রেজাউদ্দিন স্টালিন

  • অনন্ত আগুন

    রেজাউদ্দিন স্টালিন   এ শহরে সন্ধ্যার আগেই বৃক্ষরা বিষণ্ণ হয় বৃক্ষরা কবি বলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বোঝে নগর নিহত হলে বৃক্ষরাও কাঁদে তাদের কান্না হলো পাতা ঝরে যাওয়া   যখন নগর জুড়ে নিষেধের গুপ্ত আনাগোনা প্রতিটি পদক্ষেপে লেপ্টে থাকে সন্ত্রাসের ছায়া সম্রাটের ছদ্মবেশে ঘোরে-ফেরে ছুরির সম্ভ্রম দস্যুদের প্রকৃত দোসর হয় নগরবাসীরা তখন বৃক্ষের কান্না শোনে কোন…

  • এক তরবারির সঙ্গে

    রেজাউদ্দিন স্টালিন হাতে এখন আর তরবারি নেই ভাঙা তরবারির চেয়ে নিরস্ত্র হওয়া ভালো এখন শুধু নিহতের ছায়াগুলোই জীবিত আর আমি লুকাতে চাই আমার ছায়া   সামনে স্বর্গ ও নরকের সীমামত্ম চারজন কবির সাথে দেখা হবে মূলত তাদের ছায়ার সঙ্গে পৃথিবীর আগের ও পরের সব রহস্যের ব্যাখ্যাতা এবং আমি সেই বিখ্যাত ছায়াদের আলিঙ্গন করবো আর হয়ে…

  • নচিকেতা

    রেজাউদ্দিন স্টালিন বেদনার বেলাভূমি – আইলান ফেরা তো হলো না, পেছনে স্বদেশ ডাকে অদূরেই মিথ্যে প্রণোদনা। একবার এই ডাক শুনেছিল সফোক্লিস কবি, আর যত অভিবাসী হেরাক্লাস ট্রয়ের বিপস্নবী।   পিতা মাতা পোতাশ্রয় ভেঙে দেয় ভূমধ্যসাগর, ফেনার রাজ্য থেকে ফিরে আসে হেডিসের স্বর। ফরাসি তাঁবুর নিচে সুপ্ত ছিল স্বপ্ন বহুদিন, সন্ত্রাসের চিৎকারে জেগে ওঠে জনমানবহীন –…

  • ভূমিকা

    রেজাউদ্দিন স্টালিন   জীবনের বিরম্নদ্ধে যারা অত্যন্ত গোপনে তারাও বিশ্বাস করে সুদিন আসবে। একজন ভিখারিও বিশ্বাস করে দাতাদের অন্তর আরো দয়ার্দ্র হবে। খরাকবলিত কৃষকের বিশ্বাস এই খাঁ-খাঁ প্রান্তরে বর্ষণ হবে একদিন। মা ভাবে তার নিরম্নদ্দিষ্ট সমত্মান দিগমেত্মর খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসবে, রংধনু। পরাজিত নিরস্ত্র ভাবে, বন্দিশালার দেয়াল অকস্মাৎ একদিন ভেঙে পড়বে। একজন ঈশ্বরে অবিশ্বাসীও ভাবে,…

  • অরুণাভ সরকারের কবিতা

    রেজাউদ্দিন স্টালিন যে-আপনজন বেঁচে নেই; তাঁকে নিয়ে লেখা দুরূহ। কারণ তিনি আলোচক কিংবা কবিতার ব্যাখ্যা শুনতে অপারগ। বেঁচে থাকলে আরেক রকম ব্যাখ্যা হতো। এ পর্যন্ত কবিতা ও কবিবিষয়ক মহৎ সব আলোচনার সিংহভাগ সাধিত হয়েছে কবির অবর্তমানতায়। কিন্তু সব আলোচনা যদি হয় কবির মৃত্যুর পরে, তাহলে চলবে কীভাবে? কবি জীবদ্দশাতেই জানতে চান – তাঁর কাব্য-ভাবনা কতটা…

  • সন্ধিক্ষণ

    রেজাউদ্দিন স্টালিন   যার আসবার কথা ছিলো সে আসেনি আসবে কি না জানি না আমার মন বলছে সে আসবে এখন আমি ইচ্ছাশক্তির কাছে সম্পূর্ণ সমর্পিত কিন্তু এমন উন্মূল সময়ে কোন মানুষ সমর্পণ সহ্য করবে যার মধ্যে ব্যক্তিত্বের বিন্দুমাত্র আছে   একবার মনে হলো আজ কেউ আসবে না একথা ভাবতেও কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে আমার বাইরে…

  • এক দার্শনিকের মুখোমুখি

    রেজাউদ্দিন স্টালিন ‘নিজেকে জানো’ বলতে-বলতে ঘেন্না ধরে গেছে, এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন।   আত্মা কী, ঈশ্বর কোথায়? ভাবতে-ভাবতে উই ধরেছে জঙ্ঘায়। পৃথিবী কবে থেকে সূর্যের চারদিকে ঘুরতে শুরু করলো তা স্রষ্টা ছাড়া কেউ জানে না। তপোবনে এইসব বিজ্ঞানীকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারতেন ঋত্বিক বিশ্বামিত্র, কিন্তু তিনি ব্যস্ত ব্রাহ্মণ হতে।   দেখুন – একই নদীতে…