January 2024

  • শিরোনামহীন

    শিরোনামহীন

    বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে যেসব শিল্পীর আবির্ভাব বাংলাদেশের চিত্রকলার ধারাকে সমৃদ্ধ করেছিল সৈয়দ জাহাঙ্গীর তাঁদের অন্যতম। ১৯৫৫ সালে তিনি ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এর পরপরই লক্ষ করা যায় তাঁর কাজে সমকালীন মার্কিন চিত্রকলার প্রভাব – আমাদের শিল্পক্ষেত্রে তা তৃপ্তিকর বৈচিত্র্যের সৃষ্টি করে। এই সময় থেকে তাঁর সৃজন শিল্পানুরাগীদের মধ্যে বিশেষ আনুকূল্য লাভ করে।…

  • আবুবকর সিদ্দিকের ‘কংকালে অলংকার দিয়ো’ পরকালযাত্রার পূর্বকথন

    আবুবকর সিদ্দিকের ‘কংকালে অলংকার দিয়ো’ পরকালযাত্রার পূর্বকথন

    আবুবকর সিদ্দিক বহুমাত্রিক, বহুকৌণিক লেখক-কবি হিসেবে স্বীকৃত। তিনি বস্তুনিষ্ঠ ও জীবনবাদী লেখক। শ্যামল যাযাবর। তাঁর লেখায় বারবার বিষয়, লিখনশৈলী ও জীবনদৃষ্টির পরিবর্তন ঘটেছে – পরিবর্তিত সময়-সমাজ-জীবনবোধের পরিপ্রেক্ষিতে। অর্থাৎ শিল্প-সাহিত্যাঙ্গনে তিনি সবসময় নিজেকে আপডেট রেখেছেন। ধবল দুধের স্বরগ্রাম থেকে এইসব অন্যমানবিক কবিতা পর্যন্ত তাঁর ঊনিশটি কাব্যগ্রন্থ। এর মধ্যে কংকালে অলংকার দিয়ো বিশেষ গুরুত্ববহ, প্রকাশকাল ১৯৭৬; পরবর্তী…

  • জন্মদ্বিশতবর্ষে মাইকেল : তাঁর বিদ্রোহের স্বরূপ

    জন্মদ্বিশতবর্ষে মাইকেল : তাঁর বিদ্রোহের স্বরূপ

    বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে কাজী নজরুল ইসলাম অবিস্মরণীয়। তাঁর পরেও কোনো কোনো কবি বিদ্রোহ বা দ্রোহের কবি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে কবিমাত্রই অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দ্রোহ ঘোষণা করেন। সে-বিচারে অধিকাংশ কবিই বিদ্রোহের কবি। এই বিদ্রোহ মূলত সামাজিক ও রাজনৈতিক। সাহিত্যিক বিদ্রোহ ভিন্ন বিষয়। এক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহের পথিকৃৎ মাইকেল মধুসূদন দত্ত। ব্যক্তিজীবনে ও…

  • চারুকলায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হীরকজয়ন্তী : আমার চারুকলা (১৯৬৬-৭২) 

    চারুকলায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হীরকজয়ন্তী : আমার চারুকলা (১৯৬৬-৭২) 

    ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অর্জিত হয় ১৯৪৭ সালে, তবে ধর্মীয় সংখ্যাধিক্যের ভিত্তিতে দেশটি বিভক্ত হয়ে দুটি রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে – ভারত ও পাকিস্তান। এ বিভক্তির ফলে দেশ দুটির হিন্দু ও মুসলমান উভয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার বোধ দেখা দেয়, বিশেষ করে বিভক্ত বঙ্গের দুই অংশেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিপুলসংখ্যক মানুষ দেশত্যাগ করে। জয়নুল আবেদিন জন্মসূত্রে পূর্ববঙ্গের মানুষ…

  • জাহিদুল হকের ‘এইখানে বহু শব, বহু মৃত’ : অস্তিত্বের কাব্যিক কাঠামো

    জাহিদুল হকের ‘এইখানে বহু শব, বহু মৃত’ : অস্তিত্বের কাব্যিক কাঠামো

    কবি-সম্পাদক আবুল হাসনাত তাঁর সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের কবিতা (ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৪) সংকলনের ‘ভূমিকা’য় বলেছিলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমাদের দুর্গত দেশের জীবন ও মননে হীরকখণ্ডের মত এখনও দ্যুতিময়। বাঙালির শিল্পসাহিত্যে তো বটেই, সামাজিক ইতিহাসের বর্ণময় উত্থানেও এই যুদ্ধ কত তাৎপর্যময় ও গভীরতাসঞ্চারী তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।’ কেন কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না? – এই প্রশ্নের উত্তরে আবুল…

  • ঢাকায় জীবনানন্দ : ব্রাহ্ম সমাজ, গোলাপি বেনারসি এবং কালাচাঁদ গন্ধবণিকের মিষ্টির খোঁজে

    ঢাকায় জীবনানন্দ : ব্রাহ্ম সমাজ, গোলাপি বেনারসি এবং কালাচাঁদ গন্ধবণিকের মিষ্টির খোঁজে

    বরিশালের সন্তান জীবনানন্দ দাশ ১৯২৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছর ১৯৩০ সালের মার্চ মাসের মাঝামাঝি কালের মধ্যে কোনো এক সময় ঢাকা শহরে এসেছিলেন বিয়ের পাত্রী দেখতে। তিনি তখন দিল্লির রামযশ কলেজের শিক্ষক। আজকে ঢাকার যে-অংশটি পুরান ঢাকা নামে পরিচিত, সেখানেই ব্রাহ্ম সমাজের তৎকালীন নেতা অমৃতলাল গুপ্তের ভাইঝি লাবণ্য গুপ্তকে দেখতে এসে পছন্দ করেন এবং তারপর…

