যন্ত্রঘর

তুষার কবির

 

নৈঃশব্দ্যের ফেলে দেয়া আধুলি কুড়িয়ে

ফিরে যাচ্ছে সংগীতের মৌন পুরোহিত;

মন্দ্রিত মূর্ছনা আর

ভগ্ন উপাখ্যান রচনার শেষ দিনে

সে কুড়িয়ে কুড়িয়ে জড়ো করে নিচ্ছে

যতো ছায়াচেরা গান

আর স্তব্ধতার স্বরলিপি –

ধ্বনিময় পৃথিবীর টানে

আর শূন্যতার অনিঃসীম গানে

সে ফিরে যাচ্ছে তার সুরমগ্ন যন্ত্রঘরে –

 

দ্যাখে বেহালাটা আর আগের জায়গায় নেই;

তারগুলো হয়ে গেছে পিঙ্গল বর্ণের –

ধূলিঢাকা ছেঁড়া তানপুরা – প্রলেপ মাখানো

প্রাগৈতিহাসিক চামড়ায়

নুয়ে পড়ে আছে বিকল তবলা –

তৈজসের নিচে চাপা পড়া করুণ ক্ল্যারিওনেট

আর বলে উঠছে না, ‘অভিবাদন, হে সিনোরিটা’ –

 

যন্ত্রঘরের পাশেই একটা কাঠের দরজা;

যার ঠিক পেছনেই পদ্মভাসা সরোবর –

দুটি সুতনুকা রাজহাঁস তাতে খেলা করে যাচ্ছে,

বেহালার ভাঙা ছড় হাতে

ওখানে দাঁড়িয়ে গেল সেই প্রাজ্ঞ পুরোহিত –

 

আচমকা আকাশের বুক চিরে ছুটে এলো

নভোনীল জ্যোতিষ্কের পিন্ড –

যন্ত্রঘর থেকে একটানা ভেসে এলো শুধু

মুদ্রাবিভঙ্গের স্বর!