শঙ্করলাল ভট্টাচার্য
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য তৃতীয় অ্যালবাম এক অনেকগুলো চিঠি তো লেখা হলো অ্যাদ্দিনে। সারাক্ষণ মনটা কু গায় মারি আঁতোয়ানেতের। শেষ অবধি মেয়েটাকে খুনই করল ভিক্টর! আমি প্রথম দিন থেকে রুখে দিতে চেয়েছিলাম ওদের ঢলাঢলি। কই পারলাম? কী না কী সম্বন্ধ দেখেছি মেয়ের! একটাও মানল? সেই জোর করে ওই চাল নেই, চুলো নেই ভিখিরি ডাক্তারটাকেই ধরে রইল। এত…
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য দ্বাদশ কিস্তি পনেরো আমার মৃত্যুর খবরে জওহরলালের মনের কী অবস্থা হলো তা তো আমার জানার সুযোগ হলো না। কালে-কালে তোরা জানতে পারবি, ইন্দু। তখন আমার আত্মপ্রতিকৃতির সামনে দাঁড়িয়ে বলিস; দেখব কীরকম লাগে শুনতে সেসব। হাসছিস? জীবনটা কিন্তু এরকমই, ইন্দু। আমরা সবচেয়ে বেশি জীবনের কথা বলি যখন, তখনই হয়তো মৃত্যু…
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য দশম কিস্তি ও যত বলছে ‘আমি ক্ষত রেখে যাব’ আমি হাসছি। সেই ক্ষতেরই যেন আভাস এর পরে পরেই ইন্দুকে লেখা আমার চিঠিতে… একটি অতি অসাধারণ ইংরেজের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। মা হয়তো ওর বিষয়ে তোকে লিখেছে, যাতে কিনা ওর সম্পর্কে তোর ভয়ানক ভুল কিছু ধারণাও গজিয়েছে। সত্যি বলতে কী, ওরকম অপূর্ব, মনে…
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য সপ্তম কিসিত্ম অনেক পরে জেনেছি যে, ১৯০১-এ প্যারিসে এসে পিকাসো নিজের একাকিত্বকে ভরিয়ে তুলতেন ভিখিরি আর বেশ্যা এঁকে। এখনো আকৃতি বিকৃত করে, রূপরেখা ভেঙে নিজের বহুমাতৃক, বহুরূপী রেখাঙ্কন, রেখাঙ্কন সৃষ্টি হয়নি ওঁর। প্রলম্বিত রেখার ওই নির্মাণপ্রবাহ আমারও মডেল অাঁকায় এসে গিয়েছিল। এখন ভাবলে একটু চমকাই কী করে পিকাসোর প্রলেপ পড়ল আমার ছবির…
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ষষ্ঠ কিস্তি ছয় একসঙ্গে যুবতী হয়ে উঠতে উঠতে অমৃতার কতকগুলো দিক ক্রমশ ভাস্বর হয়ে উঠছিল আমার সামনে। নগ্নিকা অাঁকার মধ্যে যেমন প্যাশন ওর, তেমনি আকাঙ্ক্ষা ও আবেগ ওর যৌনতা বিষয়ে। সে-প্রসঙ্গে আসবখন সময়মতো, তার আগে নিশ্চয়ই ও-ই বলবে ওর প্রণয়ের ইতিহাস। আপাতভাবে যার কোনো শেষ নেই। শুরুটাও যে কোথায়, কখন, আমি হয়তো ঠিক…
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য পঞ্চম কিস্তি বাবা আর মা কীরকম ছিল আমাদের ছেলেবেলায়, সেটা আমরা নিজেরাও কি খুব বুঝেছি তখন? কী সিমলায়, কী প্যারিসে দিব্যি তো রাজার হালে রাখা হয়েছিল আমাদের, কোত্থেকে টাকার জোগান আসছে বুঝতে সময় লেগেছিল। এ-ব্যাপারে অমরি অনেক সেয়ানা ছিল, বাবা-মার টাকার কষ্টটা বোঝার চেষ্টায় থাকত। ওর অনেক চিঠি পরে পড়ে অবাক হয়ে গেছি।…
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য চতুর্থ কিস্তি হাঙ্গেরির দুনাহারাস্তিতে এক অদ্ভুত নিসর্গের মধ্যে ছিলাম আমরা, তেমনই এক অপূর্ব নিসর্গ সিমলার। উপরন্তু মা ‘দ্য হোম’কে নতুন নতুন কার্পেট, আসবাব, ছবি দিয়ে সাজিয়ে আমাদের লাইফস্টাইলকেই আনকোরা নতুন করে ফেলল। থিয়েটার-টিয়েটার যাওয়া, এবাড়ি-ওবাড়ি ডিনার, বড়-বড় পরিবারের সঙ্গে ওঠাবসা তো ছিলই, তার সঙ্গে টক্কর দিয়ে চলল মার গৃহোন্নয়ন। মার গৃহ বলতে…
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য তৃতীয় কিস্তি এই পরিমন্ডলে আমরা নিশ্চিন্তে চার-চারটে বছর কাটিয়ে দিলাম। এক তরুণ শিক্ষক নিয়োগ করেছিলাম বাচ্চাদের কিছু শেখানোর জন্য ততটা নয়, যতটা ওদের কিছুটা ব্যস্ত রাখতে। সে-সময়ে অমৃতার সাড়ে পাঁচ বছর বয়েস। দুমাস যেতে না যেতেই দেখি দিব্যি হাঙ্গেরিয়ান বলছে আর ছোট ছোট বাক্য লিখেও ফেলছে। সে-সময় রঙ-পেনসিল দিয়ে ছবি অাঁকা ধরেছে। দেখে…
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য দ্বিতীয় কিস্তি তিন ডাবল ডায়মন্ড, থ্রি অফ স্পেডস, জ্যাক অফ ক্লাবস, কুইন অফ হার্টস, ট্রাম্প… মারি অাঁতোয়ানেত নিজের মনে তাস ছাড়াই ব্রিজ খেলে যাচ্ছেন। থেকে থেকে উঠে গিয়ে চিঠি লিখতে বসছেন। ডিয়ার স্যার… মাই ডিয়ার… ইয়োর অনারেবল স্যার… ম্যাডাম… ডিয়ারেস্ট… চিঠিরও শেষ নেই, রাগে জ্বলছে সেসব চিঠি… কিন্তু অভিযোগ একটাই… ভিক্টর আমার মেয়েটাকে…
-
পটেশ্বরী
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য \ ১ \ এপাশ থেকে ওপাশ হওয়াটাও সমস্যা হয়ে পড়েছে। বলতে গেলে নিরেট অন্ধকার থেকে আলো আর রঙের দিকে মুখ করার মতো। কেউ কি এমন কথা বলেছে আগে যে, মৃত্যু হলো রঙের ছবির ওপর একটা কালো পর্দা পড়া? এই কথাটা অমৃতার এখন মনে হচেছ। পাশ ফিরলেই অমৃতার মনে হচ্ছে, ওর…