মাহবুব সাদিক

  • জীবনের বাঁশি

    মাহবুব সাদিক জানালার বাইরে তাকাই বসন্তের মধুর হাওয়ায় নেচে ওঠে মেহগনি গগন শিরীষ – ডাল থেকে উঁকি-মারা নতুন পাতায় বেজে ওঠে জীবনের গান, কালঘুম ভেঙে যেন সবাই উঠেছে জেগে আমি শুনি দূরাগত জলের কল্লোল – জীবনের মোহময় বাঁশি; সবুজ পাতার আলো পিছলে নেমে গিয়ে ভোরবেলাটিকে আগাগোড়া ঢেকে দেয় সবুজে-সোনায় – মিঠে আঁচে ঝলসানো স্মৃতির তেলালো…

  • শহীদ কাদরীর কবিতা

    মাহবুব সাদিক বিশ শতকের শেষার্ধব্যাপী আধুনিক বাংলা কবিতাক্ষেত্রে যারা বিপুল দর্পে দাপিয়ে ফিরেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি শহীদ কাদরী। বিরলপ্রজ হওয়া সত্ত্বেও তিনি বরাবরই মননশীল পাঠকের হৃদয় কেড়েছেন। জীবনের প্রথমার্ধ স্বদেশে কাটলেও দ্বিতীয়ার্ধ তাঁর কেটে গেল প্রিয় স্বদেশ থেকে বহুদূরে, স্বেচ্ছানির্বাসনে। আবেগোচ্ছল কবিতার রূপরীতি ও উচ্চারণভঙ্গি বদলে ফেলে তিনি কবিতায় নিয়ে এসেছেন এক মননশীল…

  • নিতল গহবর

    মাহবুব সাদিক স্বপ্ন দেখার মতো চোখ নেই আর কারো প্রাচ্যে কিংবা দূরপ্রাচ্যে তবু গভীর বিস্ময়ে দেখি কোমল রোদের নিচে কোদালের ফালে বাংলার কৃষকেরা নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বলে স্বপ্ন খুঁড়ে তোলে, যদিও মাটি নেই আর নেই প্রকৃত ও প্রাকৃত মানুষ পায়ের তলায় কালো নিতল গহবর আলোড়িত হওয়ার মতো হৃদয়ের সুনন্দ উদ্ভাস কোথায় স্থিরতা পাবে কেউ তা জানে…

  • নদীভাঙা নদীর সন্তান

    মাহবুব সাদিক   সে কিছু শুনেছে বুঝি সংগোপন ঘুমের গভীরে মেঘ যেন ডাকে গুরম্ন-গুরম্ন – দক্ষিণের অন্ধকার থেকে উত্তরের দিগমত্মপ্রামেত্ম ফুটতে ফুটতে যায় শব্দের টাটকা খই – নাকি পরশু-র যাত্রাপালায় গহরজানের গানে জাদুতে-পাওয়া মৈজুদ্দির দশটি আঙুল তবলায় এখনো তোলে প্রাণকাড়া ধ্বনির লহর? গহরের গান আর তবলার বোলে সেরাতে আসর মাত – জীবনের প্রাপ্তিপাত্র কানায় কানায়…

  • নদীভাঙা নদীর সন্তান

    মাহবুব সাদিক   সে কিছু শুনেছে বুঝি সংগোপন ঘুমের গভীরে মেঘ যেন ডাকে গুরু গুরু – দক্ষিণের অন্ধকার থেকে উত্তরের দিগন্তপ্রান্তে ফুটতে ফুটতে যায় শব্দের টাটকা খই – নাকি পরশুর যাত্রাপালায় গহরজানের গানে জাদুতে-পাওয়া মৈজুদ্দির দশটি আঙুল তবলায় এখনো তোলে প্রাণকাড়া ধ্বনির লহর? গহরের গান আর তবলার বোলে সে রাতে আসর মাত – জীবনের প্রাপ্তিপাত্র…

  • অনির্বাণ দীপ

    মাহবুব সাদিক অমলিন কোনো এক পস্নুত প্রত্যুষে কেউ চেতনায় দিয়েছিল জ্বেলে এক অনির্বাণ দীপ – হয়তো তা ছিলো কোনো প্রাকৃত মুক্তার মতো দ্যুতিগর্ভ জ্বলজ্বলে কিছু – নাকি তাও ছিল ভোরের রোদের নিচে কচুপাতার আধারে জমা হিরের বিভ্রম! বাসত্মবের ভূত বলে শীতরাতে জমে-থাকা টলমলে শিশিরের জল!   জানি সেই মৃদু দীপশিখা চেতনার জলে শুশুকের মতো ঘাই…

  • কী করে তোমাকে ভুলি

    মাহবুব সাদিক   কী করে অধরা গ্রহণশেষের আংটির মতো হীরে ঝলকানো তোমাকে কী করে ভুলি? নক্ষত্রের মতো তুমি শেষে দূরভুবনের কেউ!   তোমাকে খুঁজেছি সংগোপনেই কীর্তিনাশার তীরে এখানে-ওখানে কোনাকানছিতে বুলিয়েছি শ্যেনচোখ আকাশে-পাতালে খুঁজে গেছি নিরাময় – হৃদয়ের ক্ষত হয়তো তাতেও ঢাকবে না কোনোমতে নিরিবিলি ভোজ জুটবে না মাঝরাতে নিরাশার খাতে স্থিরতর হতে দেবে না আমাকে…

  • নিতল গহবর    

    মাহবুব সাদিক   স্বপ্ন দেখার মতো চোখ নেই আর কারো প্রাচ্যে কিংবা দূরপ্রাচ্যে তবু গভীর বিস্ময়ে দেখি কোমল রোদের নিচে কোদালের ফালে বাংলার কৃষকেরা নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বলে স্বপ্ন খুঁড়ে তোলে, যদিও মাটি নেই আর নেই প্রকৃত ও প্রাকৃত মানুষ পায়ের তলায় কালো নিতল গহবর আলোড়িত হওয়ার মতো হৃদয়ের সুনন্দ উদ্ভাস কোথায় স্থিরতা পাবে কেউ তা…

  • অরণ্যের অন্ধকারে

    মাহবুব সাদিক   নির্বান্ধব অরণ্যের কোলে এক শীতের বিকেলে তার সঙ্গে দেখা হয়েছিলো আমার – সারাদিন দখিনা বাতাসে দোল খেয়েছে সবুজ পাতারা, যেন স্মৃতিকাতরতাময় শরীর দুলিয়ে কেউ নিজের ভান্ডার থেকে সবুজ ফেরি করছে সারাদিন, তারপর সেই ঘন সবুজের মধ্য দিয়ে অলস বিকেলে নিজের রাজকীয় গাম্ভীর্যে উদাস আর নির্ভীক উঠে এলো রাজার মতো বাংলার বাঘ –…

  • দুটি কবিতা

    মাহবুব সাদিক   হৃদয়ে বসন্ত আজ আজ এই বিলম্বিত বেতালা শরতে কুয়াশামাখা মাঘের হাওয়ারা ছোবল মারছে হালকা পোশাকের তলে গায়ের ছাল-চামড়ায় – কংক্রিটের বিকট-দর্শন শহরের এই সরু গলি-ঘুপচিতে ঘূর্ণি তুলছে সাইবেরিয়ার শীত, নাকি কারাকোরামের পাতী অরণ্য থেকে পর্বত পেরিয়ে এলো কুয়াশামাখা হিম হাওয়া? আমি কাঁপছি অকালের এই বৈরী বাতাসে – বাংলায় অচেনা এই শীতে আমার…