নজরুল হায়াত

  • সমকালীন বাস্তবতার আলেখ্য

    প্রণব চৌধুরী গত শতকের ষাটের দশক থেকে ছড়াকার হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ ছড়া গ্রন্থের ভূমিকায় তিনি বলেছেন, ‘ছেলেবেলায় বন্ধুদের অবাক করে দিতাম ছন্দ মিলিয়ে ছোটো ছোটো পদ্যে।’ কাগজে তাঁর ছড়া প্রথম প্রকাশ পায় ১৯৬৪ সালে স্কুলবার্ষিকীতে। এরপর বাংলাদেশের প্রায় সব দৈনিক পত্রিকা শিশু পাতা ও শিশু পত্রিকায় তাঁর অনেক ছড়া প্রকাশিত হয়েছে। শ্রেষ্ঠ…

  • আমি এই পথে আরো কিছুদিন হেঁটে যাবো

    আমি এই পথে আরো কিছুদিন হেঁটে যাবো আরো কিছুদিন নীল বাসনায় স্বপ্নের দোল খাবো সাদা হাঁস আর মেঘ-বালিকারা পথে ছুটে এসে দাঁড়াবেই ধান-বনগুলো বুক চিরে তার সোনা মনখানা বাড়াবেই নদী ছিঁড়ে দেবে চিতলের পেট দোয়েলের শিস অফুরান ভেট ঘন শালবন দেবে উপহার মউ-মন গাঁথা ফুল-মালা হার লাল রং মেখে গোলাপের ঠোঁট ঠোঁটে চুম্বন পরাবেই মৌমাছি…

  • জানি বৃষ্টি আসবেই

    সারাদিন বৃষ্টি-প্রার্থনায় থাকি একটুকরো মেঘের জন্যই প্রত্যাশা এমনকি রাত্রিও যায় বিষণ্ন রোদনে মাঠজুড়ে ধানকন্যার কষ্টের প্রলাপ মেঘেরা উড়ে উড়ে বনবাসে যায়, চৈত্র কি শাওন কি পৌষের হিম কোথাও বৃষ্টি নেই জনপদে শিশুদের তীক্ষ্ণ বিলাপ মায়েদের শুষ্ক ওলান, তবে এর সবকিছুই ক্ষণিক যেমন রাত্রি দিনের জন্যই নামে যেমন চমৎকার সকাল উপ্ত থাকে শর্বরীর ঘনকৃষ্ণ খামে তেমনি…

  • ফিরি বারেবারে লাউ জাংলায়

    তামাটে রমণী        আমার ঘরণী নদীটার মতো        বয় অবিরত                 ঘাম দিয়ে আঁকে                    প্রেম লিখে রাখে                 মাটি ও বালিতে                    মনের কালিতে ভাঙা নদী বাঁক      জোনাকির ঝাঁক হাটুরের ডাক         স্মৃতি মউচাক                   প্রাচীন কাঁকরে                         নখের আঁচড়ে                   শরীরের ভাষা                          মনে যত আশা ঘাসেদের বনে        পাখিদের মনে হাট-ফেরা স্বামী     …

  • আমি দ্রাবিড় শ্যামল বরণ

    একটা নদী বয়ে যাচ্ছে রক্ত এবং ঘামে সুধাগন্ধ পলল মাটি প্রাচীন হাড়ের খামে জলপ্রপাতের পতনধ্বনি রোমকূপে ঢেউ তোলে বৃক্ষশাখার সবুজ পাতা অলক জুড়ে দোলে আমার শরীর খুঁড়ে দেখো মেঘলা আকাশ ত্বকে পাখির বাসা চন্দ্র তারা সূর্য জ্বলে নখে বাংলাদেশের বদ্বীপ আঁকা আমার শ্যামল মুখে জলপরিরা সিনান করে সমুদ্রজলবুকে দু-হাত ভরা ফুলের বাগান ফসল ফলে পায়ে…

  • মানুষ ও ইতরের গল্প

    এক দোয়েল আর এক প্রজাপতি  উড়ে যেতে যেতে বলে :  বেশ তো জমেছে মেলা,  এক হুতোম আর এক প্যাঁচা  কোটরে লুকিয়ে মুখ, কুতকুতে চোখ তুলে ভাবে  মজা করে দেখা যাবে খেলা,  এক হাঙর আর এক কুমির  জলতলে বসে দিব্যি আরামে করে হাঁ এদিকে বনের সম্রাট তুলতুলে গোঁফে দেয় তা, তাহলে এই বাংলায় এখন মৃগয়ার মৌসুম …