ইমদাদুল হক মিলন
-
১৩
ইমদাদুল হক মিলন তেরো সংখ্যাটা নাকি অশুভ। সবাই বলে আনলাকি থারটিন। আমার কাছে তেরোর চেয়ে শুভসংখ্যা আর নেই। আমার কাছে থারটিন মানে লাকি থারটিন। আমরা দুভাইবোন দাদুর মুখের দিকে তাকালাম। আমি আর মিতু। আমি কথা বলবার আগেই মিতু বলল, কী রকম? দাঁড়া, চা খেতে খেতে বলি। দাদু কলিংবেল বাজালেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে এলো সানোয়ার।…
-
রাতদুপুরে
ইমদাদুল হক মিলন দাদা, আমার মাথাটা দেখেছেন? মাথাটা খুঁজে পাচ্ছি না। মাথাটা যে কোথায় গেল! আমি হতভম্ব। এরকম কথা শুনলে কে হতভম্ব না হবে! একজন বলছে সে তার মাথা খুঁজে পাচ্ছে না… আসুন না? মাথাটা একটু খুঁজে দিন না? আমি তো একা একা খুঁজে পাচ্ছি না… একটু আগে থেকে বলি। এ এক জ্যোৎস্না রাতের ঘটনা।…
-
যমুনা
ইমদাদুল হক মিলন খবরের কাগজ পড়তে-পড়তে হঠাৎই চোখ তুলে তাকিয়েছি, দেখি ফ্ল্যাটের দরজায় একটি শিশু দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েশিশু। রোগা, ফর্সা, মাথায় লালচে ধরনের পাতলা চুল। শরীরের তুলনায় মাথাটা যেন একটু বড়। মুখটা মিষ্টি, চোখদুটো ডাগর। নটার মতো বাজে। আমার সামনে কাচের সেন্টার টেবিল। তার ওপর একগাদা দৈনিক পত্রিকা। নামকরা কাগজগুলো ধরে-ধরে আমি চেক করছি। কোন…
-
জীবনবেলা
ইমদাদুল হক মিলন বেডরুম থেকে বেরিয়েই বড়মেয়েকে দেখতে পেলেন মোমেন সাহেব। ডাইনিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে নিঃশব্দ হাসি। বেশ অনেক দিন পর এরকম সকালবেলা মেয়ের মুখটা তিনি দেখলেন। এমনিতেই তাঁর মন আজ ভালো। চার বছর পর প্রিয়বন্ধুর সঙ্গে দেখা হবে। মেয়েকে দেখে ভালো মন আরো ভালো হয়ে গেল। ছুটে এসে মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেন। কী…
-
দেবশিশু
ইমদাদুল হক মিলন এইটুকু ভুলের জন্য এত বড় মাসুল দিতে হবে কল্পনাও করেননি সাদেক সাহেব। তিনি কাজ করেন একটা পাবলিশিং হাউসে। নাম ‘ছাত্রবন্ধু প্রকাশন’। মূলত নোট গাইড প্রকাশ করে। এই লাইনে দেশের এক নম্বর প্রকাশনা। মালিকের নাম মশিউর রহমান। এখনো পঞ্চাশ হয়নি বয়স। তুখোড় তরুণ। ষোলো বছর আগে আমেরিকা থেকে পড়াশোনা শেষ করে এলেন। বিবিএ,…
-
কে আসে অন্ধকারে
ইমদাদুল হক মিলন এনামুলের মৃত্যুশোক তখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি আমরা। বিশেষ করে রওশন একদমই মেনে নিতে পারছে না ভাইয়ের মৃত্যু। সে আর এনামুল যমজ। যমজ ভাইবোনদের একজন আরেকজনকে ছেড়ে গেলে অন্যজন সেই শোক সামলাতেই পারে না। রওশন সারাক্ষণ কাঁদে, কথাবার্তা প্রায় বলেই না। খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। ছেলের শোক সামলে মা এখন রওশনকে নিয়ে ব্যস্ত। যেভাবে…