  • বাংলার প্রাচীন চিত্রকলা

    বাংলার প্রাচীন চিত্রকলা

    বাংলার মানুষ শিল্পকলার চর্চা করছে সুপ্রাচীনকাল থেকেই, তার প্রমাণ পাণ্ডুরাজার ঢিবিতে আবিষ্কৃত কৃষ্ণ-লোহিত সাংস্কৃতিক স্তরে (তাম্রপ্রস্তর) প্রাপ্ত চিত্র – নকশা-অঙ্কিত মৃৎপাত্রের টুকরা। একটি টুকরায় কালো মাটির পাত্রে ধূসর সাদা রেখায় শিল্পী জাল আর একসারি মাছ এঁকেছিলেন। আর অন্য একটি মৃৎপাত্রে ময়ূরীর ঠোঁটে রয়েছে সাপের চিত্র। দুটি চিত্রেই প্রাগৈতিহাসিক বাঙালির সাবলীল রেখায় অঙ্কিত চিত্র-দক্ষতা প্রশংসনীয়। কালো…

  • শূন্যতার ভার

    শূন্যতার ভার

    কোনটি বেশি, কোনটি কম, পরিমাপ করা কঠিন। আনন্দ এবং বেদনার দুটি অনুভূতির মিশেলে এ-এক নতুন অনুভূতি। গুরু মহর্ষি বিশ্বামিত্র, তাঁর প্রিয় শিষ্য গালব, দুজনই আনন্দ-বেদনার যৌথ স্রোতধারায় ভাসছেন। গালবের শিক্ষালাভ শেষ হয়েছে। গুরু বিশ্বামিত্র শিষ্য গালবকে বললেন, এবার যাও, গার্হস্থ্য জীবনে ফিরে যাও। যা-বিদ্যা অর্জন করেছ, জীবজগতের কল্যাণ করো। বিশ্বামিত্রের ঠোঁট কাঁপছে, চোখে অশ্রুরেখা। গালবের…

  • সহসা দুপুরে দহন

    সহসা দুপুরে দহন

    একদিন ছাদে হাঁটতে হাঁটতে নিশি দেখলো, বাহ, মজার ব্যাপার তো! কোত্থেকে যেন এক জোড়া দোয়েল এসে ঘর-সংসার পেতে বসেছে পশ্চিমকোণে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের ফিরোজা রঙের স্যানিটারি পাইপটার খোপে। জগৎ-সংসারের কিছু নিয়মনীতি সম্পর্কে নিশির ইদানীং কেমন একটা অনীহার ভাব জন্মেছে, নিতান্তই অবহেলায় বেড়ে ওঠা তৃণাঙ্কুরের মতো। জীবনপ্রদীপ নিভে আসা মানুষের ফ্যাকাশে দৃষ্টির মতোই বহির্বিশ্বটা ওর কাছে…

  • রুশ চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ সপ্তরথী

    রুশ চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ সপ্তরথী

    আলম খোরশেদ চলচ্চিত্রের ইতিহাসবিষয়ে অবগতজনেরা জানেন, শৈল্পিক ও আধুনিক চলচ্চিত্রের সূত্রপাত প্রধানত রুশদেশ তথা তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে। আর এর অন্যতম প্রধান পথিকৃৎ হিসেবে প্রথমেই যাঁর নাম মনে আসে আমাদের, তিনি আর কেউ নন সের্গেই এইজেন্স্টেইন বা প্রচলিত উচ্চারণে আইজেন্স্টাইন (১৮৯৮-১৯৪৮)। কিন্তু আমি এই আলোচনা শুরু করতে চাই তাঁরই সমসাময়িক আরেক চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিন্তক…

  • রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী বিজয়া চৌধুরী

    রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী বিজয়া চৌধুরী

    অধুনা বিস্মৃত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী বিজয়া চৌধুরীর জন্ম শ্রীভূমি সিলেটে। জীবনের উত্থানকালপর্বটি তিনি ইংল্যান্ড, জার্মানি প্রভৃতি দেশে কাটিয়েছেন বলে বাংলাদেশ-ভারতের বাংলাভাষী মানুষের কাছে বিশেষ পরিচিত নন। তবে একেবারে অর্বাচীনও নন। তাঁর জীবনেতিহাস পাঠ করলে দেখা যায়, সংগীতশিল্পী হিসেবে একসময় তিনি যথেষ্ট কীর্তিমতী এবং সমাদৃত হয়েছিলেন। এইচএমভি, মিউজিক ইন্ডিয়া ও অন্যান্য কোম্পানি থেকে তাঁর গাওয়া রবীন্দ্রসংগীত এবং কিছু…

  • শূন্য মাঠের রেফারি

    শূন্য মাঠের রেফারি

    একটাও বাদ দেবে না, সব – সব আনবে কিন্তু – হাতে লম্বা একটা ফর্দ ধরিয়ে হুঁশিয়ার করে দেয় মর্জিনা বেগম। জানে স্বামী আবু কালাম বেভুলা ধরনের মানুষ। জীবনে ঠিকঠাক বাজার করতে পারলো না বা শিখলো না। অনেক সময়ে মর্জিনা বেগমের প্রশ্ন জাগে, এই বেভুলা মানুষটা আমার লগে মশকরা করে? নাইলে অফিস-আদালত, বন্ধু-বান্ধব, রাস্তাঘাটের এত ভজঘট…