোটায়