সংগ্রাম ও জয়নুল

মানুষ কি তার চিহ্ন রেখে যাওয়ার তাড়না থেকেই জীবনকে উৎসর্গ করে? হতে পারে। তলিয়ে যায় সবই, শুধু ব্যক্তির উপলব্ধিগুলি থেকে যেতে পারে – ব্যক্তির সৃষ্টি, চিন্তা আর কর্মের মধ্য দিয়ে। এই সত্য আকাক্সক্ষা থেকেই হয়তো শিল্পী তাঁর অন্তর্দ্বন্দ্বকে অতিক্রম করেন, তাঁর সীমাবদ্ধতাকে ছাড়িয়ে যেতে থাকেন, বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেন। এক সংগ্রামের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যান।

সম্প্রতি ‘সংগ্রাম’ শিরোনামে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের শিল্পকর্মের আয়োজিত বিশেষ একটি প্রদর্শনী হয়েছে। কিউরেটর সুমন ওয়াহিদ শিল্পাচার্যের ১২৫টি শিল্পকর্মের সমন্বয়ে এই আয়োজন করেছেন গ্যালারি চিত্রকে। ‘সংগ্রাম’ শিরোনামটির মধ্য দিয়ে ধারণা করা যায়, শিল্পীর আঁকা ছবিগুলির মধ্য থেকে নির্দিষ্ট কিছু ছবি দিয়ে এই প্রদর্শনীটি সাজানো হয়েছে। কিন্তু একইসঙ্গে এই প্রদর্শনীতে শিল্পীর জীবনে শিল্পযাত্রার সংগ্রামের দিকটিও বিম্বিত হয়েছে।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কেটেছে। ১৯১৪ সালে ময়মনসিংহের একটি সাধারণ পরিবারে জন্মেছিলেন জয়নুল। কিশোরজীবন সেখানেই অতিবাহিত করে তিনি ১৯৩২ সালে কলকাতা আর্ট স্কুলে পড়তে যান। পেনশনের সামান্য টাকা দিয়ে জয়নুলকে কলকাতায় পড়ানোর সামর্থ্য তাঁর বাবার ছিল না, ফলে মায়ের  স্বর্ণালংকার বিক্রির অর্থ দিয়ে তিনি কলকাতায় লেখাপড়া শুরু করেছিলেন। একটি প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারণ মুসলমান পরিবার থেকে আসা জয়নুল কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। তখন জয়নুলকে প্রাতিষ্ঠানিক বিধি ভঙ্গ করে অধ্যক্ষ শিল্পী মুকুল দে বৃত্তি প্রদান করেছিলেন, যা তাঁর শিক্ষাজীবনের প্রারম্ভে গুরুত্বপূর্ণ অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। সে-সময়ে কলকাতার পরিবেশ যতই উদার হয়ে থাকুক না কেন, এ-কথা স্বীকার করতে হয় যে, একজন মুসলমান ছাত্র হিসেবে কলকাতায় জয়নুলের ব্যক্তিগত সংগ্রাম আর দৃঢ়চেতা মনোভাবের প্রয়োজন ছিল। বলা বাহুল্য, প্রতিকূলতাসমূহকে জয়নুল যথেষ্ট দৃঢ়চিত্তে মোকাবিলা করেছিলেন।

বলা যেতে পারে, তখন থেকেই তাঁর চারিত্রিক বলিষ্ঠতা তাঁর ছবির রং, রেখা আর বিষয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হতে শুরু করে। ফলে জয়নুলের ছবিতে বিষয়গত জায়গায় আমরা যে সংগ্রামের ক্ষেত্র দেখতে পাই, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত জীবনসংগ্রামের বাইরের নয়। নিপাট বুদ্ধিবৃত্তিক প্রবর্তনা নয়। এই কথা বেশ জোর দিয়ে বলা যায়।

চিত্রক গ্যালারিতে আয়োজিত সাম্প্রতিক প্রদর্শনীটিতে জয়নুলের জীবনযাত্রা ও শিল্পযাত্রার দুই প্রকার সংগ্রামের বৈশিষ্ট্যগুলোই উঠে এসেছে। সমস্ত জীবনজুড়ে নানান সময়ের নানান ছবি, আর সেসবের মূর্ততার ক্ষেত্রে শিল্পীর যে-যাত্রা, তা এই প্রদর্শনী থেকে সেসব আমরা উপলব্ধি করতে পারি।

দুই

দৃশ্যশিল্প সবর্জনীন মাধ্যম। লিখিত বা কথ্যভাষার মাধ্যম এই পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে না। বলা যায়, সভ্যতার ইতিহাসে দৃশ্যশিল্পই মানব-আকাক্সক্ষার সবচেয়ে নিকট প্রকাশনাকে স্পর্শ করতে পারে। দেশ-কাল-সমাজকে এক খাঁটি গ্রন্থির মধ্য দিয়ে স্বতন্ত্র পথের সন্ধান দিতে পারে। দৃশ্যশিল্পের আবহমণ্ডলে মানুষ সন্ধান পায় নির্জন একান্ত বোধের, পায় প্রকৃতির নিকট সান্নিধ্য। সৌন্দর্যের রং আর মানসচেতনা ও আধ্যাত্মিকতার গভীর সংবেদনের ভেতরে এই দৃশ্যশিল্পের শিল্পীরা তাই বসবাস করেন একপ্রকার উচ্চ মানবিক অনুভব নিয়ে। চিন্তার এই বিশেষ অবস্থাগুলি আমরা জয়নুল আবেদিনের কাজে নিবিড়ভাবে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাই।

শিল্পাচার্যের এই নিবিড়স্থলের যাত্রাকে অনুভব করতে গেলে তাঁর অনুভব-অনুভূতিগুলি যেমন বোঝা দরকার, তেমনি দরকার তাঁর চিন্তা, আগ্রহ ও প্রকাশের নেপথ্যের দর্শন ও ধারণাগুলিকে বুঝতে পারা। প্রশংসনীয় যে, ‘সংগ্রাম’ প্রদর্শনীটিতে আমরা জয়নুল আবেদিনের এই উদ্বেগ আর চিন্তাগুলিকে চিহ্নিত করতে পারি।

কলকাতা আর্ট স্কুলের শিক্ষাকে যথাযথ রপ্ত করার পাশাপাশি জয়নুল নিজস্ব শিল্পভাষা নির্মাণে অবিরাম প্রয়াসী ছিলেন। কখনো কখনো তিনি পশ্চিমের অ্যাকাডেমিক শিক্ষার যে-বিস্তার তা থেকে বেরিয়ে এসে তাঁর সচেতন মনোভঙ্গিকে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে জোরালো হয়েছিলেন। তিনি সমকালীন রাজনীতিতেও সম্পৃক্ত ছিলেন, যদিও প্রত্যক্ষভাবে নয়। ব্রিটিশবিরোধী নানান কমর্কাণ্ডে তিনি পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ইত্যাদি এঁকে জনমনে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছেন। অন্যদিকে ১৯৩৯ সালে তিনি কলকাতা আর্ট স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। সেখানে তিনি ছাত্রদের একনিষ্ঠভাবে অ্যাকাডেমিক রীতিনীতি, ছবি আঁকার কৌশল ইত্যাদি শিখিয়েছেন এবং তাদের জন্য তাঁর আর অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। শিল্পনির্মাণ ও শিল্পের দায় সম্পর্কে জয়নুল তার সুস্পষ্ট ধারণা ও বক্তব্য ছাত্রসহ সকলের মধ্যে বিস্তৃত করেছেন। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ তাঁর ‘দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা’।

তেতাল্লিশের মনুষ্যসৃষ্ট মন্বন্তর ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। আর এই সময়কে তিনি এঁকেছেন আদর্শের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে; একইসঙ্গে আঙ্গিকের মধ্য দিয়ে নিজস্ব চিত্রভাষার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। চিত্রের বাহুল্য বর্জন করে অভিব্যক্তিকে দৃশ্যমান করেছেন। তাঁর ছবিতে বাস্তব জীবনের রূপায়ণ ঘটেছে, বলিষ্ঠ রেখা বিষয়ের প্রয়োজনে শৈলী হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। নিম্নবর্গীয়, শ্রমজীবী মানুষের জীবনচিত্রে তিনি মানুষের বিপর্যয়ের ইতিহাস এঁকেছেন। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও মানুষের বেঁচে থাকার আকুতি এবং সংগ্রামকে তিনি প্রতিফলিত করেছেন তাঁর চিত্রে। শিল্পী হিসেবে তাঁর সামজিক দায়বদ্ধতা আর সংগ্রাম সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান এই চিত্রমালায়।

এই প্রদর্শনীতে দুর্ভিক্ষের চিত্রমালার বেশকিছু লে-আউট, ড্রইং এবং উডব্লক প্রদর্শিত হয়েছে। এতে আছে শ্রমজীবী মানুষের ছবি। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে আছে কীভাবে শিল্পাচার্য তাঁর সকল চিন্তাকে ক্যানভাসে প্রতিফলিত করতেন এবং সেই অপূর্ব চিত্রমালা নির্মিত হলো তার এক কুশলী ডকুমেন্টেশন।

তিন

প্রদর্শনীতে দেখা গেছে, শিল্পাচার্য একটা ছবি বেশ কয়েকবার এঁকেছেন। আর সেই কয়েকবারের মধ্যে পাঁচ-ছয় বছর বা আরো বেশি সময়ের ব্যাপ্তি ছিল। কখনো শুধু লে-আউট করেছিলেন, তার অনেকদিন পরে মূল ছবিতে হাত দেন। কখনো একটা ছবিকেই ‘আপগ্রেড’ করে গেছেন বেশ কয়েকবারে।

শিল্পাচার্যের এরকম বিচ্ছিন্ন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ ছবি তৈরি করার ব্যাপারটাতে কিছু তাৎপর্য নিশ্চিতভাবেই রয়েছে। সেসবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শিল্পশিক্ষাকেন্দ্রিক কার্যক্রমের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা অনেক বেশি পরিমাণে হওয়ায় নিজের ছবি আঁকার জন্য তাঁর সময় বের করাটাও অনেকক্ষেত্রে দুঃসাধ্য হয়েছিল। একটা চিন্তাকে দীর্ঘদিনের পরিক্রমায় ক্যানভাসে নিয়ে আসার ভেতরে যেরকম এক ধীরস্থিরতা আছে, তেমনই আছে শিল্পীর এই একান্ত টানাপড়েন আর  সে-কারণে আরেকটি ‘সংগ্রাম’ও।

শিল্পকলা ও বিশেষত উপমহাদেশে শিল্পশিক্ষার ইতিহাসে জয়নুল আবেদিনের অবস্থান বেশ ভিন্ন। ধর্মীয় বিভাজনে পাকিস্তানের অংশ হয়ে পূর্ব বাংলায় শিল্পচর্চার পরিবেশ তৈরির পথ বন্ধুর ছিল। তাঁর একটা দীর্ঘ সময় কেটেছে শিল্পশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর শিল্প-আন্দোলন তৈরির পাশাপাশি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক  বৈষম্যের বিরুদ্ধে ‘সংগ্রাম’ করে। এখানে নিজের ‘শিল্পী’ হয়ে ওঠার জন্য পুরো সময়টা তিনি ব্যয় করতে পারেননি।

‘৪৭-এর দেশভাগের পর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পূর্ব বাংলা অর্থাৎ বাংলাদেশে এসে শিল্পশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য পশ্চিমের শাসকদের সঙ্গে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ লড়াই করেছেন। তবে তখন তিনি পশ্চিম পাকিস্তানেও শিল্পী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। সেই খ্যাতি, যশ উপেক্ষা করে এই বাংলাদেশে তিনি শিল্পশিক্ষার পরিবেশ তৈরির জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। এই লক্ষ্যে তিনি বাঙালি মুসলমান শিল্পীদের একত্রিত করেন এবং শিল্পকলাবিমুখ মুসলমান বাঙালি জাতিগোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ করে একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশ নির্মাণের পথ উন্মুক্ত করেন।

শিল্পাচার্য কলকাতা ও লাহোরের  পাশাপাশি বাংলাদেশে আধুনিক সমকালীন শিল্পচর্চা তৈরি করেছেন। এই সময়ে তাঁর নিজস্ব শিল্পচর্চার ধরনেও পরিবর্তন আসে। লৌকিক জীবনের নানান বিষয়-আশয় যুক্ত হয়। বরাবরের মতোই ‘সংগ্রাম’ তাঁর ছবিতে নতুন রূপে ধরা দেয়। সত্যিকার অর্থে এই সংগ্রাম শিল্পীর একান্ত নিজস্ব উপলব্ধি ও অভিব্যক্তি।

