তুই থাকছিস তো

হারিসুল হক

সজল তোর কাছে বেশ ক’টা কথা আছে জানবার
কেমন আছিস তুই? কীভাবে পেরোলি তুই এতসব মায়াজাল
অমন সংসার?
ধাঁধানো সবুজ ছেড়ে কই তুই, কোথায় পালালি – কেন গেলি?

যেখানে আছিস সেখানেও কী ঝাঁকবাঁধা দোয়েল শ্যামা
রাধাচূড়ার অগ্নিভ আভায় দিনমান সংগীতময় থাকে?
সেখানেও কি পাহাড়চুড়োয় উদাস দাঁড়ালে
ছোটবড় টিলা আর জুমপল্লির সৌরভ দেমাগি বাতাস জুড়ে
ওড়ে আর দোলে?
ওখানেও কী বেঁটেমত হৃষ্টপুষ্ট দুধালো গাই তার নৃত্যরত বাছুরের
সাথে বাৎসল্যক্রীড়ায় মেতে থাকে?

সজল ওখানেও কি মেঘনা নামের কোনো এক নদী আছে নাকি?
যে-নদীর উৎস হলো আমাদের হৃদয়ের যুগল বোঁটা –
আছে নাকি
মেঘনার মতো মুলতানি জম্পেশ সেই নদী!
ওর বুকের গহিনে বাস করে নাকি এক মানুষখেকো দুরন্ত কুমির
আমি তাকে কোনোদিনই চোখে দেখিনি
তবে ওর অনেক কাহিনি শুনেছি

আশুগঞ্জের চর থেকে ভৈরব নদীপাড়
কতদূর কদ্দুর
তুই কী এখনো টের পাস?
আমার ভুবন থেকে তোর ভুবন কতদূর কদ্দুর
একদম না-জানা দেশ, কোথায় কী হদিস জানি না
সজল খুব জানতে ইচ্ছে করে আমাকে এগিয়ে নিতে তুই থাকছিস তো

বৃক্ষের সব ফল ঝরে পড়ে মৃত্তিকার উদার বুকে
পৃথিবীর সব প্রাণ জড়ো হয় কোন আঙিনায়
মানুষ হারিয়ে যায় – হারিয়ে কী বাঁচে?
তখনো কী সুষুপ্ত চেতনায় তার কঁকিয়ে কঁকিয়ে ওঠে মুগ্ধ স্মৃতিভার