অর্ণব রায়
-
পরের গল্প
অর্ণব রায় নিমু ডাক্তারের বাড়ি পার করে বাঁয়ে ঘুরে দু-প্যাডেল সাইকেল চালালেই ভূদেব উকিলদের এজমালি জোড়া পুকুর। এই পুকুরের ধারেই একটু ঝোপমতন আড়াল করে নিজের পরের গল্পটিকে পড়ে থাকতে দেখলেন পরিতোষ রায়। এখনো নিশ্চয়ই কেউ দেখেনি। দেখলে কি আর এভাবে পড়ে থাকে! না, থাকে না। এ-যাবৎ লেখা পরিতোষ রায়ের সব গল্পে ইতোমধ্যেই একজন-দুজন করে লোক…
-
বাঁশরি আর ওরা
অর্ণব রায় সুয্যি উঠে পড়েছে। বাঁশরিও উঠে পড়ে। না উঠে উপায় আছে? ওদের মধ্যে অনেকে সকাল হতে-না-হতেই উঠে পড়ে যে। কেউ-কেউ অবশ্য বেলা দুপুর গড়িয়ে দেয় উঠতে-উঠতে। কেউ আবার উঠে পড়ে, তবে ঘণ্টাদুয়েক যেতে-না-যেতে ঘুমের দেশে তলিয়ে যায় আবার। বাঁশরি চেষ্টা করে সারাদিনে অন্তত একবার হলেও সকলের কাছে যেতে, সকলকে দেখা দিতে। শুধু গেলে তো…
-
জঙ্গল ও কমলা, মাখনলালও বটে
অর্ণব রায় পাথরডুবুরি বিশপুকুর গাঁয়ের সনাতন ম-লের নাম যে পুবে রতনপুর মোলস্নাহাটি বোদপুর, পশ্চিমে তামাগ্রাম অজগরপাড়া, এমনকি দক্ষেণে মজিলপুর বিল পার করে খোদ সদরের জেলা জজ সাহেবের বাংলো বাড়ির এমত্মার শুকনো পাতা পড়ে থাকা উঠোনে পেতে রাখা বিকেলের চায়ের টেবিলে গিয়ে পৌঁছেছিল, তা সে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হলফ করে সাক্ষী দেওয়াটাকে মটরার গম্ভীরা গানের মতো শিল্প…
-
নতুন বাড়ি
অর্ণব রায় ম্যাটাডর থেকে মাটিতে পা দিতেই জায়গাটা যেন গাছগাছালি, পুকুর, পাখির ডাক, ঝিরঝিরে বাতাস – সব নিয়ে এক পলকে একেবারে দশ হাতে আপন করে নিল। দুটো লম্বা লম্বা শ্বাস ফেললাম দাঁড়িয়ে। বেশ ছড়ানো-ছিটানো পাড়া। বা এখনো পাড়া হয়ে ওঠেনি সেভাবে। দুপাশে বেশকিছু কিনে রাখা প্লট। মাঝখান দিয়ে যে-রাস্তা ধরে আমরা এলাম, সেটা শেষ হচ্ছে…
-
পাঁতি
অর্ণব রায় রতন সকালে এসে গোয়াল ধরার আগে অবধি ব্যাপারটা বোঝা যায় নি। এমনিতে মেজোকত্তার বরাবরের অভ্যাস ভোর থাকতে উঠেই গোয়ালঘরের দিকটা একবার চক্কর দিয়ে আসা। কিছুই না, নিজে হাতে করে কুটোটিও নাড়েন না তিনি। কিন্তু ওই, ঝুঁঝকো অাঁধার ফর্সা হতে হতে গোবরের গন্ধ আর মশার কামড়ের মধ্যেও গরুগুলোকে একবার দেখে আসা চাই। অভ্যাসও কিছু…
-
মোনাজাত
অর্ণব রায় মাতালের কান্ড, পাগলের খেয়াল, বজ্জাত ছেলেপিলের বাঁদরামি – সবরকম ভাবা হয়ে গেলে বোঝা গেল আওয়াজটা আসলে কান্নার। কেউ গলা ফাটিয়ে তারস্বরে সুর করে কাঁদছে। পুরুষের গলা। কতকটা বাঁধপুল বাজারের কাদেরের মতো শুনতে। এশার নামাজের পর থেকেই আওয়াজটা সকলের কানে আসতে থাকে। প্রথম প্রথম, যেমন হয়, কে না কে কাঁদছে মনে করে কেউ সেরকম…