নিম্নবর্গীয় মানুষের বেঁচে থাকার নিত্যদিনের সংগ্রাম-যুদ্ধ তিনি এঁকেছেন তাঁর ক্যানভাসে। পশ্চিমের আধুনিকতা আর বাংলার লোকঐতিহ্যের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছিল তাঁর এসময়ের চিত্রকর্মগুলিতে। তিনি একবার দিল্লিতে এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আমাকে মাঝে মাঝে বলা হয় যে, আমি নাকি কিছু ভালো শিল্পকর্ম তৈরি করে ফেলেছি। আমি জানি না, আমি শুধু জানি – আমি কেন আঁকি এবং আমি কী আঁকি। আসলে বলতে গেলে কি করে আঁকতে হয় সেটা আমার জানা নেই। যেমনটা বলেছিলাম, আমি আঁকছি কারণ এটি আমার অভিব্যক্তি মাত্র। আমি আমার অভিজ্ঞতাগুলোকে আঁকছি। আমি আমার চারপাশগুলোকে আঁকছি – আমার চারপাশের পৃথিবী। এটি মানুষ এবং তাদের অনুভূতি নিয়ে গঠিত। আমি যা-ই আঁকি না কেন সেখানে সবসময় একটি আন্তঃপ্রবাহ থাকে, আমার অভিজ্ঞতা – স্মৃতি থেকে ভেসে আসা আমার চেনা পরিচিত মুখের কথা, আমার শৈশবে দেখা দৃশ্যাবলি, আমার জীবনের অতীতে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনা।’ 

চার

শিল্পাচার্যের ছবির বিষয়বস্তুর সঙ্গে তাঁর করণকৌশল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। শুরু থেকে শেষ অবধি রেখার বলিষ্ঠ, কর্কশ ভঙ্গি, প্রাণপ্রাচুর্যমণ্ডিত অবয়বধর্মী চিত্র, রং-রেখার স্বতঃস্ফূর্ত প্রয়োগ, নিজস্ব শৈলী আর চরিত্র নির্মাণ – তার নিখাদ আবেগের প্রকাশ প্রতিটি চিত্রপটকে বিশিষ্ট করে তুলেছে। তিনি ‘মনপুরা-৭০’ শীর্ষক শিল্পকর্মেও মানবজীবনের ‘সংগ্রাম’কে বিশেষভাবে উপলব্ধিজাত করে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।

মানুষ তার প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে লড়াই করে প্রতিনিয়ত। সত্তর সালের প্রলয়ংকরী ঝড় আর জলোচ্ছ্বাসকে সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করে মানুষ পুনরায় একটি সুন্দর জীবনের প্রত্যাশায় ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছিল। এই অভিব্যক্তিকে শিল্পাচার্য নানান মৃত্যু-গ্লানি-হতাশা আর প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে চিত্রপটে তুলে ধরেছেন। আর শেষপ্রান্তে একজন জীবিত মানুষকে এঁকে মানবসভ্যতার বিজয়কে চিহ্নিত করেছেন, এভাবে তিনি মানুষের জীবনের ‘সংগ্রাম’কে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন।

প্রদর্শনীর কিউরেটর সুমন ওয়াহিদ লিখেছেন, ‘সংগ্রাম প্রদর্শনীর মূল লক্ষ্য হবে আবেদিনের সৃষ্টির আলোকে মানুষের ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের বিভিন্ন বৈচিত্র্যের প্রকাশ।’ তিনি শিল্পাচার্যের যে ছবিগুলি এই প্রদর্শনীর জন্য বাছাই করেছেন সেখানে ব্যক্তি জয়নুল আবেদিনের নিজস্ব শিল্পভাষা তৈরির সঙ্গে বৃহত্তর অর্থে শিল্পীর সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের নানা অভিব্যক্তির বহিঃপ্রকাশ দর্শকের সামনে উন্মোচিত। শিল্পীর সামাজিক দায়বদ্ধতা এখানে সুস্পষ্টভাবে ধরা দিয়েছে।

শিল্পাচার্য তাঁর সময়কে দেশ-কাল ও পরম্পরার মধ্য দিয়ে শিল্পমাধ্যমে চিত্রিত করেছেন। তাঁর শিল্পবোধ ও জীবনোপলব্ধি এই অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন-সংগ্রামকে চিত্র রূপে উপস্থিত করেছে।