সুবীর

কাইয়ুম চৌধুরী

 

হৃদয় থেকে পাড়ি জমিয়েছো ক্যাঙারুর দেশ থেকে

প্রশান্ত মহাসাগরের লোনাজল ছুঁয়ে

স্বাধীনতায় সম্মানিত মঙ্গলবার্তার

চাক্ষুষ অধিগ্রহণ অন্তর থেকে তোমাকে

এতটা পথ টেনে এনেছিল।

যদিও ফিরে যেতে হবে আবার

নতুন দেশে প্রিয়জন সান্নিধ্যে এক অযুত সময়

আনন্দধারায় অবগাহন। ফিরে পাওয়া তারুণ্য

যেন যৌবনের বেলাভূমিতে চিত্ররচনায় যুক্ত

হবে নতুন উপাদান। উদগ্রীব ছিলাম –

চোখে ছিল নীলাঞ্জন; সবার হৃদয়ে

দোলা দিয়ে যাচ্ছিল নতুন ছবির কাঠামো।

হৃদয় ভেঙে তুমি ফিরে গেলে শূন্য হাতে

তোমার তো কোনো হাত ছিল না তাতে।

কিন্তু তুমি ধরা পড়ে গেলে ঘুমরাজ্যের আনাগোনার

আসল হেতু। বাসা বেঁধে ছিল অনেক আগেই

ঘুণপোকা। কোথাও ছিল না লেখা। কুরে কুরে

খাচ্ছিলো তোমাকে। বোঝোনি কিছু, দ্যাখোনি

কিছু। দিনরাত শুধু কাজ। হঠাৎ বজ্রপাত।

বাঁচার ছিল আকুতি। প্রার্থনা ছিল সবার। বেঁচে

ওঠো, ফিরে এসো আবার, শিল্পভুবনে দেবে শকতি।

একগুচ্ছ রঙিন বাংলাদেশ নিয়ে গিয়েছিলে

সুদূর প্রবাসে। ইচ্ছে তোমার নতুন রূপে

নতুন গন্ধে একাকার হবে সব নির্মাণ।

নতুন ভাষার জোয়ারে প্লাবিত হবে বাংলার

উপকূল যা তুমি আগেও ভাসিয়েছ রঙিন

জোয়ারে। কোথায় যেন ছন্দপতন

ঘটেছিল এবার। শুরুতেই কেন জানি ত্রিমুখী

যাওয়া আসা বুঝেও বুঝিনি আমরা কেউ।

কী গভীর মমতায় বহন করেছিলে উত্তরবঙ্গের

ভাওয়াইয়া। বহন করেছিলে শীতকুয়াশার

আস্তরণে পদ্মার উত্তাল জলরাশি।

শ্যামল রমণীর সূচিকর্মে নতুন

বৈভব। ছিল আরো প্রান্তিক জনতার

জীবনযাপন। সংগীত নৃত্যে মুখরিত ক্যানভাস।

কিন্তু না, সব ফেলে রেখে যে

শিল্পভুবনকে আলোকিত করে রেখেছিলে

তাকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে তুমি চলে

গেলে অন্য কোথাও, অন্য ভুবনে।