বীথি চট্টোপাধ্যায়

  • ক্ষণিক

    প্রেম এসেছিল অকূল সিন্ধুপারে হাজার বছর আগেও কারুর কাছে, এখনো সে প্রেম পূর্ণিমা চাঁদ হয়ে ঝুলে থাকে কোনো বুড়ো অশ^ত্থ গাছে। কখনো হয়তো প্রতিবাদ-সভা রূপে দাঁড়িয়ে পড়বে ধর্মতলার মোড়ে, যুবক-বয়সী সৌমিত্রর মতো সিগারেট হাতে নন্দন চত্বরে। পদ্মার বুকে কেউ কবি হয়ে ওঠে নদীজল যেন কারুর গভীর দিঠি, ‘আমাকে চায়নি কোনোদিন কোনো মেয়ে’ – রবীন্দ্রনাথ লেখেন…

  • কালবেলা

    (৬৬ বছর আগে খুব কষ্ট পেয়ে চলে গিয়েছিলেন জীবননান্দ দাশ) মেয়েকে একটা চিঠি লিখছেন জীবনানন্দ দাশ কুয়াশার স্রোতে ভেসে গেছে তাঁর দিনরাত-বারোমাস। ‘চাকরি হারিয়ে বুঝেছি জীবনে টাকা কত দরকার’; অভাবে অভাবে ভেঙে গেল তাঁর ধুলোমাখা সংসার। বালির ওপর জ্যোৎস্নার মতো প্রেম দূরে, বহুদূূরে – কাজ খুঁজছেন তিনি সকলের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে। শরীর ভালো না, প্রেসিডেন্সির…

  • প্রচারবিমুখ সম্পাদক

    প্রচারবিমুখ সম্পাদক

    ‘কিচ্ছু লিখতে ইচ্ছে করছে না। ইচ্ছে করছে কলম ছুঁড়ে ফেলে দিতে।’ বুদ্ধদেব বসুর প্রয়াণে এই বাক্যদুটি দিয়ে অবিচুয়ারি লেখা শুরু করেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। একেকটা মৃত্যু এতই মর্মবিদারক যে কিছু লিখতে ইচ্ছে করে না। জ্যোৎস্না ও দুর্বিপাকের কবি আবুল হাসনাতের অনেক কাজ অসমাপ্ত রেখে ঘোর অসময়ে চলে যাওয়াটাও তেমন, তাঁর প্রয়াণের পর খুব অভিমান হয় বিধাতার…

  • স্মৃতির সঙ্গে রয়ে গেল আরো অনেককিছু

    স্মৃতির সঙ্গে রয়ে গেল আরো অনেককিছু

    আনিসুজ্জামানকে এ-সময় পৃথিবীর খুব দরকার ছিল। এখন এমন একটা সময় এসেছে, যখন প্রযুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয় আর কুসংস্কার আমাদের হৃদয়ে গেড়ে বসেছে। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আজ মুহূর্তে ছড়ানো যায় অবৈজ্ঞানিক গুজব, ঘটানো যায় ভয়াবহ রক্তপাত। এই সময়ে আনিসুজ্জামানের প্রয়াণ খুব বড় ক্ষতি করে দিলো বাংলাদেশের, ভারতবর্ষের। এটা বললেও অত্যুক্তি হবে না, গোটা পৃথিবীর ক্ষতি…

  • একতারা

    বীথি চট্টোপাধ্যায়   একটি নৌকা কুয়াশার বুক চিরে; ছোট ছোট গ্রাম পদ্মার দুই তীরে।   কোনো গ্রাম শুধু কৃষ্ণ কৃষ্ণ করে কোনো গ্রাম ছেয়ে আলস্না হু আকবরে।   পদ্মার জল একটি নৌকা তাতে লালন ফকির একতারা ধরে হাতে।   সেই একতারা সুর হয়ে ওঠে ভেসে মক্কা মদিনা বারাণসী হৃষিকেশে।   মক্কা মদিনা সব এই দেহমনে…

  • ভিতরের জোর

    বীথি চট্টোপাধ্যায় কী মনের জোর তার, ওরকম একটু জোর এখন খুব দরকার আমার। সে যদি এতটা পারে, আমি কেন একটুও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবো না? দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কেন ভাববো এবার সব শেষ। তার-ও তো ছিল না কিছু প্রেমিক বা প্রতিষ্ঠান কিছু নয় তবু সে পারলো বলে আনন্দে কাঁদলো কতো লোক… কেউ কেউ দাবানল…

  • মাধুরীলতার চিঠি

    নিভৃত ঘর ঘরের মধ্যে রোজ একা তোমার সেই মাধুরীলতা, অশ্রুহীন শুকনো দুটি চোখ চোখের পাতায় স্থবির নীরবতা। চোখের পাতায় স্বপ্ন বুঁজে আসে স্বপ্নে দেখি তোমার স্নেহের হাত, তোমার মুখে আশঙ্কার রেখা স্বপ্ন দেখে ব্যাকুল সারারাত। আর বেশিদিন স্বপ্নও দেখব না নিজেই এবার স্বপ্ন হয়ে যাবো, কারণ তুমি জরুরি লেখা ফেলে আমার অসুখ আমার কথা ভাবো।…