নীহারুল ইসলাম
-
খোদাতালার কান্না
নীহারুল ইসলাম মুকিমনগরের মোবাইল টাওয়ারের মাথা ছুঁয়ে সূর্যটা সেই কখন অস্ত গেছে। ক্রমেই আঁধার ঘনাচ্ছে। আলো বলতে একমাত্র মোড়ের মাথায় বেলালের চায়ের দোকানে। সেখানে ভিড় বাড়ছে। বেলাল তার চায়ের দোকানে সেটবক্স লাগানো একটা বড় রঙিন টিভি টাঙিয়েছে, সেটা চলছে। হাজারটা চ্যানেল, হাজার রকমের ব্যাপার-স্যাপার। কোনো চ্যানেলে শুধুই গান তো আবার কোনো চ্যানেলে লিছাক্কা সিনেমা। আবার…
-
রিয়ার প্রার্থনা
নীহারুল ইসলাম রিয়া ক্লাস ফাইভে পড়ে। ওর দাদা বিভাস ক্লাস সেভেনে। বিভাস পোলিও আক্রান্ত। অবশ্য তার একটা হুইল চেয়ার আছে। যেবার দরগার স্কুলে ফাইভে ভর্তি হয়, স্কুল থেকে ওটা দিয়েছিল। ওটায় চড়ে দাদা স্কুলে যায়। সঙ্গে রিয়া নিজে থাকে। স্কুলের রাস্তাটা খুব খারাপ। তার ওপর গাড়িঘোড়ার ভিড়। গাড়িঘোড়া বলতে গরুগাড়ি-ঘোড়াগাড়ি নয়, মাটির বহা ট্রাক-ট্রাক্টর –…
-
গন্তব্য
নীহারুল ইসলাম হুকারহাট বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিকশা চড়ে নাককাটিতলা। দুনিয়ার যত শান্তি নাকি সেখানেই! অথচ হুকারহাট আর কতদূর, সেটাই বুঝতে পারছে না আমিরুদ্দি। যদিও বাসে উঠেই কন্ডাক্টরকে বলে রেখেছে, গন্তব্যে পৌঁছালে তাকে যেন নামিয়ে দেয়; কিন্তু বাসে খুব ভিড়। কন্ডাক্টর যাত্রীদের ভাড়া নিতে ব্যস্ত। তাকে নামিয়ে দেওয়ার কথা কন্ডাক্টরের মনে না থাকে যদি! আমিরুদ্দির সন্দেহ হয়।…
-
ছুঁচোর কেত্তন
নীহারুল ইসলাম স্বাভাবিক নিয়মেই আমার মৃত্যু হয়েছিল। তবে আমার ইচ্ছানুসারে আমাকে দাহ করা হয়নি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতিসাধনে মেডিক্যাল কলেজে আমার দেহটা উৎসর্গ করা হয়েছিল। তারপর কত দিন! কত রাত! কত অন্ধকার পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ছুঁচো জন্ম পেয়েছি। নিজেকে ধন্য মনে করেছি। যদিও নিজেকে ধন্য মনে করার পেছনে আরেকটা কারণ আছে, ছুঁচো জন্ম পেলেও আমার অবস্থান হয়েছে…