বিশ্বজিৎ ঘোষ

  • বাংলাদেশের ছোটগল্প : ষাটের দশক

    বাংলাদেশের ছোটগল্প : ষাটের দশক

    বিশ্বজিৎ ঘোষ বিশ শতকের ষাটের দশক বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উন্মাতাল সময়। আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক কারণে এ-সময়ের বাংলাদেশ ছিল বিক্ষুব্ধ, আলোড়িত, আন্দোলিত এবং স্বাধিকার চেতনায় উন্মথিত। এই সময়খণ্ডে রচিত সাহিত্যে সংক্ষুব্ধ-উন্মথিত বাংলাদেশের নানামাত্রিক ছবি শিল্পিত হয়ে আছে। এ-কথা উক্ত কালপর্বে রচিত বাংলাদেশের ছোটগল্প সম্পর্কেও সমানভাবে প্রযোজ্য। দেশ বিভাগ-পরবর্তী বাংলাদেশের ছোটগল্পের উত্তরাধিকারকে আত্মস্থ করেও ষাটের ছোটগাল্পিকরা অঙ্গীকার করলেন নানামাত্রিক…

  • উনপঞ্চাশের ভাষা কমিটির প্রতিবেদন : একটি সমীক্ষা

    উনপঞ্চাশের ভাষা কমিটির প্রতিবেদন : একটি সমীক্ষা

    বিশ্বজিৎ ঘোষ ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তান নামের এক কৃত্রিম রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পূর্ববাংলার ভাষা নিয়ে বিতর্ক জমে ওঠে। পূর্ববাংলার জনগণের ভাষা সহজ ও প্রমিতকরণের জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানামাত্রিক আলোচনা ও বিতর্কের প্রেক্ষাপটে পূর্ববাংলা সরকার ১৯৪৯ সালের ৯ মার্চ ‘পূর্ববাংলা ভাষা কমিটি’ (East Bengal Language Committee) নামে একটি কমিটি গঠন করে। ‘পূর্ববাংলায় প্রচলিত বাংলা…

  • জীবনানন্দের কবিতা-পাঠের ভূমিকা

    জীবনানন্দের কবিতা-পাঠের ভূমিকা

    বিশ্বজিৎ ঘোষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর, বাংলা সাহিত্যে, জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) প্রকৃত অর্থেই অন্যতম শ্রেষ্ঠ মৌলিক কবি। বিষয়ভাবনা ও নির্মাণকলার দৃষ্টিকোণে তিনি বাংলা কাব্যের ইতিহাসে এক স্বতন্ত্র ধারার স্রষ্টা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর সময়ে পৃথিবীব্যাপ্ত সামাজিক অবক্ষয়, অর্থনৈতিক বিপর্যয়, মূলবোধ-বিচ্যুতি, মানবিক-সম্ভাবনায় অবিশ্বাস এবং ‘পোড়োজমি’তে ‘ফাঁপা মানুষের’ বিপন্ন অস্তিত্বের প্রতিবেশে বাংলা সাহিত্যে জীবনানন্দের দীপ্র আবির্ভাব। যুগধর্মের বৈনাশিকতায় তাঁর মানসপ্রান্তর…

  • রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলন ও উত্তরকাল

    বিশ্বজিৎ ঘোষ ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত হাসান হাফিজুর রহমান-সম্পাদিত একুশে ফেব্রুয়ারী শীর্ষক গ্রন্থের সম্পাদকীয় ভূমিকার আরম্ভটা ছিল এরকম – ‘একটি মহৎ দিন হঠাৎ কখনো জাতির জীবনে আসে যুগান্তের সম্ভাবনা নিয়ে। পূর্ব পাকিস্তানের ইতিহাসে একুশে ফেব্রুয়ারী এমনি এক যুগান্তকারী দিন। শুধু পাক-ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসে নয়, একুশে ফেব্রুয়ারী সারা দুনিয়ার ইতিহাসে এক বিস্ময়কর ঘটনা। দুনিয়ার মানুষ হতচকিত বিস্ময়ে…

  • আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও কাজী নজরুল ইসলাম

    আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও কাজী নজরুল ইসলাম

    বিশ্বজিৎ ঘোষ প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর সময়ে পৃথিবীব্যাপী হতাশা, মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের প্রতিবেশে বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের (১৮৯৯-১৯৭৬) উজ্জ্বল আবির্ভাব। বস্ত্তত, তাঁর চেতনার শিকড় প্রোথিত ছিল নবজাগ্রত বাঙালি মুসলিম মধ্যবিত্তশ্রেণির মানস-মৃত্তিকায়। রাজনীতিসচেতনতা ও জনমূলসংলগ্নতা নজরুলের কবিচৈতন্যে এনে দিলো নতুন মাত্রা। সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতা আন্দোলন এবং নব-জাগ্রত মুসলিম মধ্যবিত্তের…

  • প্যারীচাঁদ মিত্র : ফিরে দেখা

    বিশ্বজিৎ ঘোষ উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক প্যারীচাঁদ মিত্র (১৮১৪-৮৩)। প্যারীচাঁদকে আমি স্রষ্টা এবং কর্মযোগী মানুষ হিসেবেই দেখতে ভালোবাসি। জন্মের পর দুশো বছর অতিক্রান্ত, মৃত্যুর পরও আমরা পেরিয়ে এসেছি একশ বত্রিশ বছর – তবু বাংলাভাষী মানুষের কাছে এখনো তিনি এক স্মরণীয় নাম। ভাষাবিদ্রোহী, সমাজনিষ্ঠ, কথাকার, মানব-উন্নয়ন সংগঠক, সাংবাদিক, অধ্যাত্মচিন্তক – কতভাবেই তো তাঁকে…

  • সংগীতসাধক দ্বিজেন্দ্রলাল সার্ধশত জন্মবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি

    বিশ্বজিৎ ঘোষ রবীন্দ্র-সমসাময়িককালে সাহিত্যচর্চা করলেও প্রথম থেকেই ভুবনপ্রসারী রাবীন্দ্রিক প্রভাববলয় থেকে নিজেদের মুক্ত রাখার সাধনা করেছেন যাঁরা, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (১৮৬৩-১৯১৩) তাঁদের অন্যতম। রবীন্দ্রনাথের জন্মের দুবছর পরে জন্মেছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল, কিন্তু মৃত্যুবরণ করেন রবীন্দ্র-প্রয়াণের ২৮ বছর পূর্বে। ৫০ বছরের এক বর্ণাঢ্য জীবনে বাংলার সাহিত্য ও সংগীতের জগতে যা দিয়েছেন দ্বিজেন্দ্রলাল, তা রীতিমতো ঈর্ষণীয়। প্রধানত গীতিকার এবং নাট্যকার…