নাহার মনিকা
-
ছায়াছন্ন
জীবনে একবারই দুপুরবেলা ঘুমে চোখ লেগে এসেছিল জামিলা বেগমের। সে-ঘটনা যে সারাজীবন বিষাক্ত দুঃস্বপ্ন হয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুরবে, কে জানতো! শরীরে যৌবন ঢুকি ঢুকি করছে সময়েও তার ঘুম পেত না। অথচ পিঠাপিঠি বড়বোন ভাত খেয়ে দুপুর উপুড় করে ঘুমে তলিয়ে যেত। জামিলা একা একাই তাদের বাড়ির সামনের বড় কাঁঠালগাছে ঝোলানো পিঁড়িতে বসে দুলতেন। মনে হতো,…
-
মাৎস্যন্যায়
‘মাঝেমধ্যে মন যা চায় তাই করুন, ইচ্ছেমত সময় কাটান’ – ফ্যামিলি ডাক্তারের বলা কথাটা বীথি কাগজে লিখে শোবার ঘরে শাড়ির ক্লজেটে লাগিয়ে রেখেছিল। মন্ট্রিল শহরটা বছরে চার-পাঁচ মাস বরফে ঢাকা থাকে, তখন শাড়ি পরার অনেক ঝক্কি। তবু গ্রীষ্মকালে, বা কোনো উপলক্ষে যখন শাড়ির খোঁজ পড়ে, ওই কাগজটার গায়ে আলতো করে আঙুল বোলায় বীথি। মনে মনে…
-
পোষা প্রাণ
মিনির বিড়ালের সঙ্গে ভুলুর কুকুরের বিসম্বাদটা শুরুই হলো নাম দিয়ে। নামের প্রসঙ্গটা হাতে বানানো বড় কাগজের পাখি হয়ে ফরফর করে চারপাশে উড়লো। তা ওরা ওদের পছন্দের নাম রাখতেই পারে, তাতে কী সমস্যা! কিন্তু কথা ঘন হয়ে ওঠে নিজেদের নামধাম দেওয়া-নেওয়ার সময়। – তুমার নাম কী? – ভুলু। – ভুলু তো কুকুরের নাম! মুখ কালো হয়ে…
-
সম্পর্ক
চব্বিশ মাস ধরে নীপা যেভাবে আজকের দিনটির কথা ভেবে এসেছে, তার সঙ্গে কিছুই তেমন মিলছে না। ঘরের সাদা দেয়ালে একটা দাগ, সম্ভবত মশা মারতে গিয়ে চেপ্টে দেওয়া হয়েছিল, মুখ থুবড়ে-পড়া ডানাভাঙা, মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখলে দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজের মতো দেখাবে। পরিষ্কার দেয়াল বলে দাগটা চোখে পড়ছে। মশা? নাকি অন্য কোনো পোকা! দাগের নিচে ছোট্ট গ্লাস টপ টেবিলের…