অধিনায়ক

সে-রাতের কথা ভাবতেই দেখি
ধুলোয় লুটোয় কালো চশমার ফ্রেম
রক্তছোপ শাদা পাঞ্জাবির নক্ষত্র বোতাম
ধোঁয়াহীন পাইপের ভাঙা ছড় –

রাতচেরা গুলিশব্দে থেমে যায়
সুরভরা গ্রামোফোন
খসে পড়ে ভ্রমর ও ভাঁটফুল
ডেরা থেকে উড়ে যায় পয়ার ও পায়রার স্বর –

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল জুড়ে কেঁপে ওঠে
দোয়েলের ডানাভাঙা শিস!

৩২ নম্বর এই বাড়ির সিঁড়িতে তুমি পড়ে আছ
হে পিতা, জনক আমার,
স্বাধীনতা বাজানো মোজার্ট – বিজয় শানানো বিটোফেন!

সে-রাতের কথা ভাবতেই দেখি
রেসকোর্সের ঘোড়াগুলো মাঝরাতে ছুটে যায়
জাদুবাস্তব আস্তাবলের ঘাসে!
আততায়ী জোব্বা থেকে
হঠাৎ ঝলসে ওঠে মর্মচেরা ধাতব ইস্পাত!

৩২ নম্বর এই বাড়ির সিঁড়িতে তুমি পড়ে আছ
হে পিতা, জনক আমার,
স্বাধীনতা-বাজানো মোজার্ট – বিজয় শানানো বিটোফেন!

হে অধিনায়ক, বঙ্গবন্ধু, দ্যাখো আজ
আমাজন অরণ্যের পাখি
তোমাকে পাঠিয়ে দিচ্ছে চে গুয়েভারার নোটবুক!
হাভানার কাস্ত্রো
তোমাকে জানিয়ে দিচ্ছে অভিবাদন, স্যালুট!
সুনন্দা ইন্দিরা
তোমাকে ছড়িয়ে দিচ্ছে শ্বেতপায়রার পালক!

হে পিতা, বঙ্গবন্ধু, জনক আমার,
দ্যাখো সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসা এই রক্তস্রোতে
জেগে উঠছে দূরাগত সব দেবদূত –
রক্তকোরকের ওমে
ভেঙে যাচ্ছে নিষিক্ত ভ্রূণের ঘুম –

হে অধিনায়ক, তোমার ‘দাবায়ে রাখতে পারবা না’মন্ত্রস্বরে
জেগে উঠছে মৌন সমুত্থানে – হাজার হাজার ঈগলের ডানা!